ঢাকা | নভেম্বর ২৭, ২০২৪ - ১:১৪ পূর্বাহ্ন

বিষপানেই গোদাগাড়ীর দুই সাঁওতাল কৃষকের মৃত্যু

  • আপডেট: Saturday, April 16, 2022 - 10:55 pm

 

স্টাফ রিপোর্টার: রাজশাহীর গোদাগাড়ীর দুই আদিবাসী কৃষকের মৃত্যু কিটনাশক পানেই হয়েছে। ময়না তদন্ত প্রতিবেদনে এই তথ্য উঠে এসেছে। রাজশাহী মেডিক্যাল কলেজের ফরেনসিক বিভাগের প্রধান ডা. কফিল উদ্দিন এই তথ্য নিশ্চিত করেছে। শনিবার তদন্ত প্রতিবেদন হস্তান্তরও করা হয়েছে বলে জানান তিনি।

গোদাগাড়ীর দু’জন আদিবাসি কৃষক অসুস্থ হন ২৩ মার্চ সন্ধ্যায়। তারা নিজেরাই পরিবারের সদস্যদের জানান যে. তারা বিষ খেয়েছেন। এর মধ্যে অভিনাথ মারান্ডি (৩৬) নামে একজন ঐ রাতেই বাড়িতে মারা যান। আর রাজশাহী মেডিক্যাল কলেজ (রামেক) হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় ২৫ মার্চ মারা যান তার চাচাতো ভাই রবি মারান্ডি (২৭)। দুই কৃষকেরই বাড়ি গোদাগাড়ীর দেওপাড়া ইউনিয়নের নিমঘুটু গ্রামে। অভিনাথ ও রবির পরিবারের পক্ষ থেকে দাবি করা হচ্ছে, অনেক ঘুরেও গভীর নলকূপ থেকে সেচের পানি পাচ্ছিলেন না তারা।

তাই ক্ষোভে ওই নলকূপের সামনেই দুজনে বিষ পান করেন। স্বামীর মৃত্যুর ঘটনায় অভিনাথের স্ত্রী রোজিনা হেমব্রম এবং রবির ভাই সুশিল মারান্ডি বাদি হয়ে গভীর নলকূপের অপারেটর সাখাওয়াত হোসেনের বিরুদ্ধে আলাদা দুটি মামলা করেছেন। গোদাগাড়ী থানায় আত্মহত্যা প্ররোচনার এই মামলার গ্রেপ্তার হয়েছেন অভিযুক্ত সাখাওয়াত। এরই মধ্যে তাকে নলকূপ অপারেটরের পদ থেকে অব্যাহতি দেয়া হয়েছে। কৃষি মন্ত্রনালয়ের একটি তদন্ত কমিটি এই ঘটনা তদন্ত করে এরই মধ্যে প্রতিবেদনও দাখিল করেছে।

তবে, মামলার তদন্তের গুরুত্বপূর্ণ জায়গা ছিলো ময়না তদন্ত প্রতিবেদন। মৃত্যুর কারণ নিশ্চিত হওয়ার জন্য পুলিশ ময়না তদন্ত প্রতিবেদনের অপেক্ষা করছিলো। শনিবার এই প্রতিবেদন দেয়া হয়েছে বলে নিশ্চিত করেছেন ফরেনসিক বিভাগের প্রধান ডা. কফিল উদ্দিন।

তিনি বলেন, ‘আমরা মৃতের শরীরের বিভিন্ন অঙ্গপ্রত্যঙ্গের নমুনা সংগ্রহ করেছিলাম। এরপর সেগুলো ভিসেরা রিপোর্ট প্রস্তুতের জন্য পাঠিয়ে দিয়েছিলাম ল্যাবে। ঐ ভিসেরা রিপোর্ট আমরা হাতে পাওয়ার পর চূড়ান্ত প্রতিবেদন তৈরী করি। ভিসেরা রিপোর্ট অনুযায়ী মৃত দুজনের শরীরে কিটনাশক বিষ পাওয়া গেছে। পরীক্ষায় আমরা অর্গানো ফসফরাস যৌগ নামে এক ধরনের কিটনাশক বিষ পাই। এই বিষপানেই তাদের মৃত্যু হয়েছে বলে আমরা চূড়ান্ত প্রতিবেদন দিয়েছি।

মামলার তদন্ত কর্মকর্তা এসআই মাহফুজুর রহমান জানিয়েছেন এই প্রতিবেদন আনতে তিনি লোক পাঠিয়েছিলেন। এখনো হাতে পাননি। তবে পেয়ে যাবেন। তিনি বলেন যেহেতু দুজনই মারা গেছেন একারণে এই মামলায় এখন গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হচ্ছে ময়না তদন্ত প্রতিবেদন। ময়না তদন্ত প্রতিবেদন পাওয়ার পরই মামলা কোন দিকে যাবে তা নিশ্চিত করে বলা যাবে। প্রতিবেদন যেহেতু হাতে আসছে এর পর মামলায় গতি পাবে বলেও মনে করেন তিনি।