ঢাকা | মে ১৯, ২০২৫ - ২:১৫ পূর্বাহ্ন

ভোলাহাটে বয়স্ক ভাতা হরিলুটে চেয়ারম্যান-মেম্বাররা

  • আপডেট: Saturday, May 21, 2022 - 10:59 pm

ভোলাহাট (চাঁপাইনবাবগঞ্জ) প্রতিনিধি: সরকার যখন দেশের অসহায় মানুষের পাশে জমিসহ বাড়ী নিমার্ণ করে দিচ্ছে। দ’ুবেলা দু’মুঠো খাবারের ব্যবস্থা করতে বিধবা, বয়স্ক ভাতার ব্যবস্থা করেছে। ঠিক এমন সময় সরকারের ভাবমূর্তি ক্ষুন্ন করতে সরকারের এ উদ্যোগকে প্রশ্নবিদ্ধ করতে ভাতা ভোগিদের দু’মুঠো খাবার কেড়ে নিতে উঠে পড়ে লেগেছে ভোলাহাট উপজেলার দলদলী ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান -মেম্বারগণ।

গত ১৭ মে থেকে ২৪ মে পর্যন্ত উপজেলার দলদলী ইউনিয়ন পরিষদের আওতায় বিধবা ৩’শ ৬৫ ও বয়স্ক ৩’শ ৬৮জন মোট ৭’শ ৩৩ জনের মধ্যে ব্যাংক এশিয়ার এ্যাকাউন্টের মাধ্যমে জনপ্রতি ৪হাজার ৫’শ টাকা করে দেয়া অব্যহত আছে। ভাতা প্রদান শুরুর পূর্বে চেয়ারম্যান মোঃ মোজাম্মেল হক ও ওয়ার্ড মেম্বারেরা গোপন বৈঠকে অলিখিত সিদ্ধান্তের মাধ্যমে গ্রাম পুলিশদের বাড়ীতে বাড়ীতে পাঠিয়ে ব্যাংক এ্যাকাউন্ট খোলার নামে ৩’শ টাকা করে আদায় করেন। যাঁরা দিতে পারেনি তাঁরা ভাতা নিতে আসলে সংশ্লিষ্ট ইউনিয়ন পরিষদ মেম্বারেরা তাঁদের কাছ থেকে ৩’শ টাকা করে আদায় করেন এমন অভিযোগ করেছেন ভূক্তভুগিরা। দলদলী ইউনিয়নের মোট ৭’শ ৩৩জন ভাতাভোগির কাছে ৩’শ টাকা করে ২ লাখ ১৯ হাজার ৯’শ টাকা আদায় করা হয়।

অভিযোগের ভিত্তিতে সরজমিন গিয়ে ভাতাভোগি বিধবা মোসাঃ রাবেয়া বেগম, মোসাঃ মানোয়ারা বেগম, মোসাঃ লতা বেগম, মোসাঃ মাজিদা বেগম, মোসাঃ মাবিয়া বেগম, বয়স্ক ভাতাভোগি খোস মোহম্মদ, মোঃ মমতাজ উদ্দিনসহ অনেকের সাথে কথা বললে তাঁরা বলেন, গ্রামপুলিশ বাড়ীতে গিয়ে ব্যাংক এ্যাকাউন্ট করার জন্য টাকা লাগবে বলে ৩’শ টাকা নিয়ে এসেছে। যাঁরা বাড়ীতে টাকা দিতে পারেনি তঁদের কাছ থেকে পরিষদে বসে মেম্বারেরা ৩’শ টাকা করে আদায় করছে। টাকা না দিলে ভাতার টাকা পাওয়া যাবে না বলে মেম্বার ও গ্রামপুলিশেরা বলেছে বলে জানান।

২নং ওয়ার্ড গ্রামপুলিশ মোঃ আব্দুল হান্নান বলেন, আমাদের ৩’শ টাকা করে তুলতে বলায় বাড়ী বাড়ী গিয়ে ভাতা ভোগিদের কাছ থেকে টাকা নিয়ে আসার কথা স্বাীকার করেন।

এ ব্যাপারে ১নং ওয়াড় মেম্বার মোঃ আরসেদ আলী খালেকের সাথে যোগাযোগ করা হলে খরচ বাবদ ৩’শ টাকা করে নেয়ার কথা স্বীকার করেন। একই বিষয়ে ৭নং ওয়ার্ড মেম্বার মোঃ বাবুর সাথে যোগাযোগ করা হলে তিনি খরচ বাবদ ৩’শ টাকা নেয়ার কথা স্বীকার করে বলেন, এ টাকা দিয়ে দুপুরে পিকনিক করে সবাই মিলে খাওয়া-দাওয়া করতেই শেষ হয়ে যায়। তিনি বলেন, টাকা নেয়ার খবর পেয়ে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা উম্মে তাবাসসুম পরিষদে এসে টাকা নেয়ার সত্যতা পান। এ সময় তিনি সকলকে টাকা ফেরত দেয়ার কথা বলেন। এখন পর্যন্ত টাকা ফেরত দেয়া হয়েছে কি না জানতে চাইলে বাবু বলেন, টাকা ফেরত দিলে আমরা ছোট হয়ে যাবো, তাই টাকা ফেরত দেয়া হয়নি। ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান, মেম্বারগণ অসহায় বিধবা ও বয়স্ক ভাতাভোগিদের টাকা হরিলুটের প্রতিযোগিতায় সরকারের ভাবমূর্তি চরম ভাবে ক্ষুন্ন করার চেষ্টা বলছেন সচেতনমহল।

এ ব্যাপারে দলদলী ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান মোজাম্মেল হক চুটু ভাতা ভোগিদের কাছে টাকা নেয়ার বিষয়টির সত্যতা স্বীকার করেন। তবে তিনি না মেম্বারেরা নিয়েছেন বলে নিজেকে দায়মুক্ত করার চেষ্টা করেন। তবে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার কাছে এ ঘটনায় ক্ষমা চান এবং প্রত্যেক ভাতাভোগিকে আদায়কৃত টাকা ফেরত দেয়ার কথা বলেন। তবে টাকা ফেরত দেয়ার কথা বললে ৩ দিনেও কাউকে টাকা ফেরত দেয়া হয়নি জানিয়েছেন ভাতাভোগিরা।

উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা উম্মে তাবাসুমের সাথে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, খবর পেয়ে আমি ঘটনাস্থলে গেলে কেউ কেউ সত্যতা স্বীকার করেন, কেউ অস্বীকার করেছেন। তবে যাঁদের কাছে টাকা নিয়েছেন তাঁদের টাকা ফেরত দিতে বলেছি বলে জানান।

উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান মোঃ রাব্বুল হোসেন বলেন, যাঁরা প্রধানমন্ত্রীর উদ্দেশ্যকে ব্যাহত করবেন তাঁদের বিরুদ্ধে শাস্তির দাবী করেন।

 

 

Hi-performance fast WordPress hosting by FireVPS