জুনিয়রকে রুমে ডেকে শারীরিক ও মানসিক নির্যাতনের অভিযোগ
বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিবেদক: রাজশাহী বিশ^বিদ্যালয়ের (রাবি) মতিহার হলের এক আবাসিক শিক্ষার্থীকে নিজ রুমে ডেকে শারীরিক ও মানসিকভাবে নির্যাতন করার অভিযোগ উঠেছে সিনিয়র ৬ শিক্ষার্থীর বিরুদ্ধে। গত বুধবার দিবাগত রাত ১টার দিকে হলের ১৩৬ নং রুমে এই ঘটনা ঘটে। গতকাল বৃহস্পতিবার দুপুরে ভুক্তভোগি শিক্ষার্থী বিশ^বিদ্যালয় প্রক্টর বরাবর লিখিত অভিযোগ জমা দেন।
অভিযুক্তরা হলেন- বিশ^বিদ্যালয় মুক্তিযুদ্ধ মঞ্চের সভাপতি আব্দুল্লাহ আল মামুন স্বদেশ, শাহীন, জুবায়ের, জারিফ ও নাবিল। এরা সকলেই বাংলা বিভাগের বিভাগের এবং তানভীর সমাজবিজ্ঞান বিভাগের ২০১৮-১৯ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থী। নির্যাতনের শিকার মো. নুর আলম বিশ^বিদ্যালয়ের বাংলা বিভাগের ১৯-২০ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থী। তিনি মতিহার হলের ২৫৪ নং রুমের আবাসিক শিক্ষার্থী।
লিখিত অভিযোগ থেকে জানা যায়, বুধবার দিবাগত রাত ১টায় শাহীন ও তানভীর নামে তৃতীয় বর্ষের বাংলা বিভাগের দুইজন শিক্ষার্থী ভুক্তভোগী নুর আলমের রুম এসে ঘুম থেকে জাগিয়ে ব্লকের ১৩৬ নম্বর অভিযুক্ত স্বদেশের রুমে নিয়ে যায়। সেখানে স্বদেশ ছাড়া আরও পাঁচজন উপস্থিত ছিলেন। তারা হলেন জুবাইয়ের, জারিফ, নাবিল এবং অজ্ঞাত। সবাই মিলে তাকে মানসিকভাবে অনেক নির্যাতন করে। এক পর্যায়ে তানভীর ও জুবাইয়ের তার মাথার পেছনে আঘাত করতে থাকে। এতে সে অসুস্থ হয়ে পড়ে বলে লিখিত অভিযোগে তিনি জানান।
এ বিষয়ে ভুক্তভোগী নুর আলম বলেন, ‘তাদের সাথে আমার কোনো দ্বন্দ্ব ছিলো না। তবে হলের সিট বরাদ্দের পর দ্বন্দ্ব শুরু হয়। আমার অ্যালোট (বরাদ্দ) হওয়া ডাবল রুমে ওরা অন্য কাউকে উঠাতে চায়। আর আমাকে প্রথম ব্লকের চারজনের রুমে পাঠাতে চায়। কিন্তু আমি দু’জনের রুম ছেড়ে চারজনের রুমে যেতে চাইনি। ‘স্বদেশ’ আমাকে বলে এইরুমে থাকতে হলে আমাকে বেডশেয়ার বা ফ্লোরে বেডিং করে থাকতে হবে। আর থাকতে অসুবিধে হলে অন্য ব্লকে চলে যেতে বলে। তাদের কথা মতো না চলায় আমাকে নির্যাতন করেছে।
অভিযোগের বিষয়ে জানতে চাইলে স্বদেশ বলেন, ‘নুর আমার বিভাগের ছোটভাই। সে এক বড় ভাইয়ের সাথে বেয়াদবি করেছিল। তাই বিষয়টি মিমাংসা করার জন্য তাকে ডেকে ছিলাম। বিষয়টি মিমাংসা হয়ে ছিল। তবে সেখানে তাকে কোনো নির্যাতন করা হয়নি। রাজনৈতিক প্রতিহিংসার জেরে কারো ইন্ধনে সে এই অভিযোগ করেছে।’
মতিহার হলের প্রাধ্যক্ষ ড. মুসতাক আহমেদ বলেন, ‘বাংলা বিভাগের এক জুনিয়র ও সিনিয়রের মধ্যে সিট নিয়ে একটা ঝামেলা হয়েছিল। আমি ডেকে এর সুরাহা করে দিয়েছি। ওই শিক্ষার্থী ওর সিটেই থাকবে।’
এ বিষয়ে প্রক্টর অধ্যাপক আসাবুল হক বলেন, ‘অভিযোগ পত্রটি পেয়েছি। বিষয়টি খতিয়ে দেখার জন্য দুইজন সহকারী প্রক্টরকে দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে। সত্যতা মিললে পরবর্তীতে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’