ঢাকা | জুন ২৬, ২০২৪ - ৭:১৩ পূর্বাহ্ন

শিরোনাম

চাঁপাইনবাবগঞ্জে তাপদাহে ঝরে পড়ছে আমের গুটি

  • আপডেট: Sunday, April 3, 2022 - 9:49 pm

চাঁপাইনবাবগঞ্জ ব্যুরো: চাঁপাইনবাবগঞ্জে বৈরী আবহাওয়ায় মুকুল বিপর্যয়ের পর এখন প্রচন্ড তাপদাহে ও বৃষ্টির অভাবে ঝড়ে পড়ছে আমের গুটি। এ অবস্থায় ফলন বিপর্যয়ের পাশাপাশি আমের ভবিষ্যৎ নিয়ে দুশ্চিন্তায় এ অঞ্চলের আমচাষি, বাগান মালিক ও ব্যবসায়ীরা। আর হতাশ না হয়ে বাগান মালিকদের আমগাছের গোড়ায় পানি সেচ, নিয়মিত পরিচর্যা ও বালাইনাশক প্রয়োগের পরামর্শ দিচ্ছেন ফল গবেষকরা।

জানা গেছে, চলতি আম মৌসুমের শুরুতে দুদফা বৃষ্টির কারণে বাগানে মুকুল কম আসা এবং মুকুল আসার পর মেঘলা আবহাওয়ায় গাছে মুকুল জ¦লে অনেকটা নষ্ট হয়। আর এবছর ৬০-৬৫ ভাগ ফলনের আশা নিয়ে বুক বেঁধেছিলো চাঁপাইনবাবগঞ্জের আমচাষিরা। কিন্তু কিছুদিন ধরে প্রচন্ড তাপদাহ অব্যাহত থাকায় ও বৃষ্টি না হওয়ায় ঝরে পড়ছে আমের গুটি। যদিও কেউ কেউ রাতদিন সেচ ও স্প্রে করে চেষ্টা করছেন আমগুলোকে বাঁচানোর। কিন্তু অধিকাংশ চাষিই পূঁজি এবং পানির অভাবে সেচ দিতে পারছেন না। তাকিয়ে আছেন আকাশের দিকে বৃষ্টির অপেক্ষায়।

ছত্রাজিতপুরের আমচাষি আমিনুল ইসলাম বলছেন, চলতি মৌসুমে বৈরী আবহাওয়ায় এমনিতেই আমবাগানে মুকুল এসেছে, তারপর আবার মেঘলা আবহাওয়া ও কুয়াশায় মহা (ছত্রাকনাশক রোগ) লেগে অনেক মুকুল নষ্ট হয়ে যায়। আর গুটি আসার পর প্রচন্ড তাপদাহে এবং বৃষ্টির অভাবে প্রতিটি আমবাগানে বিপুল পরিমান আমের গুটি ঝরে পড়েছে। সামনের দিনগুলোতে আরও কয়েকদিন এ আবহাওয়া অব্যাহত থাকলে আরও আমের গুটি ঝরে পড়ার আশংকা করছেন তারা। এ অবস্থায় চলতি মৌসুমে আমের ভবিষ্যৎ কি হবে? তা নিয়ে দুশ্চিন্তায় এ অঞ্চলের আম চাষিরা।

চাঁপাইনবাবগঞ্জ কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক কৃষিবিদ মোহাম্মদ নজরুল ইসলাম জানান, চলতি মৌসুমে জেলার ৩৮ হাজার হেক্টর জমির বাগানে ৩ লাখ ২৫ হাজার মেট্রিক টন আম উৎপাদনের লক্ষমাত্রা নির্ধারন করা হয়েছে। প্রতিকূল পরিস্থিতিতে এবার মুকুল আসতে কিছুটা দেরি এবং প্রচন্ড তাপদাহ ও বৃষ্টির অভাবে আমের গুটি ঝরে পড়ার বিষয়ে গাছের গোড়ায় পানির সেচ এবং বালাই ব্যবস্থাপনার পরামর্শ দেয়া হচ্ছে আমচাষীদের। তবে, বৈরী আবহাওয়ায় এবার ৬০ থেকে ৬৫ ভাগ গাছে মুকুল এসেছে। আর এখন প্রচন্ড খরার হাত থেকে আম রক্ষার্থে গাছের গোড়ায় সেচ দিলে এবং শেষ পর্যন্ত আবাহওয়া ভালো থাকলে ভালো ফলনের আশা কৃষি বিভাগের। আর এক্ষেত্রে আমচাষিদের পাশে থাকার আশ্বাস কৃষিবিভাগের এই কর্মকর্তার।

শিবগঞ্জ ম্যাংগো প্রডিউসার কো-অপারেটিভ সোসাইটির সাধারণ সম্পাদক ইসমাইল খান শামিম জানান, এ অবস্থায় জলবায়ুর বিরুপ প্রভাব মোকাবেলায় এবং আমের ভবিষ্যত নিশ্চিতে আগামীতে আমচাষিদের রক্ষায় সেচ ব্যবস্থাসহ সরকারি প্রনোদনার দাবি করেন।

চাঁপাইনবাবগঞ্জ আঞ্চলিক উদ্যাণতত্ত্ব গবেষণা কেন্দ্রের মূখ্য বৈজ্ঞানিক কর্মকতা ড. মোখলেসুর রহমান, চলতি তাপদাহ থেকে আমের গুটি ঝরে পড়া রোধে গাছের গোড়ায় পানি সেচ এবং বালাই ব্যবস্থাপনার কথা বলছেন তিনি।

এদিকে চাঁপাইনবাবগঞ্জ কৃষি অ্যাসোসিয়েশনের সাধারণ সম্পাদক মোঃ মুনজের আলম মানিক, সাম্প্রতিক বছরগুলোতে দেশব্যাপী আমের উৎপাদন বেড়ে যাওয়ায় অভ্যন্তরীন বাজারে নায্যমূল্য পাওয়া সম্ভব হচ্ছেনা, বলছেন সংশ্লিষ্টরা। এ অবস্থায় নায্যমূল্য নিশ্চিতে আমভিত্তিক কলকারখানা এবং আম থেকে বিকল্প পণ্য উৎপাদন ও প্রক্রিয়াজাতকরনের পাশাপাশি ব্যাংক ঋণের দাবি জানিয়েছেন আম সংগঠনের নেতারা।