ঢাকা | মে ১৫, ২০২৫ - ৮:৫৩ অপরাহ্ন

বাজেটে অর্থপাচারকারীদের জয় হয়েছে, মধ্যবিত্তরা উপেক্ষিত: সিপিডি

  • আপডেট: Friday, June 10, 2022 - 7:23 pm

 

অনলাইন ডেস্ক:  ২০২২-২৩ অর্থবছরের প্রস্তাবিত বাজেটে ধনী ও অর্থপাচারকারীদের জয় হয়েছে বলে মন্তব্য করেছেন সেন্টার ফর পলিসি ডায়ালগের (সিপিডি) সিনিয়র রিসার্চ ফেলো তৌফিকুল ইসলাম খান।

শুক্রবার (১০ জুন) রাজধানীর গুলশানের লেকশোর হোটেলে ‘জাতীয় বাজেট ২০২২-২৩, সিপিডির পর্যালোচনা’ শীর্ষক মিডিয়া ব্রিফিংয়ে এ কথা বলেন তিনি।

তিনি বলেন, এবারের বাজেটে যাদের টাকা-পয়সা আছে, উদ্যোক্তা ও ব্যবসায়ী, যারা টাকা পাচার করে, এই শ্রেণির জয় হয়েছে। গরিবের জন্য বাজেটে তেমন কিছু নেই। সবচেয়ে বেশি উপেক্ষিত হয়েছে মধ্যবিত্ত।

তিনি আরও বলেন, সরকার ধরেই নিয়েছে করোনা চলে গেছে। করোনার সামগ্রীর ওপর কর আরোপ করা হয়েছে। এটা ঠিক হয়নি। কোনো কারণে করোনা মহামারি আবার ফিরে এলে ব্যবসায়ীরা অধিক মুনাফা করবে। এই মুহূর্তে ল্যাপটপের দাম বাড়ানো ঠিক হয়নি বলেও মন্তব্য করেন তিনি।

এসময় সিপিডির নির্বাহী পরিচালক ড. ফাহমিদা খাতুন এ সময় বলেন, নিত্যপণ্যের দাম কমাতে বাজেটে পর্যাপ্ত পদক্ষেপ নেয়া হয়নি। চাল, ডালসহ ২৯টি নিত্যপণ্যের দাম কমানোর দরকার ছিল, কিন্তু করা হয়নি। সিপিডির পক্ষ থেকে নিত্যপণ্যের দাম কমাতে কর কমানোর সুপারিশ করা হয়েছিল। কিন্তু সেটিও রাখা হয়নি।

তিনি বলেন, বর্তমানে মূল্যস্ফীতি রয়েছে ৬ দশমিক ২৯ শতাংশ। এ অবস্থায় প্রস্তাবিত বাজেটে মূল্যস্ফীতির লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয় ৫ দশমিক ৬ শতাংশ। আগামী এক বছরে মূল্যস্ফীতি কীভাবে কমবে? কারণ, পৃথিবীর অনেক দেশ অর্থনৈতিক মন্দায় চলে যাবে। তাহলে কীভাবে মূল্যস্ফীতি কমবে, এটাই বড় প্রশ্ন।

‘বর্তমানে জনজীবনের ওপর চাপ রয়েছে। বাজেটে প্রত্যাশা ছিল নিম্ন ও মধ্য আয়ের মানুষকে স্বস্তি দেয়া হবে, কিন্তু দেয়া হয়নি। উল্টো বিত্তবানদের কর কমানো হয়েছে। ২০২২-২৩ অর্থবছরের প্রস্তাবিত বাজেট যে লক্ষ্য নিয়ে প্রণয়ন করা হয়েছে তা পূরণে নেয়া পদক্ষেপগুলো পরিপূর্ণ নয়। নীতিকৌশলের ক্ষেত্রে পদক্ষেপ অসম্পূর্ণ এবং বিদ্যমান চ্যালেঞ্জ মোকাবিলায় তা অপর্যাপ্ত।’

সিপিডির নির্বাহী পরিচালক বলেন, মূল্যস্ফীতি ও বৈশ্বিক অর্থনীতির নানা চাপ রয়েছে। চাপ মোকাবিলায় ছয়টি লক্ষ্যের কথা বলেছেন অর্থমন্ত্রী। যার মধ্যে রয়েছে মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণ, অভ্যন্তরীণ বিনিয়োগ বৃদ্ধি, বর্ধিত ভর্তুকির জন্য অর্থায়নের সংস্থান, বৈদেশিক অর্থের ব্যবহার নিশ্চিত করা, টাকার বিনিময় মূল্য স্থিতিশীল রাখা এবং রিজার্ভ সন্তোষজনক রাখা।

‘আমরা দেখেছি বাজেটে মূল্যস্ফীতি কথাটি অনেকবার এলেও এটি নিয়ে অর্থমন্ত্রীর পদক্ষেপ পর্যাপ্ত নয়। কর কাঠামোতে নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যে কর প্রত্যাহারের প্রস্তাবনা যথেষ্ট নয়। অনেক পণ্যেই কর রয়ে গেছে। বাজেটে গম ছাড়া নিত্যপ্রয়োজনীয় অনেক পণ্যে করছাড় নেই। মূল্যস্ফীতির এ সময়ে করমুক্ত আয়সীমা বৃদ্ধি করা হয়নি, ভর্তুকি ও সামাজিক সুরক্ষার আওতা ওই অর্থে বাড়েনি।’

ড. ফাহমিদা বলেন, বিদেশ থেকে অর্থ আনার বিষয়টি সম্পূর্ণ অনৈতিক। আর একটি বিষয় হচ্ছে, এটা কখনই বাস্তবায়নযোগ্য নয়। তার চেয়ে বড় কথা হলো, এটা অনৈতিক। একদিকে অর্থপাচারের সুযোগ দিয়ে আবার অর্থ ফিরিয়ে আনার সুযোগ করে দেব; অন্যদিকে দরিদ্র জনগোষ্ঠীর জন্য করছাড় থাকবে না, এটা সামাজিক ন্যায় বিচারের জন্য গ্রহণযোগ্য নয়।

উল্লেখ্য, গতকাল বৃহস্পতিবার বর্তমান সরকারের ২২তম এবং বাংলাদেশের ৫১তম বাজেট জাতীয় সংসদে উপস্থাপন করেন অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল। সংসদের স্পিকার ড. শিরীন শারমিন চৌধুরীর সভাপতিত্বে বাজেট অধিবেশনে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা উপস্থিত ছিলেন।

 

Hi-performance fast WordPress hosting by FireVPS