দুর্গাপুরে বরেন্দ্রের সেচ পাইপ উপড়ে ফেলে পুকুর খনন
দুর্গাপুর প্রতিনিধি: দুর্গাপুর উপজেলায় বরেন্দ্র বহুমুখী উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের সেচ পাইপ (ড্রেন) উপড়ে ফেলে তিন ফসলি কৃষি জমিতে চলছে পুকুর খনন। প্রায় ৩০বিঘা জমিতে উচ্চ আদালতের আদেশ অমান্য করে উপজেলার কিসমত গনকৈড় ইউনিয়নের রাতুগ্রাম-সুজানগর বড় বিলে চলছে এ পুকুর খননের কাজ। সেচ পাইপ উপড়ে ফেলায় ওই এলাকার ফসলি জমিতে সেচ নিয়ে কৃষকরা দুচিন্তায় পড়েছেন। সরকারি সম্পত্তি নষ্ট করে পুকুর খনন ও এতে প্রশাসন নিরব ভূমিকা পালন করায় স্থানীয় কৃষকদের মধ্যে ক্ষোভ দেখা দিয়েছে।
সরেজমিনে গিয়ে দেখা গেছে, উপজেলার রাতুগ্রাম-সুজানগর বড় বিলে প্রায় ৩০ বিঘা ফসলি জমিতে পুকুর খনন করছেন হান্নান নামের এক ব্যক্তি। কিন্তু জমির মালিক হান্নান সবার আড়ালে রয়েছেন। আর এই অবৈধ পুকুর খননের দায়িত্ব দিয়েছেন এস্কেভেটর গাড়ির মালিক মাহাবুর রহমানকে। তিনি প্রশাসন ম্যানেজসহ পুকুর খননের সার্বিক দায়িত্ব পালন করছেন।
ওই স্থানে পুকুর খনন করতে গিয়ে বরেন্দ্র বহুমুখী উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের প্রায় ১৫ থেকে ২০টি সেচ পাইপ উপড়ে ফেলা হয়েছে। এখনও মাটির নিচে আছে আরও কয়েকশ’ ফিট পাইপ। সেগুলোও তুলে ফেলার চেষ্টা করা হচ্ছে। পুকুরের চারপাশে রয়েছে শত শত বিঘা ফসলি জমি। পাইপ উপড়ে ফেলায় আশপাশের কৃষি জমির সেচ নিয়ে হুমকির মুখে পড়েছে। মাহাবুর কোন নিয়ম নীতির তোয়াক্কা না করে সেচ পাইপ উপড়ে ভেঙে চুরে ফেলছেন।
স্থানীয় কৃষকদের অভিযোগ, এসব সেচ পাইপ কৃষকদের সেচ সুবিধার জন্য মাটির নিচ দিয়ে বরেন্দ্র উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ স্থাপন করে। কৃষকরা বছরের পর বছর ধরে এ ড্রেন দিয়ে জমিতে পানি সেচ দেয়। এখন পুকুর খননের ফলে সরকারি এই সম্পত্তি উপড়ে ফেলা হচ্ছে। এতে এলাকার শত শত কৃষক সেচ নিয়ে বিপাকে পড়বে। কিন্তু প্রশাসন নিবর ভূমিকা পালন করছে। মাহাবুর অবৈধভাবে উচ্চ আদালতের আদেশ অমান্য করে দেদারসে পুকুর খনন করছেন। সরকারি সম্পত্তি নষ্ট করা হচ্ছে। এখন পর্যন্ত প্রশাসনের কোন লোক এ ব্যাপারে খোঁজ নেয়নি।
পুকুর খননকারী মাহাবুর রহমান বলেন, ওপরে কথা বলেই তিনি পুকুর খনন করছেন। কারো কোন অভিযোগ নাই। বরেন্দ্রের সেচ পাইপ উপড়ে ফেলা বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন- এটা সরকারি সম্পত্তি। পুকুর খননের জন্য এটা মাটির নিচ থেকে তুলে রাখা হচ্ছে। আমার নিজ খরচে সেগুলো অন্য কোন জায়গায় বসিয়ে দিব।
দুর্গাপুর বিএমডিএ’র সহকারী প্রকৌশলী আজমল হক বলেন, পুকুর খনন অবৈধ। এ নিয়ে আমরা ওপরে অভিযোগ দিচ্ছি, পুকুর খনন তো আর বন্ধ হচ্ছে না। সরকারি সম্পদ নষ্ট হচ্ছে এ বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন- ওই স্থানে লোক পাঠানো হয়েছে। ক্ষতির পরিমান জানার পর আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
দুর্গাপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা নাজমুল হক বলেন, ওই বিলে পুকুর খনন হচ্ছে কী না আমার জানা নাই। এ বিষয়ে আমাকে কেউ অভিযোগ দেন নি।
রাজশাহী জেলা বরেন্দ্র বহুমুখী উন্নয়ন কতৃপক্ষের নির্বাহী পরিচালক মো. আব্দুর রশীদ বলেন, বরেন্দ্রের ডেন ব্যবস্থাপনা এটা সরকারি সম্পত্তি। কেউ এটা ক্ষতিগ্রস্ত বা উপড়ে ফেলতে পারে না। এ ব্যাপারে খোঁজ নিয়ে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলে জানান এই কর্মকর্তা।