ঢাকা | এপ্রিল ২৭, ২০২৪ - ১১:৫৮ অপরাহ্ন

শ্রীলঙ্কায় নতুন সরকার গঠনের আহ্বান বিক্ষোভকারীদের

  • আপডেট: Wednesday, May 11, 2022 - 11:25 am

অনলাইন ডেস্ক: চরম অর্থনৈতিক সংকটে থাকা শ্রীলঙ্কার দায়িত্ব নিতে নতুন সরকার গঠনের আহ্বান জানিয়ছেন বিক্ষোভকারীরা। যদিও মঙ্গলবার দেশটির প্রেসিডেন্ট গোতাবায় রাজাপাকসে নাগরিকদের শান্ত হওয়ার আহ্বান জানিয়েছেন।

এর আগে অর্থনৈতিক সংকটকে কেন্দ্র করে গত সোমবার সরকারবিরোধী বিক্ষোভে সরকার সমর্থকরা হামলা চালালে দুই পক্ষের মধ্যে তুমুল সংঘর্ষ বাধে। আর দুই পক্ষের সংঘর্ষের ঘণ্টাখানেকের মধ্যে প্রধানমন্ত্রীর পদ থেকে পদত্যাগ করেন গোতাবায়ার বড় ভাই মাহিন্দা রাজাপাকসে।

শ্রীলঙ্কা বর্তমানে ইতিহাসের সবচেয়ে ভয়াবহ অর্থনৈতিক সংকট পার করছে। পর্যাপ্ত বৈদেশিক মুদ্রা না থাকায় দেশটি ওষুধ এবং জ্বালানিসহ জরুরি প্রয়োজনীয় পণ্যদ্রব্য আমদানি করতে পারছে না। এর আগে দেশটি অর্থনৈতিক সংকট থেকে উত্তরণের জন্য প্রতিবেশী দেশ ভারত ও চীন থেকে বিলিয়ন বিলিয়ন মার্কিন ডলার অর্থ নেয়। ভৌগলিক কৌশলগত দিক থেকে ২২ মিলিয়ন জনসংখ্যার এই দেশটির ওপর ভারত ও চীনের ব্যাপক প্রভাব রয়েছে।

এদিকে চরম অর্থনৈতিক সংকটে পড়েও দেশটি প্রথমে আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিলের (আইএমএফ) সঙ্গে আলোচনায় বসেনি। কিন্তু পরবর্তীতে উপায়ান্তর না পেয়ে আইএমএফের সঙ্গে আলোচনা শুরু করে। তবে ততদিনে অনেক দেরি হয়ে গেছে।

দেশটিতে শান্তিপূর্ণ সরকারবিরোধী আন্দোলন চলার মাঝে সোমবার ক্ষমতাসীনদের সমর্থকরা তাদের ওপর হামলা চালালে পরিস্থিতি সংঘাতে রূপ নেয়। রাজধানী কলম্বোতে বিক্ষোভকারীদের ওপর এই হামলা হয়। পরে সংঘাতে আট জন নিহত এবং দুই শতাধিক আহত হয়। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রাখতে দেশটির পুলিশ বুধবার সকাল ৭টা পর্যন্ত দেশব্যাপী কারফিউ জারি করে। মঙ্গলবার সেই কারফিউর সময় বৃদ্ধি করে বৃহস্পতিবার সকাল ৭টা পর্যন্ত করা হয়।

এদিকে দেশটির প্রেসিডেন্ট নাগরিকদের সহিংসতা বন্ধের আহ্বান জানিয়েছেন। পাশপাশি তিনি পুলিশ ওসেনাবাহিনীকে বিনা ওয়ারেন্টে গ্রেপ্তার এবং জিজ্ঞাসাবাদের অনুমতি দিয়েছেন। আর প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয় বিক্ষোভ-সহিংসতা দমনে নৌ, বিমান ও সেনাবাহিনীকে গুলির নির্দেশ দিয়েছে।

এক টুইটে প্রেসিডেন্ট গোতাবায়া রাজাপাকসে বলেছেন, রাজনৈতিক স্থিতিশীলতা পুনঃস্থাপন এবং অর্থনৈতিক সংকট সমাধানে ঐক্যমতের ভিত্তিতে সাংবিধানিক আদেশে সম্ভাব্য সবকিছু করা হবে।

দেশটির পুলিশ মঙ্গলবার বলেছে, সোমবারের সহিংসতায় আট জন নিহত হয়েছেন। আহত হয়েছেন ২৩০ জনের বেশি। এ ছাড়া ৮৫টির মতো আগুন হামলার ঘটনা ঘটেছে। নিহত ব্যক্তিদের মধ্যে ক্ষমতাসীন এক এমপি, প্রাদেশিক সভার এক চেয়ারম্যান, পুলিশের এক উপ-পরিদর্শক এবং এক সার্জেন্ট রয়েছেন।

বিক্ষোভকারীরা ৪৭টি গাড়ি এবং ৩৮টি বাড়িতে অগ্নিসংযোগ করেছে। এ ছাড়া ৪১টি গাড়ি এবং ৬৫টি বাড়ি ভয়াবহভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। ক্ষতিগ্রস্ত হওয়া গাড়ির অধিকাংশই সাবেক মন্ত্রী বা ক্ষমতাসীন দলের এমপিদের।

এ ছাড়া মঙ্গলবার শ্রীলঙ্কা সরকারের দায়িত্ব নেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে বিরোধী দল সামাজি জানা বালাবউইগেয়ায়ার (এসজেবি) সংসদ সদস্যরা। তবে দলটি শর্ত দিয়েছে, প্রেসিডেন্ট পদ থেকে গোতাবায়া রাজাপাকসেকে পদত্যাগ করতে হবে।

সূত্র: টাইমস অব ইন্ডিয়া, ডেইলি মিরর (শ্রীলঙ্কা)

সোনালী/জেআর