কমোডের পাইপ ভেঙে নবজাতককে জীবিত উদ্ধার করলেন বাবা
অনলাইন ডেস্ক: বরিশাল শের-ই-বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের (শেবাচিম) প্রসূতি ওয়ার্ডের শৌচাগারের কমোডের পাইপ ভেঙে নবজাতক এক মেয়েশিশুকে জীবিত উদ্ধার করেছেন তার বাবা। গতকাল শনিবার বিকেলে তাকে উদ্ধার করা হয়। উদ্ধার হওয়া নবজাতককে শেবাচিম হাসপাতালের বিশেষ সেবা ইউনিটে (স্ক্যানু) এবং তার মাকে প্রসূতি ওয়ার্ডে চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে।
শেবাচিম হাসপাতাল সূত্র জানায়, পিরোজপুরের স্বরূপকাঠি উপজেলার গণমান শেখপাড়া বাজার এলাকার বাসিন্দা নেয়ামত উল্লাহর স্ত্রী শিল্পী বেগম সন্তানসম্ভবা ছিলেন। সন্তান প্রসব করাতে গিয়ে দেখা দেয় জটিলতা। পরে তাকে স্বরূপকাঠি উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করা হলে অবস্থার আরও অবনতি হয়। তাকে শনিবার পাঠানো হয় বরিশাল শেবাচিম হাসপাতালে।
হাসপাতালে ভর্তির পর চিকিৎসকেরা শিল্পী বেগমের সন্তান প্রসবের জন্য অস্ত্রোপচারের (সিজারিয়ান) করার সিদ্ধান্ত নেন। শনিবার বিকেলে তার অস্ত্রোপচারের সময় নির্ধারণ ছিল। এজন্য নেয়ামত উল্লাহ প্রয়োজনীয় ওষুধপত্র আনতে হাসপাতালের সামনে যান। এদিকে শিল্পী বেগম শৌচাগারে গেলে সেখানে তার সন্তান প্রসব হয় এবং শৌচাগারের কমোডের মধ্যে নবজাতকটি আটকে যায়। পরে কমোডের পাইপ ভেঙে জীবিত অবস্থায় শিশুটিকে উদ্ধার করা হয়।
নবজাতকের বাবা নেয়ামত উল্লাহ বলেন, অপারেশনের জন্য ওষুধ কিনে ফিরে দেখি টয়লেটের সামনে ভিড়। আত্মীয়স্বজন কান্নাকাটি করছে। তখন আমি কমোডে পুরো হাত ঢুকিয়ে দেই, কিন্তু নাগাল পাই না। হাসপাতালের লোকজন জানান, ফায়ার সার্ভিসে খবর দেওয়া হয়েছে। কমোডের পাইপের ভেতর থেকে আমার সন্তানের কান্নার আওয়াজ আসছিল। আমি আর অপেক্ষা করতে পারলাম না। দ্রুত কমোডের পাইপ ভেঙে আমার মেয়েকে বের করে আনি।
নেয়ামত উল্লাহ বলেন, আমার স্ত্রী আমাকে বলেছেন, প্রসব বেদনায় তিনি টেরই পাননি কখন টয়লেটের কমোডে সন্তান প্রসব হয়ে গেছে। তার সাথে আমার এক আত্মীয়া ছিলেন। তিনি না দেখলে হয়তো আমার মেয়েকে আর পেতামই না।
বরিশাল শেবাচিম হাসপাতালের পরিচালক ডা. এইচ এম সাইফুল ইসলাম বিষয়টি নিশ্চিত করে বলেন, উদ্ধার করা শিশুটি নবজাতক শিশুর বিশেষ সেবা ইউনিটে (স্ক্যানু) এবং তার মা প্রসূতি ওয়ার্ডে বর্তমানে চিকিৎসাধীন। তাদের চিকিৎসায় সর্বোচ্চ গুরুত্ব দেওয়ার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
সোনালী/জেআর