পাকিস্তানে রাজনৈতিক সংকটের পেছনে মূল খেলোয়াড় যারা
![](https://sonalisangbad.com/wp-content/uploads/2022/04/Untitled-1-copy-17.jpg)
অনলাইন ডেস্ক: রাশিয়া ইউক্রেনে আগ্রাসন শুরুর সময় মস্কো সফর করেন পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী ইমরান খান। হামলার জন্য রাশিয়ার নিন্দাও জানায়নি ইসলামাবাদ। এর পর ধীরে ধীরে পাকিস্তানের রাজনৈতিক পরিস্থিতি উত্তপ্ত হতে থাকে। বিরোধীরা ৮ মার্চ ইমরান খানের বিরুদ্ধে পার্লামেন্টে অনাস্থা প্রস্তাব আনে। যা ২৮ মার্চ আলোচনার জন্য উত্থাপিত হয়। পরে ৩ এপ্রিল ইমরান খানের বিরুদ্ধে আনা প্রস্তাব খারিজ করে দেন পার্লামেন্টের ডেপুটি স্পিকার কাসিম খান সুরি।
এ সময়ের মধ্যে ইমরান খান তাকে সরাতে বিদেশি ষড়যন্ত্রের কথা বারবার উল্লেখ করেছেন। তিনি বলেছেন, রাশিয়া সফরে যাওয়ার কারণে একটি ‘প্রভাবশালী’ দেশ পাকিস্তানের ওপর অসন্তুষ্ট হয়ে তাকে সরাতে চাইছে। কিন্তু ইমরান খান সব শঙ্কা উড়িয়ে দেশকে নিয়ে গেলেন আগাম নির্বাচনের দিকে।
হুট করে বদলে গেছে দেশটিতে রাজনৈতিক দৃশ্যপট। এ পরিবর্তনের পেছনে যেসব খেলোয়াড় গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছেন তাদের নিয়ে এএফপির বরাতে একটি প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে পাকিস্তানের সংবাদমাধ্যম জিও টিভি।
দেশটিতে রাজনৈতিক সংকটের পেছনে গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তিদের সংক্ষিপ্ত পরিচিতি
শেহবাজ শরিফ
পাকিস্তানের তিনবারের প্রধানমন্ত্রী নওয়াজ শরিফের ভাই শেহবাজ শরিফ। নওয়াজ শরিফ ব্রিটেনে নির্বাসিত এবং কখনও প্রধানমন্ত্রী পদে নির্বাচনে অংশ নিতে পারবেন না। যদি অনাস্থা ভোট সফল হতো তবে শাহবাজ ছিলেন ইমরানের স্থলাভিষিক্ত হওয়ার ক্ষেত্রে বিরোধীদের প্রধান মুখ।
৭০ বছর বয়সি প্রভাবশালী এ নেতা পাঞ্জাবের মুখ্যমন্ত্রী হিসেবে দায়িত্ব পালন করেছেন এবং তিনি বর্তমানে পিএমএল-এন পার্টির প্রেসিডেন্ট।
বহুবিবাহ ছাড়াও লন্ডন ও দুবাইতে তার বিশাল সম্পদ থাকার খবর ম্যাগাজিনে প্রকাশ হওয়ার পরও তার জনপ্রিয়তায় ধস নামেনি।
আসিফ আলি জারদারি
আসিফ আলি জারদারি সিন্ধু প্রদেশের এক ধনী পরিবারের সন্তান। বেনজির ভুট্টোকে বিয়ের আগে তিনি বিলাসবহুল জীবনযাপনের জন্য বিখ্যাত ছিলেন। বিয়ের পর প্রথমবারের মতো বেনজির ভুট্টো পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী নির্বাচিত হন।
এর পর আসিফ আলি জারদারি রাজনীতিতে নামেন। সরকারি চুক্তি থেকে অর্থ নেওয়ার অভিযোগে তাকে ‘মিস্টার টেন পারসেন্ট’ হিসেবে ডাকা হতো। এ ছাড়া দুর্নীতি, মাদক চোরাচালান ও হত্যার মতো অভিযোগ দুই বার জেলে গেছেন। যদিও তাকে কখনও বিচারের সম্মুখীন হতে হয়নি।
বেনজির ভুট্টো নিহত হওয়ার পর ৬৭ বছর বয়সি এ রাজনীতিবিদ ২০০৭ সালে পিপিপির কো-চেয়ারম্যান হন। পিএমএল-এন পার্টির সঙ্গে এক বছর পর ক্ষমতা ভাগাভাগির চুক্তির মাধ্যমে পাকিস্তানের প্রেসিডেন্ট হন।
বিলওয়াল ভুট্টো জারদারি
বেনজির ভুট্টো ও আসিফ আলি জারদারির সন্তান বিলওয়াল ভুট্টো জারদারি। বেনজির ভুট্টো নিহত হওয়ার পর মাত্র ১৯ বছর বয়সে তিনি পিপিপির চেয়ারম্যান হন।
অক্সফোর্ড থেকে পড়াশোনা করা ৩৩ বছর বয়সি বিলওয়ালকে মায়ের মতো প্রগতিশীল হিসেবে বিবেচনা করা হয়। তিনি নারী অধিকার ও সংখ্যালঘুদের অধিকার নিয়েও সরব।
সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে তিনি তরুণদের কাছে জনপ্রিয়। যদিও ঠিকমতো উর্দুতে কথা বলতে না পারার কারণে তাকে বিদ্রুপের শিকার হতে হয়।
মাওলানা ফজলুর রহমান
তিনি রাজনীতি শুরু করেছিলেন একজন কট্টরপন্থি হিসেবে। পরে প্রগতিশীল বাম ও ডানপন্থি দলের সঙ্গে জোট করলে তার অবস্থানে কিছুটা পরিবর্তন এসেছে বলে মনে করা হয়।
হাজার হাজার মাদরাসা শিক্ষার্থীকে অনুপ্রাণিত করার ক্ষমতা রয়েছে তার। তার দল জমিয়ত ওলামায়ে ইসলাম-(এফ) এর কখনও সরকার গঠন করার মতো সমর্থন ছিল না। কিন্তু যে কোনো সরকারের জন্য দলটি গুরুত্বপূর্ণ।
তার সঙ্গে ইমরান খানের শত্রুতা অত্যন্ত গভীরে নিহিত। ব্রিটন জেমিমা গোল্ডস্মিথকে বিয়ের কারণে ইমরান খানকে তিনি ‘ইহুদি’ হিসেবে অভিহিত করেন। অপরদিকে জ্বালানি লাইসেন্স সংক্রান্ত দুর্নীতিতে ফজলুর রহমানের সংশ্লিষ্টতার অভিযোগের কারণে ইমরান খান তাকে ‘মোল্লা ডিজেল’ হিসেবে ডাকেন।
সোনালী/জেআর