ট্রেনের টিকিট কালোবাজারি করে ১২ লাখ আয় সহজের রেজাউলের
অনলাইন ডেস্ক: ছয় বছর ধরে রেলওয়ের টিকিট বিক্রির কার্যক্রমে জড়িত রেজাউল করিম। প্রতিবছর ঈদে ২ থেকে ৩ হাজার ট্রেনের টিকিট সরিয়ে নিতেন তিনি। যা কালোবাজারিতে বিক্রির করে কামাতেন ১০ থেকে ১২ লাখ টাকা। সহজ ডটকমের সিস্টেম ইঞ্জিনিয়ার রেজাউল করিমকে আটকের পর এসব জানায় র্যাব।
বৃহস্পতিবার রাজধানীর কারওয়ান বাজার র্যাব মিডিয়া সেন্টারে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে এসব কথা জানান র্যাব-১ এর অধিনায়ক লে. কর্নেল আব্দুল্লাহ আল মোমেন।
ট্রেনের অনলাইনের টিকিট জালিয়াতির অভিযোগে আটকের পরে রেজাউল করিমের দেওয়া তথ্যের ভিত্তিতে বুধবার রাতে বিমানবন্দর স্টেশন থেকে তার সহযোগী এমরানুল আলম সম্রাটকে আটক করা হয়। তাদের স্মার্টফোন থেকে অবৈধ উপায়ে সংগ্রহ করা বিপুল পরিমাণ ট্রেনের ই-টিকিট জব্দ করা হয়।
কর্নেল আব্দুল্লাহ আল মোমেন। বলেন, ঈদযাত্রায় ট্রেনের টিকিটের বিপুল চাহিদা থাকে। আর এ সুযোগকে কাজে লাগিয়ে কালোবাজারে টিকিট বিক্রি করে আসছিল একটি চক্র। অধিকাংশ মানুষই অনলাইনে ট্রেনের টিকিট কাটার চেষ্টা করছেন। কিন্তু ঈদ উপলক্ষে সকালে অনলাইনে টিকিট ছাড়ার সঙ্গে সঙ্গেই টিকিট শেষ হয়ে যাওয়ার অভিযোগ পাওয়া যায়।
এমন অভিযোগে র্যাব-১ এর গোয়েন্দা দল কমলাপুর স্টেশন থেকে সহজ ডটকমের সিস্টেম ইঞ্জিনিয়ার রেজাউল করিমকে আটকের পর ব্যাপক জিজ্ঞাসাবাদ করে। এক পর্যায়ে তার দেওয়া তথ্যে টিকিট কালোবাজারির বিষয়টি নিশ্চিত হয় র্যাব। পরে দেওয়া তথ্যের ভিত্তিতে তার সহযোগী এমরানুলকে আটক করা হয়।
জিজ্ঞাসাবাদের ভিত্তিতে র্যাব-১ এর কর্মকর্তা বলেন, রেজাউল গত ৬ বছর ধরে ট্রেনের টিকিটিংয়ের সঙ্গে জড়িত। সহজ ডটকমের আগে অনলাইনে টিকিট বিক্রির দায়িত্বরত প্রতিষ্ঠান সিএনএস বিডিতেও কর্মরত ছিলেন তিনি। অভিজ্ঞকর্মী হিসেবে সহজ ডটকম তাকে নিয়োগ দেয়।
পরিচিতজনদের কাছে ৫০০ টাকা লাভে টিকিট বিক্রয় করতেন রেজাউল। এছাড়া অন্যদের কাছে নির্ধারিত দামের চেয়ে এক হাজার থেকে ১৫০০ টাকা বেশি দামে টিকিট বিক্রি করতেন। তার দাবি, রেলওয়ের বিভিন্ন ভিআইপিদের টিকিটের আবদার মেটানোর সুযোগে নির্বিঘ্নে তিনি এ কাজ করে আসছিলেন।
র্যাবের এ কর্মকর্তা বলেন, রেজাউল পরিচিতজনদের মাধ্যমে অবৈধ উপায়ে টিকিট প্রত্যাশীদের একটি বড় শ্রেণি গড়ে তুলেছেন। এর বাইরেও কালোবাজারিতে তার টিকিট বিক্রেতা রয়েছে। সিস্টেম ইঞ্জিনিয়ার হওয়ার সুবাদে সার্ভার থেকে টিকিট বুক করে কিনে নিতেন।
আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর চোখ ফাঁকি দিতে তার এ সংক্রান্ত বিভিন্ন যোগাযোগ চলতো বিভিন্ন অ্যাপসে। আর মোবাইল ব্যাংকিংয়ের পরিবর্তে লেনদেন করতেন নগদ অর্থে। তাকে আটকের মধ্য দিয়ে ট্রেনের টিকিট কালোবাজারির একটি বিষয় বেরিয়ে এসেছে বলে জানান র্যাব-১ এর অধিনায়ক।