ঢাকা | জুন ১৬, ২০২৫ - ৬:০৪ পূর্বাহ্ন

সেবায় সেরা হয়ে ‘পুরস্কার’ পাচ্ছে রামেক হাসপাতাল

  • আপডেট: Monday, May 9, 2022 - 7:57 pm

স্টাফ রিপোর্টার: করোনা রোগীদের সেবা দিয়ে দৃষ্টান্ত গড়েছে রাজশাহী মেডিকেল কলেজ (রামেক) হাসপাতাল। স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের চোখে তাই দেশের সেরা তিনটি হাসপাতালের একটি নির্বাচিত হয়েছে এই হাসপাতাল। এবার এর ‘পুরস্কার’ পেতে যাচ্ছে হাসপাতালটি। এখানে চিকিৎসা সেবার সক্ষমতা আরও বাড়াতে বেশকিছু পরিকল্পনা গ্রহণ করা হয়েছে। স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় সবকিছুই গ্রহণ করেছে।

হাসপাতাল পরিচালনা পর্ষদের সভাপতি ও রাজশাহী-২ (সদর) আসনের সাংসদ ফজলে হোসেন বাদশা বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন। তিনি জানান, তাঁর প্রস্তাবে সাড়া দিয়ে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় এ হাসপাতালের শয্যা আরও এক হাজার বৃদ্ধি করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে। অসমাপ্ত কাজগুলো দ্রুত শেষ করা হবে। নির্মাণ হবে নতুন ভবন। অত্যাধুনিক একটা হাসপাতাল হিসেবে গড়ে তুলতে যা যা করার দরকার তার সবই স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় করে দিতে চেয়েছে।

তিনি আরও জানান, হাসপাতালের নিবিড় পরিচর্যা কেন্দ্রটি (আইসিইউ) এখন যেখানে আছে সেখানে থাকবে না। চারতলা কার্ডিয়াক ভবনে আইসিইউ স্থানান্তর হবে। এই ভবনটির ঊর্দ্ধমুখী সম্প্রসারণের কাজ শুরু হয়েছে। এখনকার আইসিইউ ভবনের পুরোটিই হবে বার্ন অ্যান্ড প্লাস্টিক সার্জারি ইউনিট। আইসিইউ হস্তান্তরের প্রকল্প ইতোমধ্যে পাস হয়েছে।

হাসপাতাল সূত্রে জানা গেছে, এখন জরুরি বিভাগের একটি ওয়ার্ডে রয়েছে ওয়ান স্টপ ক্রাইসিস সেন্টার (ওসিসি)। ফলে জরুরি বিভাগে কোন রোগী এলে ওয়ার্ডে না যাওয়া পর্যন্ত তাঁর চিকিৎসা শুরু হয় না। এ সমস্যা সমাধানে ওসিসি অন্য জায়গায় স্থানান্তর করা হবে। এ ছাড়া বহির্বিভাগে একটি রেডিওলজি বিভাগ খোলা হবে। নির্মাণ করা হবে আধুনিক মরচুয়ারিও। এসব কাজের প্রকল্পও পাস করেছে সরকার। দ্রুতই কাজ শুরু হবে।

হাসপাতালে এক হাজার শয্যা বৃদ্ধি পেলে নতুন ওয়ার্ডেরও প্রয়োজন পড়বে। তাই ২০তলা একটি ভবন নির্মাণেরও প্রস্তাব দিয়েছে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ। এটির নাম হবে ‘সার্জারি ভবন’। এই ভবন নির্মাণেও ইতিবাচক সাড়া দিয়েছে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়। এ প্রকল্পটিও পাস হবে। করোনাকালে রোগীদের সেবা দিয়ে দৃষ্টান্ত দেখানোর কারণে হাসপাতালটির ব্যাপারে এখন আন্তরিক হয়েছে মন্ত্রণালয়। যা চাওয়া হচ্ছে তা-ই পাওয়া যাচ্ছে।

হাসপাতালটির এখন পরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল শামীম ইয়াজদানী। তিনি যোগ দেওয়ার পরই এই হাসপাতালের চিকিৎসা সেবা বদলে গেছে। শামীম ইয়াজদানী যোগ দিয়েই হাসপাতালেই ব্যবস্থা করেছেন রোগীদের সব ধরনের পরীক্ষা-নিরীক্ষার। করোনাকালে তিনি নানা পরিকল্পনা করে রোগীদের সেবা নিশ্চিত করেছেন। তাই ‘স্বাস্থ্যমন্ত্রী জাতীয় পুরস্কার-২০২০’ অর্জন করেছে উত্তরাঞ্চলের সর্ববৃহৎ এই হাসপাতালটি। গত ৩১ মার্চ ঢাকায় এক অনুষ্ঠানে স্বাস্থ্যমন্ত্রী জাহিদ মালেক হাসপাতাল পরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল শামীম ইয়াজদানীর হাতে পুরস্কারের সম্মাননা স্মারক তুলে দেন।

পরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল শামীম ইয়াজদানী বলেন, হাসপাতালে এখন শয্যার সংখ্যা ১ হাজার ২০০টি। কিন্তু সব সময় রোগী ভর্তি থাকেন আড়াই হাজার জন। আগে বহির্বিভাগেও রোজ আড়াই হাজারের মত রোগী সেবা নিতেন। এখন চিকিৎসা-ওষুধ পাওয়া যায় জেনে বহির্বিভাগে রোগী বেড়ে গেছে। প্রতিদিন ৬ থেকে ৭ হাজার রোগী আসছেন। তাদের তো ফিরিয়ে দেওয়া যায় না। এ জন্য আমরা আমাদের সক্ষমতা বাড়াচ্ছি।

তিনি বলেন, ‘আমরা এখন সরকারের কাছে যা চাচ্ছি তার সবই পাচ্ছি। আমাদের হাসপাতালের পরিচালনা পর্ষদের সভাপতি সংসদ সদস্য ফজলে হোসেন বাদশা। তিনিও হাসপাতালের উন্নয়নে চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছেন। ফলে কাজগুলো সহজ হয়ে যাচ্ছে। তিনি চেষ্টা করে যদি দীর্ঘ দিন বন্ধ থাকা রাজশাহী সদর হাসপাতালটা চালু করতে পারেন তাহলে রাজশাহীর চিকিৎসা সেবার আমূল পরিবর্তন হয়ে যাবে। সেদিকেও একটু নজর দেওয়া দরকার।’

জানতে চাইলে সাংসদ ফজলে হোসেন বাদশা বলেন, ‘সদর হাসপাতালও দ্রুত চালু হবে। এ জন্য সেন্ট্রাল অক্সিজেন সবররাহ লাইন বসানো হয়েছে। ট্যাংকও বসেছে। সেখানে ২৯টি আইসিইউ বেড থাকবে। রামেক হাসপাতাল আর সদর হাসপাতালে যে আইসিইউ থাকবে তাতে আর কোন সমস্যা থাকবে না। রামেক হাসপাতালের আধুনিকায়ন এবং রাজশাহী সদর হাসপাতাল চালু হওয়ার পর রাজশাহীর চিকিৎসাব্যবস্থার আমূল পরিবর্তন হবে। সে পরিকল্পনা নিয়েই কাজ চলছে।’

 

 

Hi-performance fast WordPress hosting by FireVPS