রাণীনগরের হজরত হত্যার রহস্য উদঘাটন
রাণীনগর (নওগাঁ) প্রতিনিধি: নওগাঁর রাণীনগর উপজেলার পূর্ব বালুভরা গ্রামের জমসেদ আলীর ছেলে হজরত আলী (২৩) হত্যাকন্ডের মূল রহস্য উদঘাটন করেছে পুলিশ। মূলত টাকা চুরির সন্দেহে হজরতকে তার বন্ধু নাহিদ শ্বাসরোধ করে হত্যার পর এক প্লাস্টিকের বস্তায় ভরে নির্মানাধিন একটি ঘরের মেঝেতে পুঁতে রাখে। শুক্রবার রাণীনগর থানা পুলিশের আয়োজনে এক সংবাদ সম্মেলনে এই তথ্য জানানো হয়। ঘাতক নাহিদ একই গ্রামের মৃত আব্দুর রাজ্জাকের ছেলে।
সংবাদ সম্মেলনে নওগাঁ জেলা পুলিশের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (ক্রাইম) গাজিউর রহমান জানান, হত্যার শিকার হজরত আলী বেশ কিছু দিন ধরে আসামী নাহিদের বাড়ীতেই থাকতো। ঘটনার কয়েক দিন আগে নাহিদের ড্রয়ারে রাখা ১০/১৫ হাজার টাকা চুরি হয়ে যায়। এই টাকাগুলো হযরত নিয়েছে এমনটি সন্দেহ করে হজরতকে টাকা ফেরত দেওয়ার জন্য নানা কৌশলে চাপ দিতে থাকে নাহিদ। কিন্তু এই টাকা হজরত নেয়নি বলে অস্বীকার করে নাহিদকে সাফ জানিয়ে দেয়। কিন্তু নাহিদ সেটা মানতে নারাজ।
এর ধারাবাহিকতায় গত ৪ জুন শনিবার সকাল অনুমান ৯টায় হজরতকে নাহিদ তার বাড়িতে ডেকে নিয়ে আবারো হারানো টাকার ফেরত দিতে চাপ দেয়। তখনও হজরত টাকা নেয়নি বলে আবারো জানিয়ে দিলে উভয়ের মধ্যে কথা কাটাকাটি শুরু হয়। এক পর্যায়ে হজরত আলী নাহিদের ড্রেসিং টেবিলের সামনে দাঁড়িয়ে চুল আচঁড়ানোর সময় পিছন থেকে নাহিদ গামছা দিয়ে হজরতকে গলায় পেচিয়ে ধরে খাটের উপর ফেলে পিঠে হাঁটু দিয়ে শক্ত ভাবে ধরে শ্বাসরোধ করে হত্যা করে।
এরপর হজরতের প্যান্টের পকেটে থাকা চার হাজার টাকা বের করে নিয়ে ওই দিন বিকেলে নাহিদের বাড়ীর একটি নির্মানাধীন ঘরের মেঝেতে বস্তায় ভরে গর্ত করে পুঁতে রাখে। থানা পুলিশের প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে আসামী নাহিদ এসব তথ্য জানিয়েছে বলে সংবাদ সম্মেলনে জানানো হয়। তিনি আরো বলেন, নাহিদকে বিজ্ঞ আদালতে ফৌজদারী কার্যবিধি আইনের ১৬৪ ধারা মোতাবেক স্বীকারোক্তী মূলক জবানবন্দী প্রদানের নিমিত্তে হাজির করা হবে।
সংবাদ সম্মেলনে আরো জানানো হয়, হত্যার শিকার হজরত আলী পেশায় একজন ভ্যান চালক ছিলেন। গত শুক্রবার রাতে স্থানীয় একটি গ্যারেজে ভ্যান রাখার পর থেকে নিখোঁজ হয় হযরত আলী। এরপর থেকে হজরতের ফোন বন্ধ পায় পরিবারের লোকজন। তাকে কোথাও খুঁজে না পেয়ে গত বৃহস্পতিবার দুপুরে থানা পুলিশকে মৌখিক ভাবে বিস্তারিত জানায় হজরতের স্বজনরা।
এরপর রাণীনগর থানার ওসি মো: শাহিন আকন্দ নওগাঁ জেলা পুলিশ সুপার প্রকৌশলী আবদুল মান্নান মিয়াকে জানালে তার সার্বিক দিক নির্দেশনায় তাৎক্ষনিক অভিযান চালিয়ে নাহিদকে আটক করে। আটক নাহিদের দেয়া তথ্য মতে তার নির্মানাধীন ঘরের মেঝেতে পুঁতে রাখা হজরতের লাশ উদ্ধার করা হয়। এঘটনায় ওই দিন রাতে হজরতের বাবা জমসেদ আলী বাদী হয়ে থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করে।