আবার পরিবেশ পদক পেল রাসিক
স্টাফ রিপোর্টার: প্রথমবার যখন এএইচএম খায়রুজ্জামান লিটন মেয়র হয়েছিলেন, তখন প্রথমবারের মত জাতীয় পরিবেশ পদক পেয়েছিল রাজশাহী সিটি করপোরেশন (রাসিক)। ২০১২ সালের পর আবার ২০২১ সালের জন্য এই পদক পেয়েছে রাসিক। পরিবেশ রক্ষা এবং উন্নয়নে বিশেষ অবদান রেখে দেশ সেরা হওয়ার জন্য দ্বিতীয়বারের মত রাসিককে এই পদক দিল সরকার।
বিশ্ব পরিবেশ দিবস-২০২২ উপলক্ষে রোববার বেলা ১১টায় ঢাকায় বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্রে আয়োজিত অনুষ্ঠানে প্রধানমন্ত্রীর পক্ষ থেকে রাসিক মেয়র এএইচএম খায়রুজ্জামান লিটনের হাতে জাতীয় পরিবেশ পদক তুলে দেন পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রণালয়ের মন্ত্রী মো. শাহাব উদ্দিন। অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে ভার্চুয়ালি যুক্ত ছিলেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
দ্বিতীয়বারের মত এই পদক পেয়ে রাসিক মেয়র এএইচএম খায়রুজ্জামান লিটন সাংবাদিকদের বলেছেন, ‘বিশ্ব পরিবেশ দিবসে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বাংলাদেশের মধ্যে প্রতিষ্ঠানিক পর্যায়ে রাজশাহী সিটি করপোরেশনকে জাতীয় পরিবেশ পদক-২০২১ প্রদান করেছেন। পদক প্রদান করায় আমি প্রধানমন্ত্রীর প্রতি কৃতজ্ঞ। এই পদক আমাদের কাজে আরও উৎসাহ যোগাবে।’
তিনি বলেন, ‘আমি ও আমার সিটি করপোরেশনের কর্মকর্তা-কর্মচারীবৃন্দ পরিবেশ সংরক্ষণের জন্য বছরব্যাপী অনেক কাজ করি। বৃক্ষরোপণ, পরিচর্যা করা, গ্রিন জোন তৈরি করা, ময়লা-আবর্জনা অপসারণ করা, দুর্গন্ধ না রাখা এবং পরিবেশের যত্ন আমরা করি। এই কারণে ২০১২ সালে আমরা প্রথমবারের মতো জাতীয় পরিবেশ পদক পেয়েছিলাম। দ্বিতীয়বারের মতো পদক প্রাপ্তিতে আমাদের কর্মকর্তা-কর্মচারী-শ্রমিক, সার্বিকভাবে রাজশাহীর জনগণ খুবই উদ্বুদ্ধ এবং আরো বেশি করে পরিবেশ সংরক্ষণের ব্যাপারে মনযোগী হবে।’
উল্লেখ্য, ২০১৮ সালের ৫ অক্টোবর দ্বিতীয়বারের মতো দায়িত্বগ্রহণের পর সবুজায়ন ও পরিবেশ উন্নয়নে বেশি গুরুত্ব দেন রাসিক মেয়র এএইচএম খায়রুজ্জামান লিটন। তাঁর নিরলস প্রচেষ্টায় স্বাস্থ্যকর, সবুজ ও পরিচ্ছন্ন শহর হিসেবে রাজশাহী মহানগরী দেশসেরা হয়েছে। নগর উন্নয়নে দীর্ঘমেয়াদী বিভিন্ন পরিকল্পনা ও সময়োপযোগী পদক্ষেপ গ্রহণের কারণেই পরিচ্ছন্ন, স্বাস্থ্যকর, দৃষ্টিনন্দন, সবুজ, উন্নত ও বাসযোগ্য পরিবেশবান্ধব শহর পেয়েছে মহানগরবাসী।
নগরীর প্রধান সড়ক বিভাজক, সড়ক দ্বীপে এবং ফুটপাতে লাগানো হয়েছে সৌন্দর্য্যবর্ধক বিভিন্ন প্রজাতির গাছ। সবুজ হয়েছে প্রায় ৩০ কিলোমিটার রাস্তার সড়ক বিভাজন ও চত্বর। ২০২১-২২ মৌসুমে রাসিকের উদ্যোগে প্রায় ৪২ হাজার ৪০০টি গাছের চারা রোপণ করা হয়েছে। প্রায় ৩ লক্ষাধিক হেজ জাতীয় গাছ রাস্তার আইল্যান্ড ও শহরের ফাঁকা জায়গায় লাগানো হয়েছে।
এছাড়া ২০২১-২২ শীত মৌসুমে প্রায় ১ লাখ ৬৪ হাজার ৮০০টি বিভিন্ন প্রজাতির শীতকালীন মৌসুমী ফুলের গাছ লাগানো হয়েছে নগরীর বিভিন্ন সড়কের আইল্যান্ডে ও চত্বরে। মহানগরীর প্রায় ১ হাজার ৮০০টি গাছে নামফলক লাগানো হয়েছে। ২০১২ সালে প্রথম জাতীয় পরিবেশ পদক পাওয়ার আগে ২০০৯ সালেও বৃক্ষরোপণে প্রধানমন্ত্রীর জাতীয় পুরস্কার লাভ করে রাসিক।
এছাড়া বিপুল পরিমাণ বৃক্ষরোপণসহ বহুমুখী উদ্যোগের কারণে ২০১৬ সালে বাতাসে ক্ষতিকারণ ধূলিকণা কমাতে বিশ্বের সেরা শহর নির্বাচিত হয় রাজশাহী। দ্য গার্ডিয়ান প্রকাশ করে সেই প্রতিবেদন। পরিবেশবান্ধব শহর হিসেবে রাজশাহী অর্জন করেছে ‘এনভায়রনমেন্ট ফ্রেন্ডলি সিটি অফ দ্যা ইয়ার-২০২০’ সম্মাননাও। চ্যানেল আই প্রকৃতি মেলা দশম বর্ষে পদার্পণে প্রথমবারের মত এ পদক দেওয়া হয় নির্মল বায়ুর শহর রাজশাহীকে।