ঈদবাজারে পুষ্পা-কাচাঁবাদামের দাপট
শিরিন সুলতানা কেয়া: নয় বছর বয়সী সুমি দাঁড়িয়ে আছে রাজশাহীর আর ডি এ মার্কেটের আহমেদ কালেকশান নামের একটি দোকানে। সুমির মা রাহেলা বেগম তার জন্য একটি ফ্রক পছন্দ করলেও সে নিতে রাজি না। বারবার দোকানীকে বলছে পুষ্পা ড্রেস দেখানোর জন্য। এরপর দোকানীও ব্যস্ত হয়ে পরেছেন পুষ্পা নামক পোশাক দেখাতে।
সুমির মত আরও একটি শিশু সাব্বির তার বাবার সাথে এসেছে ঈদের পোশাক কিনতে। তার বাবা শার্ট পছন্দ করলেও সে নিতে নারাজ। সাব্বিরের আগ্রাহ কাচাঁবাদাম নামক পোশাকে। মার্কেটের রাজধানী ফ্যাশনের সামনে দাঁড়িয়ে আছেন রিপা নামের এক তরুণী। তিনি বিক্রেতাকে বলছেন সারার নামক একটি পোশাক দেখাতে। এরপরেই বিক্রেতা সারার নামক একাধিক পোশাক বের করেন।
প্রতি ঈদে বাহারী দেশি বিদেশী নানা পোশাকে বাজার ভর্তি হয়ে যায়। তবে এবার রাজশাহীতে দেশি পোশাকের চেয়ে ভারতীয় পোশাকের আধিক্য বেশি দেখতে পাওয়া গেছে। রাজশাহীর আরডিএ মার্কেট , নিউ মার্কেট ঘুরে দেখা যায় ছোট বড় অনেকেই পুষ্পা-কাচাঁবাদামসহ ভারতীয় বিভিন্ন সিরিয়ালের নামের সাথে মিল রেখে পোশাক কিনতে আগ্রাহী।
তেমনি এই সব নামের সাথে মিল রেখে অনেক পোশাক দিয়ে বাজার সরগরম। দেশি পোশাকে চেয়ে ভারতীয় পোশাকের আধ্যিক্য বেড়েড়ে এবার। পুষ্পা, কাঁচাবাদাম, খুকুমণি হোম ডেলিভ্যারি, জলপরি, সারারা, গারারা নামের পোশাক দিয়ে একেকটা দোকান ভর্তি। আর বিভিন্ন বয়সী ক্রেতারা এসেই এই পোশাকগুলোই দেখতে চাচ্ছেন। প্রতিটি দোকানেই দেখা গেছে নানা বয়সী ক্রেতাদের ভীড়।
বিক্রেতারাও গত দুই ঈদের তুলনায় এবারে ব্যস্ত সময় পার করছেন। সাধারণত ছোট ছেলে মেয়েরা কাঁচাবাদাম, পুষ্পাতে ঝুঁকলেও তরুণীরা মেতেছেন সারার-গারারা নামক পোশাকে। এবার ঈদে সাধামাটা সালোয়ার- কামিজের জায়গাতে সারারা, গারারা এবং লং গ্রাউনের প্রতি তরুণীদের ঝোঁক দেখা যায়। প্রতিটি দোকানে গিয়েই তরুণীরা এবার সারারা গারারা নামক পোশাক খুঁজছেন।
ঈদের বাজার ঘুরে দেখা যায়, গত দুই তিন বছরের তুলনায় এবার প্রায় প্রতিটি পোশাকের দাম কিছুটা বাড়তি। পাঞ্জাবী – সালোয়ার ১২০০ থেকে ৫০০০ টাকায় পাওয়া যাচ্ছে। তেমনি সারারা গারারা ১৫০০ থেকে শুরু করে ৫০০০ টাকা পর্যন্ত পাওয়া যাচ্ছে। লং গ্রাউনের দামও কিছুটা বাড়তি। লং গ্রাউনের দামও ১২০০ থেকে শুরু করে ৪০০০ টাকার মধ্যে পাওযা যাচ্ছে।
নগরীর বোসপাড়া থেকে ঈদের বাজার করতে এসেছিলেন মনোয়ারা বেগম। ঈদের বাজার সম্পর্কে জানতে চাইলে তিনি বলেন, আমার দুটো ছেলের জন্য কিনতে এসেছি। আমি শার্ট পছন্দ করলেও তারা কাচাঁবাদম আর পুষ্পা নিয়েছে। কাঁচা বাদাম আর পুষ্পা কি জিনিস সেটা আমি জানি না। কিন্তু বাচ্চারা এর বাইরে কিছু নিবে না । তাই ওটাই নিতে হলো।
ঈদের বিক্রি সম্পর্কে জানতে চাইলে আহমেদ কালেকশনের এর বিক্রয়কর্মী সনি ইসলাম বলেন, গত বছরের তুলনায় এবারে বিক্রি অনেকটাই ভাল। আমার কাছে সারারা-গারার, পুষ্পা, কাচাঁবাদাম, খুকুমণি হোম ডেলিভ্যারী সব পোশাইক আছে। বাচ্চারা পুষ্পা আর কাঁচাবাদাম চাচ্ছেন। আর তরুণীরা সারারা গারারা নিচ্ছন।
ভাই ভাই কোয়ালিটি ফ্যাশনের মোহাম্মদ রাশেদুজ্জজমান বলেন, দশ রমজানের পর থেকেই বিক্রি বেড়েছে। এই পর্যন্ত ৩৬০ টি সারারা আর গারারা এনেছিলাম। মাত্র একটি বাকি আছে। পুষ্পা কাঁচাবাদাম ৩০০ এর মতো ছিল সেটাও বিক্রি হয়ে গেছে। নিউমার্কেটের নিউ ফ্যাশনের আবু বক্কর বলেন, এবার চাহিদা সারার আর গারারা নামকে পোশাকের। তবে পুষ্পা কাঁচাবাদামের চাহিদা আছে। আমি সারারা তুলিনি। তবে এবারে বিক্রি অনেকটাই ভাল।