এক টাকা আয় না থাকলেও কোটি টাকার সম্পদ
স্টাফ রিপোর্টার: সোমা সাহা (৪৪) একজন গৃহিণী। বৈধভাবে তাঁর এক টাকাও আয়ের উৎস নেই। অথচ তাঁর নামেই এক কোটি টাকারও বেশি সম্পদ রয়েছে। তাই দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক) তাঁর বিরুদ্ধে মামলা করেছে। দুদকের রাজশাহী সমন্বিত জেলা কার্যালয়ে মঙ্গলবার দুপুরে মামলাটি হয়েছে।
সোমা সাহার স্মামীর নাম পরিমল কুমার কুরী। তিনি জাতীয় গৃহায়ণ কর্তৃপক্ষের রাজশাহী সার্কেলের তত্বাবধায়ক প্রকৌশলী। আয় বহির্ভুত ৫০ লাখ ৪৩ হাজার ৫১৬ টাকার অবৈধ সম্পদ অর্জনের অভিযোগে আগের দিন সোমবার দুদকের রাজশাহী সমন্বিত জেলা কার্যালয়ে তাঁর বিরুদ্ধে একটি মামলা হয়েছে। পরদিন তাঁর স্ত্রীর বিরুদ্ধেও মামলা হলো।
মামলা দুটির বাদী দুদকের সমন্বিত জেলা কার্যালয়ের সহকারী পরিচালক আমির হোসাইন। তিনি জানান, পরিমল কুমার কুরীর বিরুদ্ধে দুদক ও মানি লন্ডারিং আইনে মামলা করা হয়েছে। একই আইনে মামলা করা হয়েছে তাঁর স্ত্রী সোমা সাহার বিরুদ্ধেও। মঙ্গলবার মামলাটি দায়েরর পরই পরবর্তী পদক্ষেপ নেওয়ার জন্য নথিপত্র আদালতে পাঠানো হয়েছে।
দুদকের এজাহারে বলা হয়েছে, সোমা সাহা একজন গৃহিণী। তার কোন বৈধ আয়ের উৎস নেই। তিনি তাঁর স্বামীর উপর নির্ভরশীল। সোমা তার স্বামী পরিমল কুমার কুরীর অসাধু উপায়ে অর্জিত অর্থকে বৈধ করার অপচেষ্টার অংশ হিসেবে নিজে স্থাবর-অস্থাবর সম্পদের মালিকানা অর্জন করেছেন এবং আয়কর নথিতে তা প্রদর্শন করেছেন। সোমা সাহা অসাধু উপায়ে জ্ঞাত আয়ের উৎসের সাথে অসংগতিপূর্ণ এক কোটি ১৯ লাখ টাকার স্থাবর-অস্থাবর সম্পদ অর্জন করেছেন।
দুদক আরও জানায়, পরিমল কুমার কুরী ও তাঁর স্ত্রী সোমা সাহাকে তাঁদের সম্পদ বিবরণী দাখিল করতে বলা হয়েছিল। এতে পরিমল নিজের নামে থাকা ৫০ লাখ ৪৩ হাজার ৫১৬ টাকার সম্পদ লুকানোর চেষ্টা করলেও গৃহিণী সোমা এক কোটি ১৯ লাখ টাকারই সম্পদ দেখিয়েছেন। এই সম্পদ আয়বহির্ভুত বলে তাঁর বিরুদ্ধেও মামলা করার জন্য কমিশনের অনুমতি চাওয়া হয়। সম্প্রতি কমিশন এর অনুমোদন দিলে এই মামলা করা হলো।
নিজের এবং স্ত্রীর অবৈধ সম্পদ অর্জনের বিষয়ে জাতীয় গৃহায়ণ কর্তৃপক্ষের রাজশাহী সার্কেলের তত্ত্বাবধায়ক প্রকৌশলী পরিমল কুমার কুরী সোমবার বলেছিলেন ‘আমার কোন অবৈধ সম্পদ নেই। স্ত্রীর নামেও অবৈধ সম্পদ নেই। মামলা হয়েছে কি না তাও জানি না।’ মঙ্গলবার দুপুরে কথা বলার জন্য যোগাযোগের চেষ্টা করা হলে তাঁর নম্বরটি বন্ধ পাওয়া গেছে।