ঈদুল ফিতর উদযাপনে প্রস্তুত রাজশাহী
স্টাফ রিপোর্টার: মুসলমানদের সবচেয়ে বড় ধর্মীয় উৎসব পবিত্র ঈদুল ফিতর উদযাপনে রাজশাহীতে সকল প্রস্তুতি সম্পন্ন হয়েছে। রাজশাহীতে পবিত্র ঈদুল ফিতরের নামাজের প্রধান জামাত অনুষ্ঠিত হবে সকাল ৮টায়। রাজশাহী নগরীর হযরত শাহমখদুম রূপোস (রহ.) কেন্দ্রীয় ঈদগাহ ময়দানে এই প্রধান জামাত অনুষ্ঠিত হবে।
এতে জনপ্রতিনিধি, রাজনৈতিক নেতৃবৃন্দ ও প্রশাসনের ঊর্দ্ধতন কর্মকর্তাসহ প্রায় ২০ হাজার মুসল্লি দুই রাকায়াত ওয়াজিব নামাজ আদায় করবেন। কেন্দ্রীয় ঈদগাহের ঈদ জামাতে প্রধান ইমাম হিসেবে ইমামতি করবেন নগরীর জামিয়া ইসলামিয়া শাহমখদুম (রহ.) মাদ্রাসার অধ্যক্ষ মুফতি শাহাদত আলী। তার সহকারী হিসেবে থাকবেন নগরীর হেতেমখাঁ বড় মসজিদের পেশ ইমাম মুফতি ইয়াকুব আলী ও হযরত শাহমখদুম (রহ.) দরগা শরীফ জামে মসজিদের ইমাম মো. মুহিবুল্লাহ।
অধ্যক্ষ মুফতি শাহাদত আলী জানান, ঈদের দিন বৈরি আবহাওয়া থাকলে ঈদগাহ ময়দানের পরিবর্তে প্রধান জামাত অনুষ্ঠিত হবে হযরত শাহমখদুম (রহ.) দরগা শরীফ জামে মসজিদে। সেখানে ঈদ জামাত অনুষ্ঠিত হলেও সময় অপরিবর্তিত থাকবে।
ঈদের দ্বিতীয় প্রধান জামাত অনুষ্ঠিত হবে নগরীর টিকাপাড়া ঈদগাহ ময়দানে। সেখানেও সময় নির্ধারণ করা হয়েছে সকাল ৮টা। এ ছাড়া নগরীর সাহেববাজার জিরোপয়েন্টেও ঈদের জামাত অনুষ্ঠিত হবে সকাল ৮টায়। এখানে সাহেববাজার বড় মসজিদসহ মধ্য শহরের পাঁচটি মসজিদের মুসল্লিরা ঈদের নামাজ আদায় করবেন। বরাবরের মত এবারও এখানে নারীদেরও জামাতে নামাজের আলাদা ব্যবস্থা থাকবে।
রাজশাহী নগর পুলিশ (আরএমপি) আইনশৃঙ্খলা রক্ষায় ঈদের আগের দিন থেকে পরের দিন পর্যন্ত নগরীতে আতশবাজি, পটকা ফুটানোসহ অন্যান্য ক্ষতিকারক দ্রব্য বিক্রি বা ব্যবহার, হিংসাত্মকভাবে আঘাত করার উদ্দেশ্যে অস্ত্রশস্ত্র, তলোয়ার, বর্শা, বন্দুক, ছোরা বা লাঠি ও বিষ্ফোরক দ্রব্য বহন নিষিদ্ধ ঘোষণা করেছে। এক গণবিজ্ঞপ্তিতে এই নিষেধাজ্ঞা আরোপ করা হয়েছে। আরএমপি জানিয়েছে, ঈদের জামাতে যাওয়ার সময় জায়নামাজ ছাড়া কোনো ব্যাগ, ভারী বস্তু বা অন্য কোনো দ্রব্যাদি বহনও নিষিদ্ধ ঘোষণা করা হয়েছে। আইন অমান্যকারীদের বিরুদ্ধে যথাযথ আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে বলেও জানানো হয়েছে।
এদিকে জেলা প্রশাসন জানিয়েছে, শহরের প্রায় ৫০টি এবং ৯ উপজেলায় আরও প্রায় ৩৫০টি ঈদগাহে ঈদের নামাজ আদায় হবে। এ জন্য ইতোমধ্যে প্রস্তুতি গ্রহণ করেছে ঈদগাহ কমিটি। ঈদগাহ কমিটি আলোচনা করে নিজ নিজ এলাকায় নামাজের সময় নির্ধারণ করেছে। ঈদের দিন জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ে একটি তথ্যকেন্দ্র স্থাপন করা হবে। সেদিন হাসপাতাল, কারাগার, ছোটমনি নিবাস, শিশু বিকাশ কেন্দ্র, শিশু পরিবার, শিশুসদন ও সেফ হোমে উন্নতমানের খাবার পরিবেশন করা হবে।
ঈদ জামাতের সময় হযরত শাহমখদুম রূপোস (রহ.) কেন্দ্রীয় ঈদগাহ ময়দানে ফায়ার সার্ভিসের পক্ষ থেকে অগ্নি নির্বাপন ব্যবস্থা রাখা হবে। সিভিল সার্জনের কার্যালয়ের পক্ষ থেকে প্রস্তুত থাকবে অ্যাম্বুলেন্স। আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী নিরাপত্তা নিশ্চিত করবে। ঈদের দিন শিশু-কিশোরদের বিনোদনের জন্য উন্মুক্ত থাকবে রাজশাহীর শহীদ এএইচএম কামারুজ্জামান কেন্দ্রীয় উদ্যান ও চিড়িয়াখানা।
জেলা প্রশাসক আবদুল জলিল জানান, মুসলমানদের সবচেয়ে বড় ধর্মীয় উৎসব পবিত্র ঈদুল ফিতর উৎসব উদযাপনে গত কয়েকদিন ধরেই প্রস্তুতি চলেছে। এখন প্রস্তুতি একেবারেই শেষপর্যায়ে। কেন্দ্রীয় ঈদগাহের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে সিটি করপোরেশনকে ক্লোজ সার্কিট (সিসি) ক্যামেরা লাগানোর জন্য অনুরোধ করা হয়েছে। এ ছাড়া আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী ঈদগাহে নিñিদ্র নিরাপত্তা নিশ্চিত করবে।