ঢাকা | ডিসেম্বর ২১, ২০২৪ - ৯:৫৫ অপরাহ্ন

কাজিপুরের চরাঞ্চলে ভুট্টার বাম্পার ফলন

  • আপডেট: Thursday, April 21, 2022 - 10:09 pm

গোলাম কিবরিয়া খান, কাজিপুর (সিরাজগঞ্জ) থেকে: সিরাজগঞ্জের কাজিপুর উপজেলার চরাঞ্চলে গত কয়েক বছরের তুলনায় রবি মৌসুমে রেকর্ড পরিমাণ ৮ হাজার ৭শত ৫০ হেক্টর জমিতে ভুট্টার বাম্পার ফলন হয়েছে। বাজারদর ভালো থাকায় কৃষকের স্বপ্ন রঙ্গিন হয়ে উঠেছে। ভুট্টা মাড়াই ও শুকনো কাজে ব্যস্ত সময় পার করলেও উৎপাদন সফলতা তাদের ক্লান্তি দূর করে দিয়েছে।

গবাদিপশু খাদ্য প্রস্তুতকারী প্রতিষ্ঠানগুলো কাঁচা ভুট্টা উচ্চদামে সংগ্রহ শুরু করায় একই জমিতে অতিরিক্ত আবাদ হিসেবে ধান রোপনের সুযোগ পেয়েছে কিছু সংখ্যক কৃষক। মৌসুমের শুরুতেই স্থানীয় বাজারে ভুট্টার আদ্রর্তা ভেদে ১ হাজার ৫০ থেকে ১৪শ টাকা মনপ্রতি হারে বিক্রি হচ্ছে। যা অন্যান্য বছরের তুলনায় প্রায় দ্বিগুণ।

কৃষিপণ্য উৎপাদনে স্বয়ংসম্পূর্ণ কাজিপুর উপজেলার ১২টি ইউনিয়নের মধ্যে ৬টি ইউনিয়ন যমুনা নদীর চরাঞ্চলে। বাকি ৬টির মধ্যে ৪টি ইউনিয়ন নদীতে আংশিক বিধ্বস্ত। বিস্তৃর্ণ চরাঞ্চলে যমুনা নদীর নাব্যতা হ্রাস পাওয়ায় জেগে উঠা ছোট ছোট অসংখ্য বালু চর, খাড়ীর কোলজুড়ে রবি ফসল চাষ করা যায় নির্ভয়ে। নদীর ধু-ধু বালু চরে যেখানে যে ফসল প্রযোজ্য তাই চাষাবাদ করে কৃষকরা। এ বছর রবি ফসলের মধ্যে ভুট্টার আধিক্য বেশি। সহজ চাষাবাদ পদ্ধতি ও উৎপাদন ব্যয় কম এবং অধিক লাভজনক হওয়ায় এই এলাকায় ভুট্টা আবাদ দিন দিন জনপ্রিয় হয়ে উঠেছে।

উপজেলা কৃষি অফিস সূত্রে জানা যায়, চলতি মৌসুমে ৩৮০০ জন ভুট্টা চাষিকে প্রনোদনার আওতায় বিঘা প্রতি সার, বীজ, প্রশিক্ষণ ও অন্যান্য উপকরণ প্রদান করা হয়েছে। ৮হাজার ৭শত ৫০ হেক্টর জমিতে ১৮ প্রকার জাতের হাইব্রিড ভুট্টা চাষাবাদ হয়েছে এবার। এরমধ্যে উল্লেখযোগ্য, এন এইচ-৭৭২০ জাতের ১৮০০ হেক্টর, মিরাকেল ১৭১০ হেক্টর, ডন১১ জাতের ৫১০ হেক্টর, সুপারশাইন ২৭৬০ জাতের ৭০০ হেক্টর, কাবেরি ৮৫০ হেক্টর, কনক-৫১ জাতের ৪৫০ হেক্টর, ৯০ এম গোল্ড ৪৫০ হেক্টর। কাজিপুরের মোট আবাদী জমির এক তৃতীয়াংশে ভুট্টা চাষ হওয়ায় ধানের পরেই প্রধান অর্থকরী ফসল হিসেবে ভুট্টা বিবেচিত হয়ে আসছে।

উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা কৃষিবিদ রেজাউল করিম জানান, চরাঞ্চলের পলি মিশ্রিত বালু মাটি ভুট্টা চাষের জন্য আদর্শ। প্রদর্শনী, সরকারি প্রণোদনা, ভর্তুকি, প্রযুক্তি এবং প্রশিক্ষণসহ যাবতীয় সুযোগ সুবিধা যথাসময়ে প্রদান করার পাশাপাশি উপ-সহকারী কৃষি কর্মকর্তারা সর্বোচ্চ ফলনের জন্য সার্বক্ষণিক পরিদর্শন ও পরামর্শ প্রদান করে আসছেন। ভুট্টা উৎপাদনের ক্ষেত্রে কাজিপুর দৃষ্টান্ত হতে পারে বলে তিনি আশাবাদ ব্যক্ত করেন।