ঢাকা | জুলাই ২৬, ২০২৪ - ৯:৫৬ পূর্বাহ্ন

ভার্মীকম্পোস্ট সার উৎপাদন ও ব্যবহারের গ্রাম কারিগরপাড়া

  • আপডেট: Monday, June 6, 2022 - 11:41 pm

 

স্টাফ রিপোর্টার: ফসলি জমিতে গ্রামটিতে আর কখনও কোন রাসায়নিক সার ব্যবহার হবে না। কৃষিতে শতভাগ ভার্মীকম্পোস্ট সার ব্যবহার হবে এখানে। এই সার উৎপাদন হবে গ্রামেই।

সোমবার রাজশাহীর পবা উপজেলার কারিগরপাড়া নামের এই গ্রামটিকে শতভাগ ভার্মীকম্পোস্ট সার উৎপাদন ও ব্যবহারের গ্রাম হিসেবে ঘোষণা করা হয়েছে।

উন্নয়ন গবেষণা প্রতিষ্ঠান বাংলাদেশ রিসোর্স সেন্টার ফর ইন্ডিজিনাস নলেজ (বারসিক) ও পবা উপজেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের যৌথ আয়োজনে ‘টেকসই পরিবেশবান্ধব কৃষি ব্যবস্থা’ বিষয়ক আলোচনা ও মতবিনিময় সভায় এ ঘোষণা দেওয়া হয়। বিশ^ পরিবেশ দিবস উপলক্ষে এ সভার আয়োজন করা হয়। পরিবেশ রক্ষায় বিশেষ অবদান রাখায় আগের দিন রোববারই জাতীয় পরিবেশ পদক-২০২১ পেয়েছে বারসিক।

গ্রামের কৃষাণ-কৃষাণিদের নিয়ে আয়োজিত সভায় প্রধান অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন পবা উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা মো. শফিকুল ইসলাম। তিনি বলেন, আমাদের রাসায়নিক সারের বদলে আমাদের জৈব সারের উপর বেশি জোর দিতে হবে, রাসায়নিক সার আমদানি করতে সরকারকে প্রচুর টাকা ভুর্তুকি দিতে হয়। ভার্মীকম্পোস্টের মধ্যে সকল সারের উপাদান আছে। তাই আলাদা করে অন্য কোন সার প্রয়োগ করার দরকার নেই। এর ফলে ফসল উৎপাদনে খরচও কম হবে এবং পরিবেশও রক্ষা হবে।

আলোচনা অনুষ্ঠানে পরিবেশ ও কৃষি নিয়ে মাঠ পর্যায়ে তথ্য তুলে ধরেন বারসিকের গবেষক ও আঞ্চলিক সমন্বয়কারি মো. শহিদুল ইসলাম। তিনি বলেন, প্রধানমন্ত্রী টেকসই উন্নয়নের জন্য প্রকৃতি ভিত্তিক সমাধানে উপর জোর দিতে বলেছেন। সেই লক্ষ্যে আমরা কৃষকদের মধ্যে নিজস্ব সম্পদ ও প্রকৃতি ভিত্তিক কৃষি ব্যবস্থা গড়ে তুলতে সহায়কের ভূমিকা পালন করছি। কৃষকদের নিজস্ব জ্ঞান এবং তথ্যগুলো বিনিময়ে সহায়তা করে থাকি, যাতে কৃষক তাদের নিজস্ব সম্পদ ব্যবহার করে পরিবেশবান্ধব কৃষি ব্যবস্থা গড়ে তুলতে পারে। এর ফলে কৃষি হবে টেকসই এবং পরিবেশবান্ধব।

বড়গাছি কৃষক ঐক্যের সাধারণ সম্পাদক জব্বার আলীর সভাপতিত্বে আরো বক্তব্য রাখেন- ভার্মী কম্পোস্ট উৎপাদনকারী কৃষাণী বিলকিস বেগম। তিনি বলেন, আমি ২০১৭ সাল থেকে ভার্মী কম্পোস্ট সার উৎপাদন করি। এটি বিক্রি করেই আমার সংসার চলে। আমার প্রতিমাসে ভার্মীকম্পোস্ট থেকে আয় হয় গড়ে ১২ হাজার টাকা। এছাড়াও এই সারের উপকারি দিকগুলো নিয়ে কথা বলেন কৃষাণী মমেনা বেগম, কৃষক সুলতান আহমেদ, বারসিকের কৃষি কর্মকর্তা অমৃত কুমার সরকার প্রমুখ।

আলোচনা শেষে কারিগরপাড়া গ্রামকে শতভাগ ভার্মী কম্পোস্ট উৎপাদন ও ব্যবহারকারি গ্রাম ঘোষণা করেন পবা উপজেলার কৃষি কর্মকর্তা শফিকুল ইসলাম। এই গ্রামে ৩৬ জন কৃষাণ-কৃষাণী ভার্মীকম্পোস্ট উৎপাদন করেন। একই সাথে গ্রামের সকল কৃষক পরিবার এই ভার্মী কম্পোস্ট সার ব্যবহার করছেন। দীর্ঘ প্রায় সাত বছর থেকে ধীরে ধীরে ভার্মী কম্পোস্ট সার তৈরী ও উৎপাদন বৃদ্ধি পেয়েছে এ গ্রামে।