পাবনা, চাঁপাই ও নওগাঁয় তেল মজুদের অপরাধে জরিমানা
সোনালী ডেস্ক: পাবনা, চাঁপাইনবাবগঞ্জ ও নওগাঁ জেলায় অভিযান চালিয়ে ভোজ্যতেল মজুদের অপরাধে জরিমানা আদায় করা হয়েছে।
পাবনা প্রতিনিধি জানান, পাবনা শহরের দিলালপুর এলাকার একটি গোডাউনে গোয়েন্দা পুলিশ অভিযান চালিয়ে বিপুল পরিমান ভোজ্যতেল মজুদের সন্ধান পেয়েছে। ভোজ্য তেল মজুদ করার অপরাধে গোডাউনের মালিক তেল ব্যবসায়ীকে লক্ষাধিক টাকা জরিমানা করেছে ভ্রাম্যমান আদালত।
পাবনা জেলা গোয়েন্দা পুলিশের অফিসার ইনর্চাজ আতাউর রহমান খন্দকার জানান, গোপন সংবাদের ভিত্তিতে গোয়েন্দা পুলিশের একটি দল বুধবার রাত নয়টার দিকে পাবনা শহরের দিলালপুর এলাকার তেল ব্যবসায়ী উত্তম কুমার কুন্ডুর গোডাউনে অভিযান চালায়। অভিযানে ওই গোডাউনে ৪৬ হাজার ৪০০ লিটার ভোজ্যতেলের মজুদ পাওয়া যায়। তেল মজুদের সঠিক কোন কাগজ দেখাতে না পারায় তাকে ভ্রাম্যমান আদালতে হাজির করা হয়। ভ্রাম্যমান আদালতের বিচারক মোহাম্মদ আব্দুল হাছনাত ব্যবসায়ী উত্তম কুমার কুন্ডুকে অবৈধ ভাবে ভোজ্য তেল মজুদ করার অপরাধে দেড় লাখ টাকা জরিমানা অনাদায়ে তিন মাসের সাজা দেন। তৎক্ষনিক টাকা পরিশোধ করায় তাকে ছেড়ে দেওয়া হয়।
চাঁপাইনবাবগঞ্জ ব্যুরো জানায়, চাঁপাইনবাবগঞ্জের বটতলা হাট এলাকায় ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তরের অভিযানে মেসার্স কাজল ষ্টোর নামের এক মুদি দোকানদারকে অবৈধভাবে বোতলজাত সয়াবিন তৈল মজুদের দায়ে ৫০ হাজার টাকা জরিমানা করা হয়েছে। এ সময় ওই দোকান থেকে সাড়ে ৪ হাজার লিটার সয়াবিন তৈল জব্দ করা হয়। পরে তা জনসাধারণের মাঝে নায্যমুল্যে বিক্রয় করা হয়। অর্থদন্ডপ্রাপ্ত ব্যবসায়ী হলেন, চাঁপাইনবাবগঞ্জ পৌরএলাকার বটতলাহাট এলাকার মোঃ কাজল আলী। বৃহস্পতিবার দুপুরে এই অভিযান চালানো হয়।
ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তরের সহকারি পরিচালক ওসমান গনি জানান, ‘গোপন সংবাদের ভিত্তিতে এই অভিযান চালানো হয়। অভিযান কালে কাজল আলীর দোকান ও বাড়িতে অবৈধভাবে বোতলজাত সয়াবিন তেল মজুদের দায়ে ৫০ হাজার টাকা জরিমানা করা হয় এবং এ সময় সাড়ে ৪ হাজার লিটার সয়াবিন তেল জব্দ করা হয়। পরে তা নায্যমূল্যে জনসাধারণের মাঝে ৫ লিটারের তেলের বোতল ৭৬০ টাকা দামে বিক্রয় করা হয়। উপ-সহকারি পরিচালক আরও জানান, এই অভিযান চলমান আছে এবং অব্যাহত থাকবে।
এদিকে দোকানদার কাজল আলী জানান, ‘আমি একজন বৈধ ব্যবসায়ী। আমি তেল কিনি এবং বিক্রি করি। কোন দিন বেশিদামে তেল বিক্রি করিনি। সরকার নির্ধারিত মূল্যেই তেল বিক্রি করছি। এই তেলগুলো ঈদের দুই, তিনদিন আগে আমাদের ঘরে এসেছে। আর আমার এখানে ৫’শ থেকে ৭’শ কার্টুন তেল লাগে তাই রেখেছি। কিন্তু তেল রাখলেও; নিয়মিতই ক্রেতারা তেল পান এবং সরকার নির্ধারিত মূল্যেই তেল বিক্রি করি। কোন ক্রেতাই বলতে পারবেনা যে আমি তেলের দাম বেশি রেখেছি।
নওগাঁ প্রতিনিধি জানান, নওগাঁয় ভোক্তা অধিকার সংরক্ষন বিভাগ পরিচালিত এক অভিযানে তিনটি পৃথক ব্যবসা প্রতিষ্ঠান থেকে অবৈধ ভাবে মজুদকৃত ৭৫৩ লিটার সয়াবীন তেল উদ্ধার করা হয়েছে। উদ্ধারকৃত তেল তাৎক্ষনিক ভাবে সাধারন ক্রেতাদের মধ্যে নির্দিষ্টমূল্যে বিক্রি করা হয়েছে। অভিযানে নেতৃত্ব দিয়েছেন জেলা ভোক্তা অধিকার সংরক্ষন দপ্তরের সহকারী পরিচালক শামীম হোসেন।
তিনি জানান বৃহষ্পতিবার নিয়মিত বাজার তদারকীর অংশ হিসেবে শহরের আটাপট্টি এলাকায় কিরন ট্রেডার্স ও রঞ্জিত পাল এবং গোস্তহাটির মোড় এলাকায় আজাদ ষ্টোরে অভিযান পরিচালনা করা হয়। এ সময় এ ৩টি প্রতিষ্ঠান থেকে অবৈধভাবে মজুদ করা ১ লিটার, ২ লিটার ও ৫ লিটার পরিমাপের বোতলে মোট ৭৫৩ লিটার বসুন্ধরা ও তীর ব্র্যান্ডের সয়াবীন তেল উদ্ধার করা হয়। উদ্ধাকৃত সয়াবীন নির্দিষ্ট মূল্য ১ লিটারের বোতল ১৬০ টাকা, ২ লিটারের বোতল ৩২০ টাকা এবং ৫ লিটারের বোতল ৭৬০ টাকা হিসেবে উপস্থিত সাধারন ক্রেতাদের নিকট বিক্রি করা হয়।
এ সময় উৎসাহী ক্রেতাদের সারিবদ্ধভাবে দাঁড়িয়ে সয়াবিন তেল কিনতে দেখা গেছে। এ ছাড়াও মোবাইল ইউনিট কিরন ট্রেডার্সকে ৩০ হাজার টাকা, রঞ্জিত পালের ২৫ হাজার টাকা এবং আজাদ ষ্টোরের ১০ হাজার টাকা জরিমানা আদায় করা হয়েছে বলে ভোক্তা অধিকার সংরক্ষন বিভাগের সহকারী পরিচালক শামীম হোসেন জানিয়েছেন। অভিযান পরিচালনার সময় জেলা নিরাপদ খাদ্য পরিদর্শক মোঃ শামসুল হক উপস্থিত ছিলেন।