ভাড়া নেওয়ার জন্য বাসা দেখতে গেলেও বিপদ!
স্টাফ রিপোর্টার: রাজশাহী কোর্ট কলেজের তৃতীয় বর্ষের এক ছাত্র পড়াশোনার পাশাপাশি একটি বেসরকারি কোম্পানিতে চাকরি করেন। তিনি থাকার জন্য এক কক্ষের একটি বাসা খুঁজছিলেন। এ জন্য রাজশাহীভিত্তিক বাসা ভাড়া সংক্রান্ত একটি ফেসবুক গ্রুপে পোস্ট দেন। দিয়েছিলেন মোবাইল নম্বরও। এরপর ওই ছাত্রের সঙ্গে যা ঘটেছে তা তিনি কল্পনাও করেননি।
একটি প্রতারক চক্র তার কাছ থেকে হাতিয়ে নিয়েছিল ১৪ হাজার ৯০০ টাকা। অবশ্য অভিযোগ পেয়ে এক নারীসহ চক্রটিকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। এরা হলেন- রাজশাহী মহানগরীর বোয়ালিয়া মডেল থানার হাদির মোড় বৌ বাজারের মাসুম শেখ (৩৮), রামচন্দ্রপুর মীরের চকের আশিক আলী (২৩) ও মুনতাসির আলী সিয়াম (২৯); কেদুর মোড় বৌ বাজারের মো. পলাশ (২৭) এবং জেলার চারঘাট থানার হলিদাগাছির শরিফা আক্তার সাথী (২৭)। শরিফা নগরীর তেরখাদিয়া ডাবতলার বাসিন্দা বলে পুলিশ জানিয়েছে।
মঙ্গলবার দুপুরে রাজশাহী নগর পুলিশের (আরএমপি) কমিশনার আবু কালাম সিদ্দিক নিজের দপ্তরে সংবাদ সম্মেলন করে জানান, ভুক্তভোগী ছাত্র ফেসবুকে পোস্ট দেওয়ার পর শরিফা আক্তার সাথী তাকে ফোন করে বলেন, রাজশাহী কমিউনিটি সেন্টারের পাশে তার মায়ের বাসায় একরুম বিশিষ্ট একটি ভালো বাসা আছে। ছেলেটি সরল বিশ্বাসে গত ১৩ এপ্রিল দুপুরে রাজশাহী কমিউনিটি সেন্টারের সামনে গিয়ে শরিফাকে ফোন করেন। ফোন পেয়ে শরিফা এসে পলাশকে হড়গ্রাম পূর্বপাড়ার একটি বাড়ির নীচতলার একটি কক্ষে নিয়ে যান। কক্ষটি দেখার সময় শরিফা ওই ছেলেটিকে জড়িয়ে ধরেন। এ সময় সেখানে আগে থেকেই ওঁৎ পেতে থাকা প্রতারক চক্রের চারজন সদস্য ঘরে ঢুকে ওই নারীর সঙ্গে ছেলেটির আপত্তিকর ছবি তোলেন। এরপর তারা ছেলেটিকে চড়থাপ্পড় মারতে শুরু করেন।
এ সময় ফেসবুকে ছবি ছেড়ে দেওয়ারসহ পুলিশ পরিচয়ে থানায় নিয়ে যাওয়ার ভয় দেখিয়ে ৫০ হাজার টাকা মুক্তিপণ দাবি করেন প্রতারকেরা। ছেলেটিকে আটকে রাখা হয়। পরবর্তীতে ছেলেটি নগদ ও বিকাশের মাধ্যমে মোট ১৪ হাজার ৯০০ টাকা মুক্তিপণ দেয়। টাকা দিয়ে ছাড়া পাবার পর ছেলেটি নগর ডিবি পুলিশে একটি অভিযোগ করেন। এরপরই সোমবার অভিযান চালিয়ে শরিফাসহ পাঁচজনকে গ্রেপ্তার করে ডিবি পুলিশের একটি দল।
তাদের কাছ থেকে নগদ ৩ হাজার ২০০ টাকা, দুটি মোবাইল ফোন, দুটি জিআই পাইপ, একটি চাকু, পুলিশের ওয়াকিটকির মতো দেখতে ছোট কালো রংয়ের একটি ওয়াকিটকি, পুলিশ লেখা ও পুলিশের মনোগ্রাম সম্বলিত দুটি আইডি কার্ড হোল্ডার এবং সাদা-নীল রংয়ের পুলিশ লেখা এক জোড়া জুতা উদ্ধার হয়। এদের সবার বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে।