নিষেধাজ্ঞা তুলে নিন, খাদ্যশস্য সরবরাহ করবো: রাশিয়া
অনলাইন ডেস্ক: পশ্চিমারা রাশিয়ার সামরিক বাহিনীর বিরুদ্ধে অভিযোগ করেছে যে, তারা বিশ্বজুড়ে লাখ লাখ মানুষের খাদ্য সরবরাহ জিম্মি করে রেখেছে। ইউক্রেনে সামরিক অভিযান শুরুর পর থেকে যুক্তরাষ্ট্র ও তার মিত্ররা রাশিয়ার ওপর যেসব নিষেধাজ্ঞা জারি করেছে, তা প্রত্যাহার করলেই খাদ্যপণ্যবাহী জাহাজগুলোকে ইউক্রেনের বন্দর ছেড়ে যাওয়ার ব্যবস্থা করবে রাশিয়া। খবর বিবিসির।
বুধবার বিবিসির প্রতিবেদনে জানা যায়, যুদ্ধ কৃষ্ণ সাগরে ইউক্রেনের প্রধান বন্দরগুলোকে অবরুদ্ধ করে দিয়েছে। এ কারণে একদিকে খাদ্যপণ্যবাহী জাহাজগুলো বন্দর ত্যাগ করতে পারছে না, অন্যদিকে নতুন জাহাজও বন্দরে ভিড়তে পারছে না।
রাশিয়া গমের একটি প্রধান রপ্তানিকারক দেশ, কিন্তু এখন লক্ষ লক্ষ টন শস্য আটকে রয়েছে। যা অন্য দেশে খাদ্য নিরাপত্তায় প্রভাব ফেলেছে। রাশিয়া খাদ্য সরবরাহকে অস্ত্র হিসেবে ব্যবহার করার কথা অস্বীকার করেছে।
রাশিয়া বলছে এ বিষয়ে তারা সহযোগিতা করতে পারে, তবে এক্ষেত্রে শর্ত হলো— অর্থনীতি ও পণ্য রপ্তানি বিষয়ক যেসব নিষেধাজ্ঞা রাশিয়ার ওপর দিয়েছে যুক্তরাষ্ট্র ও তার মিত্ররা, সেসব প্রত্যাহার করে নিতে হবে। গত ২৪ ফেব্রুয়ারি রুশ অভিযান শুরুর পর থেকে বন্ধ ইউক্রেনের সব সমুদ্রবন্দর। বন্দরগুলো যেন রুশ সামরিক বাহিনী ব্যবহার করতে না পারে, সেজন্য বন্দরের জাহাজ চলাচল পথে মাইন পেতে রেখেছে ইউক্রেনের সেনাবাহিনী।
তবে এই কারণে বিপাকে পড়েছে পণ্যবাহী জাহাজগুলো। পথে মাইন থাকার কারণে একদিকে যেমন ইউক্রেনের পণ্যবাহী জাহাজ বন্দর ছেড়ে যেতে পারছে না, অন্যদিকে বিদেশি জাহাজও প্রবেশ করতে পারছে না।
এদিকে, বন্দরগুলো বন্ধ থাকায় ইউক্রেনের খাদ্যগুদামগুলোতে আটকে আছে প্রায় আড়াই কোটি টন গম।
রাশিয়া ও ইউক্রেন বিশ্বের সবচেয়ে বড় খাদ্যপণ্য যোগানদাতা দেশ। আন্তর্জাতিক বাজারে ৩০ শতাংশেরও বেশি গমের যোগান আসে রাশিয়া ও ইউক্রেন থেকে। গমের পাশাপাশি ভুট্টা ও সূর্যমুখী তেল রপ্তানিতেও বিশ্বে শীর্ষস্থানে রয়েছে ইউক্রেন।
কিন্তু গত ২৪ ফেব্রুয়ারি ইউক্রেনে রুশ বাহিনীর অভিযান শুরুর পর থেকে ইউক্রেনের খাদ্যশস্য ও ভোজ্য তেলের রপ্তানিতে ধস নেমেছে। ফলে বিশ্ববাজারে হু হু করে বাড়ছে খাদ্যপণ্যের দাম।
জাতিসংঘের মহাসচিব আন্তোনিও গুতেরেস সম্প্রতি এক আহ্বানে বলেছেন, যদি অবিলম্বে ইউক্রেনে আটকে থাকা খাদ্যশস্য ও ভোজ্য তেল আন্তর্জাতিক বাজারে আনার ব্যবস্থা না করা হয়, তাহলে খাদ্যাভাব প্রকট হয়ে চলতি বছরই দুর্ভিক্ষ দেখা দেবে বিশ্বের বিভিন্ন প্রান্তে।