ঢাকা | জুলাই ২৬, ২০২৪ - ৯:৫৬ পূর্বাহ্ন

পাবনা ও সিরাজগঞ্জে পৃথক হত্যা মামলায় চারজনের যাবজ্জীবন

  • আপডেট: Monday, May 23, 2022 - 9:31 pm

 

সোনালী ডেস্ক: পাবনা ও সিরাজগঞ্জে পৃথক হত্যা মামলায় গতকাল সোমবার ৪ জনের যাবজ্জীবন কারাদন্ড দিয়েছে আদালত।

পাবনা
পাবনা প্রতিনিধি জানান, পাবনার ঈশ্বরদীতে সংঘঠিত ব্যাটারী চালিত অটোরিক্সা চালক মিঠুন হত্যা মামলায় এক নারীকে যাবজ্জীবন কারাদন্ড ও একই সাথে ২৫ হাজার টাকা জরিমানা অনাদায়ে আরো এক বছরের কারাদন্ডের আদেশ দিয়েছেন আদালত। সোমবার দুপুরে পাবনার বিশেষ জজ আদালতের বিচারক মোহাম্মদ আহসান তারেক এ রায় ঘোষণা করেন। রায় ঘোষনার সময় দন্ডপ্রাপ্ত আসামী জবা বেগম আদালতে উপস্থিত ছিলেন।

মামলার এজাহার সূত্রে জানা যায়, ২০১৮ সালের ৪ আগস্ট ঈশ্বরদী উপজেলার শৈলপাড়া এলাকার নিজ বাড়ি থেকে রিক্সা চালক মিঠুন কাজের উদ্দেশে তার অটোরিকশা নিয়ে বের হয়। এর পর থেকে তার কোন খোঁজ পাওয়া যাচ্ছিল না।

এর আটদিন পর ঈশ্বরদীর সুগারক্রপ গবেষণা কেন্দ্রের পাশে জঙ্গল থেকে মিঠুনের অর্ধগলিত মরদেহ উদ্ধার করে পুলিশ। খবর পেয়ে মিঠুনের পরিবার তার পোষাক দেখে মরদেহটি মিঠুনের সনাক্ত করেন। এ ঘটনায় নিহত মিঠুনের পিতা আঃ মজিত প্রামানিক অজ্ঞাতনামাদের আসামি করে মামলা দায়েরের করেন।

মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা বিকাশ চক্রবর্ত্তী জানান, মামলা দায়েরের পর তথ্য প্রযুক্তি ব্যবহার করে সাগর দম্পতিকে চিহ্নিত করা হয়। সাগর ও জবাকে আটক করলে তারা আদালতে হত্যার কথা স্বীকার করেন। আদালত ১৮ জনের স্বাক্ষ্য গ্রহন ও র্দীর্ঘ শুনানী শেষে আসামি জবা খাতুনকে যাবজ্জীবন কারাদন্ড ও ২৫ হাজার টাকা জরিমানা অনাদায়ে আরো এক বছরের কারাদন্ড দেন। মামলার অপর অভিযুক্ত জবার স্বামী সাগর মামলা চলাকালীন জেল হাজতে মৃত্যু হয়।

তদন্তকারী কর্মকর্তা বলেন, সাগর ও জবার দম্পত্তির একটি তিন বছরের শিশু সন্তান ছিল। তাদের সংসারে ছিল অভাব অনাটন। মূলত মিঠুনের অটোরিক্সা ছিনতাই করতেই তাকে হত্যা করা হয়। মামলার বাদীর মেয়ে জামাই জানান তারা এই রায়ে খুশি।

সিরাজগঞ্জ
সিরাজগঞ্জ প্রতিনিধি জানান, সিরাজগঞ্জে হত্যা মামলায় তিনজনকে যাবজ্জীবন কারাদন্ডের আদেশ দিয়েছেন আদালত। একই সঙ্গে প্রত্যেককে ২০ হাজার টাকা অর্থদন্ড অনাদায়ে ৬ মাসের বিনাশ্রম কারাদন্ড দেওয়া হয়। এছাড়া ২০১ ধারায় প্রত্যেককে আরও ৭ বছরের সশ্রম কারাদন্ড এবং তিন হাজার টাকা অর্থদন্ড অনাদায়ে আরও এক মাসের বিনাশ্রম কারাদন্ড দিয়েছেন আদালত।

সোমবার দুপুরে সিরাজগঞ্জের অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা জজ ১ম আদালতের বিচারক বেগম সালমা খাতুন এ রায় দেন। বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন আদালত পরিদর্শক মোস্তফা কামাল।

যাবজ্জীবন দন্ডপ্রাপ্তরা হলেন- এনায়েতপুর থানার খুকনী কান্দিপাড়া গ্রামের রইচ উদ্দিন প্রামানিকের ছেলে আ. রহিম খলিফা (৫০), একই গ্রামের মৃত শুকুর আলী সরকারের ছেলে আ. রহমান (৪৮) ও ওয়াজেদ আলীর ছেলে খুশি আলম (৪২)।

মামলা সূত্রে জানা গেছে, এনায়েতপুর থানার রূপনাই (গাছপাড়া) গ্রামের ইয়াসিন মোল¬ার ছেলে ইয়াকুব একই থানার খুকনী কান্দিপাড়া গ্রামের খুশি আলম ও মো. আ. রহিম খলিফার মেয়েদের উক্ত্যক্ত করতেন। এ ঘটনার জের ধরে ২০২০ সালের ৫ জানুয়ারি সন্ধ্যায় আ. রহিম খলিফা ও আ. রহমান মিলে পরিকল্পিতভাবে ইয়াকুব আলীকে শ্বাসরোধে হত্যা করেন। লাশ গুম করার জন্য খুকনী ইউনিয়নের ইসলামপুর গ্রামের মো. নুরু হাজী ও আ. কুদ্দুসের সরিষা ক্ষেতের সীমানায় ফেলে আসেন।

ঘটনার পরের দিন ইয়াকুব আলীর বাবা ইয়াসিন আলী এনায়েতপুর থানায় অজ্ঞাতদের আসামি করে একটি হত্যা মামলা করেন। মামলার তদন্তের এক পর্যায়ে মো. আ. রহমানকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ। রহমান গ্রেপ্তার হওয়ার পর হত্যাকান্ডের সঙ্গে আরও দুইজনের জড়িত থাকার কথা স্বীকার করে আদালতে ১৬৪ ধারায় স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দেন।

আদালত পরিদর্শক মো. মোস্তফা কামাল বলেন, দীর্ঘ সাক্ষ্য গ্রহণ শেষে আসামি খুশি আলম ও মো. আ. রহিম খলিফার উপস্থিতিতে আদালত এই রায় ঘোষণা করেন।