ঢাকা | সেপ্টেম্বর ১৭, ২০২৪ - ১২:৪৯ পূর্বাহ্ন

বাগমারায় ভূমিহীনের বাড়ি ভেঙে জমি দখল

  • আপডেট: Thursday, April 7, 2022 - 9:49 pm

বাগমারা প্রতিনিধি: বাগমারায় ড্রেজার দিয়ে এক ভূমিহীনের পাকাবাড়ি ভেঙ্গে গুঁড়িয়ে দিয়ে জমি দখল করে নিয়েছেন প্রভাবশালী একটি মহল। এতে ভূমিহীন ওই পরিবার বসতবাড়ি হারিয়ে এখন আশ্রয়হীন হয়ে পড়েছেন।

বৃহস্পতিবার সরজমিনে ঘটনাস্থলে গিয়ে জানা গেছে, গোবিন্দপাড়া গ্রামের মেহের আলী তরফদারের কোনো জমিজমা না থাকায় প্রায় ৪২ বছর যাবৎ ভূমিহীন হিসাবে দামনাশ মৌজায় ৪ শতক সরকারি খাস জমিতে মাটির দেয়াল দিয়ে বসতবাড়ি নির্মাণ করে বসবাস করে আসছিলেন। সম্প্রতি মেহের আলীর মৃত্যুর পর তার ছেলে মাহাবুর রহমান মাটির দেয়াল সরিয়ে সেখানে দুইরুম বিশিষ্ট ইটদ্বারা পাকাবাড়ি নির্মাণ করেন।

বৃহস্পতিবার সকাল ১০ টার দিকে পার্শ্ববর্তী মান্দা উপজেলার কালিকাপুর ইউনিয়নের গোপালপুর গ্রামের প্রভাবশালী ইয়াছিন আলী ও মাষ্টার আব্দুল হাকিম ড্রেজার দিয়ে ভূমিহীন মাহাবুর রহমানের পাকাবাড়ি ভেঙ্গে গুঁড়িয়ে দিয়ে ওই খাসজমি দখল করে নেন। এ সময় মাহাবুর রহমান অসুস্থ হয়ে বাগমারা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি ছিলেন। সপ্তম শ্রেণীতে পড়ুয়া তাঁর এক মেয়ে খাদিজা খাতুন ছাড়া আর কেউই বাড়িতে ছিল না। খবর পেয়ে মাহাবুর রহমান হাসপাতাল থেকে বাড়িতে ছুটে আসেন। কিন্তু বাড়িতে এসে তিনি তাঁর বাড়িটি আর দেখতে না পেয়ে হাউমাউ করে কাঁদতে শুরু করেন।

এ সময় মাহাবুর রহমান কান্নার স্বরে বলতে থাকেন, তিনি একজন ভূমিহীন। তাঁর বাবাও ছিলেন ভূমিহীন। প্রায় ৪২ বছর যাবৎ এখানে বসবাস করছেন তাঁরা। কিন্তু কোনদিন কেউ কিছু বলেনি। এ সংক্রান্ত কোন নোটিশও তাঁকে দেয়া হয়নি। তিনি আরো বলেন, কোন প্রকার নোটিশ ছাড়াই তাঁর বাড়িটি ড্রেজার দিয়ে ভেঙ্গে মাটির সঙ্গে মিশিয়ে দেয়া হয়েছে। তিনি তাঁর সারাজীবনের আয় রোজগার দিয়ে বাড়িটি নির্মাণ করেছিলেন। কিন্তু তাঁর সেই বাড়িটি আজ আর নেই এটা তিনি ভাবতেই পারছেন না। বসতবাড়ি হারিয়ে বর্তমানে তিনি পরিবার পরিজন নিয়ে আশ্রয়হীন হয়ে পড়েছেন।

এদিকে পত্তনমূলে বিনিময় সূত্রে মালিক হিসাবে আদালতের রায়ের পর ভূমিহীন মাহাবুর রহমানের বাড়ি ড্রেজার দিয়ে ভেঙ্গে গুঁড়িয়ে খাসজমি দখল করা হয়েছে বলে দাবী করেছেন প্রভাবশালী ইয়াছিন আলী। লিখিত অভিযোগ পেলে তদন্ত সাপেক্ষে ব্যবস্থা নেয়া হবে বলে জানিয়েছেন বাগমারা উপজেলা নির্বাহী অফিসার ফারুক সুফিয়ান।