বিদ্যালয় মাঠে খড়ের স্তুপ
মিজান মাহী, দুর্গাপুর থেকে: দুর্গাপুর উপজেলার একটি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের মাঠে খড়ের স্তূপ করে রাখা হয়েছে। সেই সঙ্গে বিদ্যালয় চলাকালীন সময়ে চলছে শ্যালো ইঞ্জিন চালিত মেশিন দিয়ে ধান মাড়াই ও শুকানোর কাজ। এতে বিকট শব্দে পড়াশোনার ব্যাঘাত ঘটছে শিক্ষার্থীদের।
স্থানীয় দুলাল হোসেন নামের এক ব্যক্তি মাঠে ধান মাড়াই শেষে খড়ের স্তপ রেখে দিয়েছেন। বিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ বার বার বলেও তিনি কারোর কথা কর্ণপাত করছেন বলে অভিযোগ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষকের।
সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, গোপালপাড়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের মাঠজুড়ে থরে থরে খড়ের ¯ুÍপ। স্থানীয় নারীরা মাঠেই ধান শুকানোর কাজ করছেন। বিদ্যালয় মাঠে খেলাধূলার জায়গা না থাকায় ক্ষোভ এলাকাবাসীর। এলাকাবাসীর অভিযোগ, বিদ্যালয়ের আশপাশের ধান কেটে মাঠেই মাড়াই শুকানোর কাজ করেন দুলাল হোসেন ও তাঁর লোকজন। পরে বিদ্যালয় মাঠেই খড়ের বড় বড় স্তপ করে রেখে দেয়। এখান থেকে সেই খড় গবাদিপশুকে খাওয়ানো হয়। বিদ্যালয়ের মাঠে খড়ের স্তূপ করে রাখায় শিক্ষার্থীদের স্বাভাবিক খেলাধুলা বন্ধ হয়ে গেছে।
বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক আরিফা আরোযা বলেন, ইদের পর বিদ্যালয় খোলার আগেই দুলাল হোসেন মাঠে ধান মাড়াই ও খড়ের স্তপ সরানোর জন্য বলা হয়েছে। কিন্তু তিনি কারোর কথাই কর্ণপাত করছেন না। পরে আমার এক সহকারী শিক্ষক পাঠানো হয়েছিল। সেই শিক্ষককে দুলাল হোসেন জানিয়েছেন, বিদ্যালয়ে তিনি জমি দিয়েছেন। মাঠ তাঁর জমিতেই আছে। মাঠে তিনি খড়ের স্তুপ ও ধান মাড়াইয়ের কাজ করবেন। এতে তাকে কেউ বাধা দিতে পারবেন না।
প্রধান শিক্ষক আরও বলেন, বিদ্যালয়ে আড়াইশ’র ওপরে শিক্ষার্থী রয়েছে। বিদ্যালয় চলাকালীন সময়ে শ্যালো ইঞ্জিণ চালিত মেশিন দিয়ে ধান মাড়াইয়ের কাজ চলে। এতে বিকট শব্দে শিক্ষার্থীদের ক্লাশ করতে সমস্যা হয়। এছাড়াও খড়ের স্তপ থাকায় বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের খেলাধূলা বন্ধ হয়ে গেছে। দুলাল হোসেনকে বার বার বলেও বিদ্যালয় মাঠ থেকে খড়ের স্তুপ সরানো যাচ্ছে না।
বিদ্যালয়ের কয়েকজন শিক্ষার্থী জানান, এমনিতেই ছোট মাঠ। তারপর আবার খড়ের স্তুপ। আমাদের খেলাধূলা ও মাঠে হাটাচলা বন্ধ হয়ে গেছে। ক্লাশ চলাকালীন সময়েও মেশিনে ধান মাড়াই করা হয়। এতে বিকট শব্দে ক্লাশে স্যারেরা কী পড়াচ্ছে বোঝায় যায় না।
জানতে চাইলে স্থানীয় দুলাল হোসেন বলেন, এলাকার লোকজন ধান মাড়াই করে মাঠে খড় রেখে। মাঠে রাখা খড়ের স্তুপগুলো কিনে নিয়েছি। আজকালের মধ্যেই সরিয়ে ফেলব। তিনি আরও বলেন, ওই বিদ্যালয়ে আমার ১১শতক জমি দেওয়া আছে। এখনও রেজিস্ট্রি করা হয়নি।
দুর্গাপুর উপজেলা শিক্ষা কর্মকর্তা মোখলেছুর রহমান বলেন, বিদ্যালয় প্রতিষ্ঠাকালীণ সময়ে যদি কেউ জমি লিখে দেন, সেটা তো সরকারি হয়ে যায়। সেখানে তার কোন কর্তৃত্ব থাকে না। এ বিষয়ে বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক ও ব্যবস্থাপনা কমিটির সঙ্গে কথা বলে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।