ঢাকা | জুলাই ২৬, ২০২৪ - ৭:০৭ অপরাহ্ন

‘উচিত শিক্ষা’ দিতে নায়ক সোহেলকে হত্যা করা হয়: র‌্যাব

  • আপডেট: Wednesday, April 6, 2022 - 8:08 pm

 

অনলাইন ডেস্ক: বনানীর ট্রাম্পস ক্লাবে চলত অনৈতিক কার্যক্রম ও উচ্চশব্দে গান-বাজনা। এরই প্রতিবাদ করেছিলেন চিত্রনায়ক সোহেল চৌধুরী। এই ঘটনায় আজিজ মোহাম্মদ ভাইয়ের সঙ্গেও বাক-বিতণ্ড হয় সোহেলের। প্রকাশ্যে অপমান করার প্রতিবাদে সোহেল চৌধুরীকে উচিত শিক্ষা দিতে ওই ক্লাবের স্বত্ত্বাধিকারী আশিষ রায় চৌধুরী ওরফে বোতল চৌধুরী ও আসাদুল ইসলাম ওরফে বান্টি ইসলামের যৌথ পরিকল্পনায় হত্যা করা হয় সোহেল চৌধুরীকে।

ওই হত্যা মামলার চার্জশিটভুক্ত আসামি আশিষ রায়কে গ্রেপ্তারের পর বুধবার দুপুরে রাজধানীর কারওয়ান বাজার র‌্যাব মিডিয়া সেন্টারে ব্রিফিংয়ে এ বিষয়ে বিস্তারিত জানান র‌্যাবের মুখপাত্র কমান্ডার খন্দকার আল মঈন।

তিনি বলেন, ২৪ জুলাই সোহেল চৌধুরীর সঙ্গে আজিজ মোহাম্মদ ভাইয়ের বাকবিতণ্ডা হয়। এর প্রতিশোধ নিতে সোহেলকে হত্যার সিদ্ধান্ত নেন আজিজ মোহাম্মদ ভাই। পরে সোহেলকে হত্যার জন্য তিনি তৎকালীন শীর্ষ সন্ত্রাসী ইমনকে দায়িত্ব দেন। ইমনসহ তার গ্যাং ১৯৯৮ সালের ১৮ ডিসেম্ববর রাতে বনানী ট্রাম্পস ক্লাবের সামনে গুলি করে হত্যা করে নায়ক সোহেল চৌধুরীকে। ওই ঘটনায় তার ভাই তৌহিদুল ইসলাম চৌধুরী বাদী হয়ে গুলশান থানায় বাদী হয়ে মামলা দায়ের করেন। যার মামলা নম্বর ৫৯।

আন্ডারওয়ার্ল্ড গ্যাং-সন্ত্রাসীর মিটিং হতো ট্রাম্পস ক্লাব

ট্রাম্পস ক্লাব ছিল অসামাজিক কার্যক্রমের আখড়া। ১৯৯৬ সালে বনানীর আবেদীন টাওয়ারে ৫০ লাখ টাকা খরচায় প্রতিষ্ঠা করা হয় ট্রাম্পস ক্লাব। এটির যৌথ স্বত্ত্বাধিকারি ছিলেন আশিষ রায় চৌধুরী এবং আসাদুল ইসলাম ওরফে বান্টি ইসলাম। ক্লাবটিতে বিভিন্ন বয়সীরা ভোর রাত পর্যন্ত নানাবিধ অসামাজিক কার্যকলাপে অংশ নিতেন।

প্রতিষ্ঠার পর থেকে আশিষ রায় ক্লাবে বিভিন্ন ধরনের অসামাজিক কার্যকলাপ চালিয়ে আসছিলেন। পরে ট্রাম্পস্ ক্লাবে আন্ডারওয়ার্ল্ড ডন এবং গ্যাং লিডারদের আনাগোনা বাড়ে ও আখড়ায় পরিণত হয়। সেখানে সবচেয়ে বেশি যাতায়াত ছিল আজিজ মোহাম্মদ ভাইয়ের। আজিজ মোহাম্মাদ ভাই ঢাকার আন্ডারওয়ার্ল্ডের চক্রগুলোর সঙ্গে বিভিন্ন ধরনের মিটিংয়ের জন্য সেই ক্লাবে নিয়মিত যাতায়াত করতেন। সেই সুবাদে ট্রাম্পস্ ক্লাবের মালিক বান্টি ইসলাম এবং আশিষ রায় চৌধুরীর সঙ্গে তার সখ্যতা তৈরি হয়। আজিজ মোহাম্মদ ভাইয়ের ভাতিজিকে বান্টি ইসলাম বিয়ে করার সুবাদে তাদের মধ্যে একটি আত্মীয়তার সম্পর্কও ছিল।

মঙ্গলবার রাত সাড়ে দশটার দিকে রাজধানীর গুলশানের পিংক সিটির পাশের ১০৭ নম্বর রোডের ২৫/বি বাড়িতে অভিযান শুরু করে র‌্যাব সদস্যরা। এসময় বিপুল পরিমাণ বিদেশি মদ, বিয়ার ও নেশা সরঞ্জাম উদ্ধার করা হয়। এর ঘন্টাখানেক আগে র‌্যাব সদস্যরা সেখানে অবস্থান নেয়। উদ্ধার করা মাদকের মধ্যে রয়েছে, ২২ বোতল বিদেশি বিভিন্ন ব্রাণ্ডের মদ, ১৪ ক্যান বিয়ার ও সিসা সরঞ্জাম, একটি আইপ্যাড, ১৬টি ব্যাংকের ক্রেডিট কার্ড, দুইটি আইফোন ও দুই লাখ টাকা। এছাড়া বাড়িতে থাকা দুই তরুণীকে আটক করা হয়। তাদের ব্যাপারে এখনো সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়নি।

জানা গেছে, গ্রেপ্তার আশিষ রায় ২০০৫ থেকে ২০১০ সাল পর্যন্ত একটি এয়ারলাইন্সের ডিরেক্টর(অপারেশন্স) হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। ২০১০ থেকে ২০১৩ পর্যন্ত তিনি আরেকটি এয়ারলাইন্সের গুরুত্বপূর্ণ পদে ছিলেন। ২০১৩ থেকে অদ্যাবধি তিনি স্বনামধন্য প্রতিষ্ঠানে এক্সিকিউটিভ ডিরেক্টর হিসেবে কর্মরত।