ইছামতি নদী পাড়ের অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদে অভিযান
পাবনা প্রতিনিধি: উচ্চতর আদালতে মামলার নিস্পত্তি শেষে দীর্ঘ দুইমাস পরে হাইকোর্টের নির্দেশে তৃতীয় ধাপে পাবনা মধ্য শহরের মধ্যদিয়ে প্রবাহিত ঐতিহ্যবাহী ইছামতি নদী পাড়ের অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদ অভিযান শুরু হয়েছে।
মঙ্গলবার সকাল থেকে পৌর এলাকার শালগাড়িয়া ও গাংকুলা এলাকার ইছামতি নদী পাড়ের অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদ কার্যক্রম শুরু করে। অভিযানের নেতৃত্ব দেন জেলা প্রশাসন, পানি উন্নয়ন বোর্ড ও পাবনা পৌরসভা। প্রথম পর্যায়ে পৌর এলাকার মধ্যে এক কিঃমিঃ এলাকার অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদ কার্যক্রম সম্পন্ন হয়। এখন তিন কিঃ মিঃ এলাকার উচ্ছেদ কার্যক্রম চলবে।
জানা যায়, ২০২১ সাল থেকে ইছামতি নদী উদ্ধার কার্যক্রমের অংশ হিসাবে নদী পাড়ের অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদ কার্যক্রম শুরু হয়। প্রথম দিকে শহরের লাইব্রেরী বাজার বড় ব্রিজ থেকে দক্ষিণ মুখে অবৈধ উচ্ছেদ কার্যক্রম শুরু হয়ে নদীর এক কিলোমিটার খনন কাজ চলছে। একই সাথে পদ্মা নদী থেকে চলে আসা নদীর উৎস মুখে আরো ২ কিলোমিটার সংযোগ খাল খনন করা হয়েছে। এর পরে দ্বিতীয় ধাপে চলতি বছরের ফেব্রুয়ারি মাসে হাইকোর্ট এর নির্দেশে আবারো উত্তর মুখে উচ্ছেদ কার্যক্রম শুরু হয়। এর মধ্যে বৈধ বসতি দাবিকৃতদের করা উচ্চতর আদালতে মামলা নিস্পত্তি না হওয়ায় সেই সকল স্থাপনা বাদ রেখে উচ্ছেদ কার্যক্রম চালায় প্রশাসন।
উচ্চতর আদালতের ৪৩টি মামলার নিস্পত্তি শেষে হাইকোর্ট এর নির্দেশে তৃতীয় ধাপে আবারো অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদ কার্যক্রম শুরু হয়েছে। তবে নিন্ম আদালতে চলমান ৬টি মামলা থাকায় শুধু সেই সকল স্থাপনা রেখে বাকী সকল অবৈধ স্থাপনা আগামী এক মাসের মধ্যে নদীর সীমানা দখল মুক্ত করা হবে বলে জানান উচ্ছেদ সংশ্লিষ্টরা।
পাবনা পানি উন্নয়ন বোর্ডের তথ্যানুযায়ী, প্রায় সাড়ে ৩০০ তালিকাভূক্ত অবৈধ দখলদার রয়েছে নদীর দুই পাড়ে। সিএস নকসা অনুযায়ী পূর্ব নির্ধারিত নদীর সীমানা অনুসারে সকল প্রকারের অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদ করা হবে। তবে পৌর এলাকার ভেতরে ও বাহিরে সব মিলিয়ে নদী দৈর্ঘ্য প্রায় ৯ কিলোমিটার। এর মধ্যে পৌর এলাকার মধ্যে রয়েছে সাড়ে ৪ কিলোমিটার নদী। এদিকে নদীর এক পাশে সাড়ে ৩ কিলোমিটার এলাকার অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদ করে নদী খনন কাজ চলছে। তবে উচ্ছেদ না হওয়া নদী তীরবর্তী ২৩৫টি বৈধ দাবিকৃত দখলদারদের করা উচ্চতর আদালতের মামলার শুনানী শেষে চলতি মাসের ২২ এপ্রিল মামলা নিস্পত্তি করে দিয়েছেন হাইকোর্ট। এরই সাথে ইছামতি নদী খনন কাজে আর কোন বাধা থাকছে না বলে নিশ্চিত করেছেন সংশ্লিষ্টজনেরা।
উচ্ছেদ অভিযানের নেতৃত্ব দেন পাবনা জেলা প্রশাসনের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট মোঃ রফিকুল হাসান, পাবনা পানি উন্নয়ন বোর্ড এর উপ-বিভাগীয় প্রকৌশলী শাহীন রেজা, পাবনা পৌরসভার নির্বাহী প্রকৌশলীসহ আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যরা।