রাজশাহীতে আউটসোর্সিংয়ে জনবল নিয়োগে টাকার খেলা
স্টাফ রিপোর্টার: রাজশাহীতে আউটসোর্সিংয়ের মাধ্যমে স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে জনবল নিয়োগে টাকার খেলা চলেছে। জনবল সরবরাহের কাজ পাওয়া ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান ও সিভিল সার্জন মিলেমিশে এমন দুর্নীতি করেছেন বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে। রাজশাহী-৩ (পবা-মোহনপুর) আসনের এমপি ও জেলা আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক আয়েন উদ্দিন এ অভিযোগ তুলেছেন।
অভিযোগ তুলে তিনি তাঁর নির্বাচনি এলাকার দুই উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নতুন নিয়োগ পাওয়াদের যোগদান করতে দেননি। তিনি বলছেন, এই নিয়োগে চলেছে টাকার খেলা।
জানা গেছে, রাজশাহীর ৯ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ওয়ার্ডবয়, পরিচ্ছন্নতাকর্মী, কুক ও নৈশপ্রহরীর সংকট কাটাতে মাসিক প্রায় ১৬ হাজার টাকা বেতনে আউটসোর্সিংয়ের মাধ্যমে জনবল নিয়োগের দরপত্র আহ্বান করা হয়। ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠানকে গত ৫ এপ্রিল জনবল সরবরাহের কার্যাদেশ দেওয়া হয়েছে। ১১ এপ্রিলের মধ্যে ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠানের তালিকাভুক্ত জনবলকে যোগদানের জন্য বলা হয়।
এরপর কয়েকটি স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়োগপ্রাপ্তরা যোগদানও করেছেন। তবে পবার ১১ ও মোহনপুরের ১২ জন যোগদান করতে পারেননি। পবা ও মোহনপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়োগপ্রাপ্তরা শনিবার যোগদান করতে গেলে তাদের ফিরিয়ে দিয়েছেন উপজেলার স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তারা। তারা নিয়োগপ্রাপ্তদের জানিয়েছেন, একটা জটিলতা হয়েছে। জটিলতা শেষ হলে তাদের যোগদান করানো হবে।
মোহনপুর উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. আরিফুল কবির বলেন, ‘এমপি সাহেব যোগদান করাতে নিষেধ করেছেন। তাই যোগদান করানো হয়নি। কেন যোগদান করাতে বারণ করেছেন তা আমি বলতে পারব না।’ এমপি আয়েন উদ্দিন বলেন, ‘করোনাকালে অনেকেই হাসপাতালে বিনাপারিশ্রমিকে দিনের পর দিন কাজ করেছেন। অস্থায়ী কোন নিয়োগ হলে এদের নেওয়ার কথা ছিল। কিন্তু এখন হঠাৎ শুনছি আউটসোর্সিংয়ের মাধ্যমে নিয়োগ হয়ে গেছে। এতে অনিয়ম হয়েছে।’
কী ধরনের অনিয়ম জানতে চাইলে আয়েন উদ্দিন বলেন, ‘সব ধরনের অনিয়মই হতে পারে। মোটা অঙ্কের টাকার বিনিময়ে এসব নিয়োগ দেওয়া হয়েছে। স্বজনপ্রীতি হয়েছে। তা না হলে এই নিয়োগের আগে কেন আমরা জানতে পারলাম না? এ জন্য আমি বলেছি, হাসপাতালের আশপাশের যাঁরা এতদিন স্বেচ্ছাশ্রমে কাজ করছে, তাদের নিতে হবে। হঠাৎ করে বাইরের লোক এসে কাজ করবে তা হবে না।’
জানতে চাইলে রাজশাহীর সিভিল সার্জন ডা. আবু সাঈদ মো. ফারুক বলেন, ‘এমপি সাহেব না বুঝেই এসব অভিযোগ করছেন। তিনি আমাদের বিরুদ্ধে অভিযোগ তুললেও নিয়োগ আমরা দেইনি। ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান তালিকা করে নির্বাচিত করেছে।’
ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠানটির নাম ‘বিএসএস সিকিউরিটি’। ঢাকার এই লাইসেন্স নিয়ে জনবল সরবরাহের কাজটি করেছেন রাজশাহী মহানগর ছাত্রলীগের সাবেক নেতা আশিক হোসেন দীপু। তিনি নিজেই এ কথা স্বীকার করেছেন। অনিয়মের বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘অভিযোগ হয়েছে শুনেছি। সেটা সিভিল সার্জন অফিস দেখবে। আমাকে ডাকা হলে আমি তখন কথা বলব।’