ঢাকা | জুলাই ২৬, ২০২৪ - ৮:৩০ পূর্বাহ্ন

শ্রীলঙ্কায় আরও খারাপ পরিস্থিতি আসছে: নতুন প্রধানমন্ত্রী

  • আপডেট: Friday, May 13, 2022 - 8:39 pm

 

অনলাইন ডেস্ক: দ্বীপরাষ্ট্র শ্রীলঙ্কার নতুন প্রধানমন্ত্রী রনিল বিক্রমাসিংহে বলেছেন, তার দেশে যে অর্থনৈতিক সংকট গণমানুষের জন্য দুর্ভোগ ও অস্থিতিশীলতা নিয়ে এসেছে, তা কাটিয়ে ওঠার আগে এটি আরও খারাপের দিকে যেতে পারে। শুক্রবার বিবিসির সঙ্গে একান্ত সাক্ষাৎকারে তিনি এসব কথা বলেন।

বর্তমানে দক্ষিণ এশিয়ার দেশটিতে জ্বালানির ঘাটতি চরমভাবে দেখা দিয়েছে। সেইসঙ্গে বেড়েছে খাদ্যপণ্যের দাম। এতে শ্রীলঙ্কার অনেক বাসিন্দা তিনবেলা খাবার যোগাতে ব্যর্থ হচ্ছেন। সংকট মোকাবেলায় সরকারের ব্যর্থতার কারণে দেশটিতে বিক্ষোভ-সহিংসতা দেখা দেয়। এতে প্রাণহানীর ঘটনা ঘটেছে।

বিক্ষোভ প্রশমিত করার প্রয়াসে রনিল বিক্রমাসিংহে প্রধানমন্ত্রী হিসেবে নিয়োগ পান।

দায়িত্ব নেয়ার পর দেয়া প্রথম সাক্ষাৎকারে বিক্রমাসিংহে বিবিসিকে বলেন, তিনি তার দেশের সব পরিবার যেন দিনে তিন বেলা খাবার পায়- সেটা নিশ্চিত করতে চান। আরও আর্থিক সাহায্যের জন্য বিশ্বের কাছে আবেদন জানিয়ে তিনি বলেন, ‘খাদ্য-সংকট থাকবে না, আমরা খাদ্যের ব্যবস্থা করবো।’

নতুন প্রধানমন্ত্রী শ্রীলঙ্কার অর্থনীতিকে ‘ভঙ্গুর’ বলে বর্ণনা করেন। তবে তিনি শ্রীলঙ্কার জনগণের উদ্দেশে বলেন, ‘ধৈর্য ধরুন, আমি পরিবর্তন আনবো।’

বিক্রমাসিংহে বৃহস্পতিবার শ্রীলঙ্কার প্রেসিডেন্ট গোতাবায়া রাজাপাকসের কাছে শপথ গ্রহণ করেন। কিন্তু তার নিয়োগ নিয়ে দেশটির জনগণের মধ্যে উচ্ছ্বাস দেখা যায়নি। কারণ, তাকে রাজনৈতিকভাবে প্রভাবশালী রাজাপাকসে পরিবারের খুব ঘনিষ্ঠ হিসেবে দেখা হয়।

সাক্ষাৎকারে বিক্রমাসিংহে বলেন, যারা প্রেসিডেন্ট রাজাপাকসের পদত্যাগের আহ্বান জানিয়ে আসছেন, তিনি সেসব বিক্ষোভকারীদের অনুভূতির সাথে একমত। তবে এটা হবে না বলেও মন্তব্য করেন তিনি।

বিক্রমাসিংহে বলেন, ‘দোষারোপ করে আসলে লাভ হয় না। আমি এখানে এসেছি লোকজনের দেখভাল করতে।’

বিবিসির প্রতিবেদনে বলা হয়, শ্রীলঙ্কার অর্থনীতি বিপর্যস্ত। খাদ্য, ওষুধ এবং জ্বালানি ফুরিয়ে গেছে বা অযোগ্য হয়ে পড়েছে। কিছু লোক তাদের ট্যাঙ্ক পূরণ করার জন্য পেট্রোল স্টেশনে ঘণ্টা পর ঘণ্টা ধরে নিষ্ফল অপেক্ষা করছেন।

১৯৪৮ সালে ব্রিটেনের কাছ থেকে স্বাধীনতা লাভের পর থেকে এটি দ্বীপ রাষ্ট্রের সবচেয়ে খারাপ অর্থনৈতিক সংকট।

শ্রীলঙ্কার রাজধানী কলম্বোতে ৬৮ বছরের এক নারী বার্তাসংস্থা এএফপিকে বলেন, ‘আমাদের কেরোসিন নেই, আমাদের পেট্রোল নেই, আমাদের ডিজেল নেই, আমাদের রান্না করার জন্য গ্যাস নেই; আমরা কাঠের চুলা দিয়েও রান্না করতে পারছি না।’

তিনি বলেন, ‘আমরা আমাদের বাচ্চাদের খাওয়ানোর জন্য প্রতিদিন লড়াই করছি। গত কয়েক দিনে খাবারের দাম তিনগুণ বেড়েছে। আমরা কীভাবে পরিচালনা করব?’

প্রসঙ্গত, শ্রীলঙ্কার অর্থনৈতিক দুর্দশার কেন্দ্রবিন্দু হল, দেশটি আমদানির উপর অনেকাংশে নির্ভরশীল। কিন্তু বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভের মাধ্যমে সে আমদানি ব্যয় পরিশোধ তাদের পক্ষে সম্ভব হচ্ছে না।