যেসব পণ্যের দাম বাড়তে পারে
অনলাইন ডেস্ক: প্রস্তাবিত বাজেটে আমদানিকরা বিলাসী পণ্য যেমন-বডি স্প্রে, প্রসাধনী পণ্য, জুস, প্যাকেটজাত খাদ্য ইত্যাদি ক্ষেত্রে আমদানিতে নতুন করে শুল্ক আরোপ হতে পারে। এছাড়া ফ্রিজ, মোবাইল ফোনসহ বেশকিছু আমদানি করা পণ্যের দামও বাড়তে পারে।
অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তাফা কামাল ২০২২-২৩ অর্থবছরের যে বাজেট ঘোষণা করেছেন তাতে বিভিন্ন পণ্যের সম্পূরক শুল্ক, আমদানিশুল্ক অথবা মূল্য সংযোজন কর (মূসক/ভ্যাট) বাড়ানো হয়েছে। এতে এসব পণ্য আমদানিতে ব্যয় বাড়তে বাড়তে পারে।
রেফ্রিজারেটর ও ফ্রিজার উৎপাদনের ক্ষেত্রে স্থানীয় উৎপাদন পর্যায়ে অব্যাহতি প্রত্যাহার করে ভ্যাটের হার ৫ শতাংশ নির্ধারণের প্রস্তাব দিয়েছেন অর্থমন্ত্রী। এতে ফ্রিজের দাম বাড়তে পারে। অবশ্য ফ্রিজ তৈরির উপকরণ ও যন্ত্রাংশ আমদানি এবং স্থানীয় ক্রয়ের ক্ষেত্রে কর ছাড় সুবিধা রয়েছে। তা ২০২৩ সালের ৩০ জুন পর্যন্ত বাড়ানোর প্রস্তাব দিয়েছেন অর্থমন্ত্রী।
রেলের টিকিট: শীতাতপ নিয়ন্ত্রিত/তাপানুকুল সার্ভিসের পাশাপাশি প্রথম শ্রেণির রেলওয়ে সেবার ওপর ১৫ শতাংশ মূসক আরোপের প্রস্তাব করেছেন অর্থমন্ত্রী। এতে টিকিটের দাম বাড়বে।
মুঠোফোন: মুঠোফোন সেটের ব্যবসায়ী পর্যায়ে বিদ্যমান ৫ শতাংশ ভ্যাট অব্যাহতি প্রত্যাহার করার কথা বলেছেন অর্থমন্ত্রী। এতে মুঠোফোনের দাম বাড়তে পারে।
পনির: বাটার ও চিজ বা পনির পণ্য দুটি সমজাতীয় উল্লেখ করে বাজেট বক্তৃতায় অর্থমন্ত্রী বলেছেন, বাটার আমদানিতে ২০ শতাংশ সম্পূরক শুল্ক বিদ্যমান থাকলেও চিজ আমদানিতে সম্পূরক শুল্ক আরোপিত নেই। তাই বাটারের মতো চিজ আমদানিতে ২০ শতাংশ সম্পূরক শুল্ক আরোপ করার প্রস্তাব করা হয়েছে।
কফি: প্রক্রিয়াজাত ও রেডি টু কনজিউম কফি আমদানিতে ২০ শতাংশ সম্পূরক শুল্ক আরোপ করার প্রস্তাব করেছেন অর্থমন্ত্রী। এতে এসব পণ্যের দাম বাড়তে পারে।
মুঠোফোনের বিদেশি চার্জার: দেশে উৎপাদিত মুঠোফোন উৎপাদনকারী শিল্প প্রতিষ্ঠানকে আরও বিকশিত করার লক্ষ্যে বিদেশি চার্জারের আমদানি শুল্ক ১৫ শতাংশ হতে বৃদ্ধি করে ২৫ শতাংশ করা হয়েছে।
দেশলাই: বর্তমানে দেশে গ্যাস লাইটার বা দেশলাই উৎপাদিত হচ্ছে। তাই দেশীয় শিল্পের সুরক্ষার জন্য পণ্যটি আমদানির ক্ষেত্রে সম্পূরক শুল্ক ১০ শতাংশ আরোপ করার প্রস্তাব করা হয়েছে। একই বিবেচনায় লাইটারের যন্ত্রাংশের আমদানি শুল্ক ১০ শতাংশ হতে বৃদ্ধি করে ২৫ শতাংশ করার প্রস্তাব করা হয়েছে।
পানি বিশুদ্ধকরণ যন্ত্র: বাসাবাড়িতে পানি বিশুদ্ধকরণের জন্য ব্যবহৃত ওয়াটার পিউরিফায়ারের আমদানি শুল্ক ১ শতাংশ থেকে বাড়িয়ে ১০ শতাংশ করা হয়েছে।
ক্যাশ রেজিস্ট্রার: ব্যবসার ক্যাশ রেজিস্ট্রার আমদানি শুল্ক শূন্য শতাংশ। অপরদিকে টিকিট ক্যালকুলেটিং যন্ত্রের আমদানি শুল্ক ১০ শতাংশ। মেশিন দুটি প্রায় একই ধরনের হওয়ায় শুল্কহার সামঞ্জস্যপূর্ণ হওয়া প্রয়োজন। তাই ক্যাশ রেজিস্ট্রারের ক্ষেত্রে আমদানি শুল্ক ১০ শতাংশ নির্ধারণ করার প্রস্তাব করেছেন অর্থমন্ত্রী।
বিদেশি পাখি: বর্তমানে দেশে পাখি আমদানি হচ্ছে। উক্ত পণ্যের ওপর ৫ শতাংশ আমদানি শুল্ক প্রযোজ্য রয়েছে। পাখিগুলো বিলাসবহুল বিধায় আলোচ্য ক্ষেত্রে আমদানি শুল্ক ৫ শতাংশ হতে বৃদ্ধি করে ২৫ শতাংশ করার প্রস্তাব করা হয়েছে।
বৃহস্পতিবার বিকেল ৩টায় জাতীয় সংসদে ২০২২-২০২৩ সালের প্রস্তাবিত বাজেট উপস্থাপন শুরু করেন অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল।
স্পিকার ড. শিরীন শারমিন চৌধুরীর সভাপতিত্বে শুরু হওয়া অধিবেশনে উপস্থিত রয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
মন্ত্রীদের মধ্যে উপস্থিত রয়েছেন মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রী আ ক ম মোজাম্মেল হক, সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের, কৃষিমন্ত্রী ড. আব্দুর রাজ্জাক, আইনমন্ত্রী আনিসুল হক, পরিকল্পনামন্ত্রী এমএ মান্নান, পররাষ্ট্রমন্ত্রী এ কে আব্দুল মোমেন, তথ্যমন্ত্রী ড হাছান মাহমুদ প্রমুখ।