ঢাকা | মে ১৩, ২০২৫ - ৪:০৫ অপরাহ্ন

আদালতে কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার ব্যবহারে প্রযুক্তিগত বৈষম্য ও পক্ষপাতের ঝুঁকি রয়েছে!

  • আপডেট: Wednesday, April 13, 2022 - 10:17 pm

সোনালী ডেস্ক : ফৌজদারি আদালতে কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার ব্যবহার কিভাবে বৈষম্য ও পক্ষপাতের ঝুঁকি বৃদ্ধি করে, এমন এক বিষয়ে আইন, বিচার, প্রযুক্তিনীতি ও নৈতিকতার এক আন্ত-বিষয়ক গবেষণা কর্ম সম্পন্ন করেছেন রাজশাহীর সহকারী জজ মো. আব্দুল মালেক। ফৌজদারি আদালতে প্রবেশন, জামিন এবং দণ্ডের পরিধি সংক্রান্ত সিদ্ধান্ত গ্রহণে যুক্তরাষ্ট্র ও মালয়েশিয়াসহ পৃথিবীর বিভিন্ন দেশের বিচার ব্যবস্থায় সহায়ক প্রযুক্তি হিসেবে কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা বা আর্টিফিসিয়াল ইন্টেলিজেন্স (এআই) বর্তমানে ব্যবহৃত হচ্ছে। কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা দ্বারা চালিত এমন প্রযুক্তির নানা ধরণের বৈষম্য ও পক্ষপাতমূলক প্রভাব বিষয়ক এ গবেষণা কর্মটি সম্প্রতি বিখ্যাত ‘Springer Nature’ এর ‘AI & Ethics’ নামক জার্নালে প্রকাশিত হয়েছে।

বিগডেটা, অ্যালগরিদম ও মেশিন লার্নিং এর ক্রমবর্ধনশীল অগ্রগতি আদালতে এ ধরণের উন্নত প্রযুক্তির ব্যবহারকে উল্লেখযোগ্য ভাবে প্রভাবিত করেছে। তবে, আদালতে কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার অ্যালগরিদম ব্যবহার করে অপরাধীর ভবিষ্যৎ সম্ভব্য বিপজ্জনকতার ঝুকি নিরূপণ করার এরূপ যান্ত্রিক ব্যবস্থা নিয়ে সারা দুনিয়ায় জোরালো বিতর্ক রয়েছে। মূলত, হালে প্রচলিত কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তায় চালিত রিস্ক আসেসমেন্ট মেশিনগুলোতে বিপুল পরিমান ডেটা ‘ইনপুট’ হিসেবে ব্যবহার করা হয়ে থাকে। এ বিচারক তার গবেষণায় দেখিয়েছেন, কি কি উপায়ে সমাজের বিদ্যমান পক্ষপাত ও বৈষম্যমূলক ডেটার মাধ্যমে স্বয়ংক্রিয় ভাবে যান্ত্রিক বৈষম্য নতুন রূপে আবির্ভাব হতে পারে।

অধস্তন আদালতের এই বিচারক দাবী করেন যে, যেহেতু বর্তমানে ফৌজদারি আদালতে ব্যবহৃত কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার সংস্করণটি প্রকৃতিগত ভাবেই পক্ষপাতমূলক ডেটা দিয়ে তৈরি ও প্রশিক্ষিত, সেহেতু বহুবিধ অভিনব পক্ষপাতসমূহ, যেমন প্রযুক্তিগত পক্ষপাত, ডেটাসেট পক্ষপাত, নমুনা পক্ষপাত, অটোমেশন পক্ষপাত, নিশ্চিতকরণ পক্ষপাত, প্রতিনিধিত্ব পক্ষপাত, এবং মিথস্ক্রিয়া পক্ষপাতের মত নেতিবাচক প্রভাব ফৌজদারি বিচার ব্যবস্থাকে আরো বৈষম্যমূলক ও পক্ষপাতদুষ্ট করে তুলবে। মজার ব্যাপার হচ্ছে, এরূপ অনাকাঙ্ক্ষিত পক্ষপাতসমূহ ফৌজদারি বিচার ব্যবস্থার প্রসাঙ্গিকতায় বিশেষ ভাবে অন্বেষণ এবং পরীক্ষা করেছেন এ বিচারক গবেষক।

ব্যক্তির অধিকার, বিচারিক মূল্যবোধ ও ন্যায্যতার উপর বিরূপ প্রভাব ফেলতে পারে বিধায় ফৌজদারি আদালতে এআই প্রযুক্তি অন্ধভাবে ব্যবহার না করার পরামর্শ দিয়েছেন রাজশাহীর এই বিচারক। এছাড়াও, আদালতের মত সংবেদনশীল প্রতিষ্ঠানে কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার মত উন্নত-প্রযুক্তি ব্যবহারের দরুন সৃষ্ট সম্যসার সমাধানের সম্ভাব্য উপায় যুক্তিসহ উপস্থাপন করা হয়েছে এ গবেষণা পত্রে। এই ধরনের সময়োপযোগী ও ভিন্নধর্মী গবেষণা লব্দ জ্ঞান বাংলাদেশের বিচার ব্যবস্থায় কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা ব্যহহারের সিদ্ধান্ত গ্রহণের ক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ ও ফলপ্রসূ প্রভাব ফেলবে বলে আশা করা হচ্ছে। অধিকন্তু, এ ধরনের প্রযুক্তির উন্নয়ন, ব্যবহার ও গবেষণা সহ বিচার প্রশাসনের নীতি নির্ধারণে কার্যকরি প্রভাব বিস্তার করার উপাদান অধস্তন আদালতের বিচারকের এই গবেষণা কর্মে রয়েছে মর্মে সংশ্লিষ্টরা মনে করেন।

প্রকাশিত গবেষণার জার্নালের লিঙ্ক 

Hi-performance fast WordPress hosting by FireVPS