সেচের পানি না পেয়ে দুই কৃষকের আত্মহত্যা: অভিযোগপত্রে পুলিশ
![](https://sonalisangbad.com/wp-content/uploads/2022/04/Untitled-1-copy-66.jpg)
স্টাফ রিপোর্টার: ধানের জমি ফেটে চৌচির হলেও বরেন্দ্র বহুমুখী উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের (বিএমডিএ) গভীর নলকূপ অপারেটর দুই কৃষককে পানি দেননি। তিনি কাছের লোকদের আগে পানি দিতেন। ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্ঠীর চাষিদের পানির জন্য ঘোরাতেন। আর তাই সাঁওতাল সম্প্রদায়ের চাষি অভিনাথ মারান্ডি ও রবি মারান্ডি বিষপান করে আত্মহত্যা করেছেন।
এ দুই কৃষকের মৃত্যুর ঘটনায় পরিবারের পক্ষ থেকে যে আত্মহত্যার প্ররোচনার মামলা করেছিল, তার অভিযোগপত্রে পুলিশ এ কথা বলেছে। রাজশাহীর গোদাগাড়ী উপজেলার নিমঘুটু গ্রামের অভিনাথ ও তার চাচাতো ভাই রবি গত ২৩ মার্চ বিষপান করেছিলেন। এতে অভিনাথ সেদিনই এবং রবি একদিন পরে মারা যান।
এ নিয়ে দুই পরিবারের পক্ষ থেকে থানায় আলাদা দুটি আত্মহত্যার প্ররোচনার মামলা করা হয়। কিন্তু দুই কৃষক চোলাই মদ পান করে মারা গেছেন বলে প্রথম দিকে চালিয়ে দেওয়ার চেষ্টা করা হচ্ছিল বিভিন্ন মহল থেকে। তবে তাদের মরদেহের ময়নাতদন্তের প্রতিবেদনে বলা হয়, দুজনে একই ধরনের বিষপান করে মারা গেছেন। এরপর পুলিশ আদালতে মামলা দুটির অভিযোগপত্র দাখিল করেছে।
মামলা দুটিতে একমাত্র আসামি করা হয়েছিল বিএমডিএ’র গভীর নলকূপ অপারেটর ও ওয়ার্ড কৃষক লীগের সভাপতি সাখাওয়াত হোসেনকে। ঘটনার ১১ দিন পর তিনি গ্রেপ্তার হন। বিএমডিএ সেদিনই তাঁকে চাকরিচ্যুত করে। তিনি এখন কারাগারে। অভিযোগপত্রে পুলিশ শুধু সাখাওয়াত হোসেনকেই অভিযুক্ত করেছে।
মামলার তদন্ত কর্মকর্তা গোদাগাড়ী থানার উপ-পরিদর্শক (এসআই) মাহাফুজুর রহমান জানান, গত মাসের শেষের দিকে অভিনাথের মৃত্যুর ঘটনার মামলাটির অভিযোগপত্র জমা দেওয়া হয়। এরপর চলতি মাসের শুরুতে রবির মামলাটিরও অভিযোগপত্র দেওয়া হয়েছে। তিনি জানান, অপারেটর সাখাওয়াত পানি দিতে কৃষকদের হয়রানি করতেন। স্বজনপ্রীতি করে কাছের লোকদের আগে পানি দিতেন। অভিনাথ ও রবি পানি না পাওয়ার কারণে আত্মহত্যা করেন বলে এজাহারে উল্লেখ করা হয়। তদন্তেও এটি প্রমাণিত হয়েছে। তাই অভিযোগপত্রও সেভাবে করা হয়েছে।
রাজশাহী জেলা পুলিশের আদালত পরিদর্শক আবদুর রফিক জানান, কয়েকদিনের ব্যবধানে গোদাগাড়ী থানা থেকে অভিযোগপত্র দুটি প্রথমে তাঁর দপ্তরে পাঠানো হয়েছিল। তিনি অভিযোগপত্র দুটি আদালতে দাখিল করেছেন। আদালত তা গ্রহণ করেছেন।