বাজার সহনীয় আছে, রমজানেও থাকবে: সংসদে প্রধানমন্ত্রী

অনলাইন ডেস্ক: নিত্যপণ্যের মূল্যবৃদ্ধির কারণে নিম্নআয়ের মানুষের জন্য টিসিবির পণ্য ভর্তুকি মূল্যে বিক্রিসহ নানা উদ্যোগের কারণে বাজার সহনীয় পর্যায়ে এসেছে বলে দাবি করেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। আসছে রমজানেও বাজার সহনীয় থাকবে বলে সংসদে জানিয়েছেন তিনি।
শেখ হাসিনা বলেছেন, সরকারের বিভিন্ন কার্যক্রম গ্রহণের ফলে বাজারে দ্রব্যমূল্য সহনীয় পর্যায়ে রয়েছে এবং আশাকরি আসন্ন পবিত্র রমজান মাসেও নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যের মূল্য সহনীয় পর্যায়ে থাকবে।
বুধবার জাতীয় সংসদে ফখরুল ইমামের (ময়মনসিংহ-৮) এক প্রশ্নের জবাবে এ কথা বলেন সংসদ নেতা।
জাপার এই সংসদ সংসদ সদস্য বাজার নিয়ন্ত্রণ ও দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতি রোধে সরকারের পদক্ষেপের কথা জানতে চান।
জবাবে প্রধানমন্ত্রী বলেন, দেশের নিত্যপ্রয়োজনীয় সামগ্রীসহ সবধরনের পণ্যসামগ্রীর মূল্যের সাম্প্রতিক ঊর্ধ্বগতি নিয়ন্ত্রণপূর্বক তা সহনীয় পর্যায়ে রাখার লক্ষ্যে সরকার কার্যকরী ব্যবস্থা গ্রহণ করেছে।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, পবিত্র রমজান শুরুর আগে ও রজমানের মাঝামাঝি সময়ে দুই দফায় টিসিবির পণ্যসামগ্রী ভর্তুকি মূল্যে বিক্রির সিদ্ধান্ত হয়েছে। এই সিদ্ধান্ত অনুযায়ী জেলা ও উপজেলা প্রশাসনের তত্ত্বাবধানে নির্ধারিত মানদণ্ডের ভিত্তিতে টিসিবির পণ্য বিক্রি করা হবে।
সাম্প্রতিক সময়ে নিত্যপণ্যের ঊর্ধ্বগতি নিয়ন্ত্রণে ভোজ্যতেলের ভ্যাট প্রত্যাহার, বাজার মনিটরিং, ওএমএস, পণ্যের সরবরাহ নিশ্চিতকরণসহ নানা পদক্ষেপের কথা তুলে ধরেন প্রধানমন্ত্রী।
নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যের মূল্য নিয়মিত পর্যবেক্ষণ করে সে অনুযায়ী প্রতিবেদন নেয়া হয় বলে জানান শেখ হাসিনা।
তিনি বলেন, বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের গঠিত ‘দ্রব্যমূল্য পর্যালোচনা ও পূর্বাভাস সেল’ কর্তৃক প্রতিদিন বাংলাদেশ ব্যাংক, জাতীয় রাজস্ব বোর্ড, বাংলাদেশ ট্যারিফ কমিশন, টিসিবি ও কৃষিবিপণন অধিদপ্তর থেকে নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যের সরবরাহ ও মূল্য পরিস্থিতি সংক্রান্ত তথ্য সংগ্রহ করা হচ্ছে। নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যের আমদানি ও সরবরাহ অবস্থা পরীক্ষার জন্য বাংলাদেশ ব্যাংকের এলসির তথ্য সংগ্রহ করা হয়।
জাতীয় রাজস্ব বোর্ড থেকেও আমদানি তথ্য সংগ্রহ করা হয় জানিয়ে তিনি বলেন, এসব তথ্য বাংলাদেশ ট্যারিফ কমিশন ও বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ে পর্যালোচনা করে পণ্যভিত্তিক প্রয়োজনীয় কার্যক্রম গ্রহণ করা হচ্ছে। জেলা প্রশাসক ও উপজেলা নির্বাহী অফিসারদের নেতৃত্বে সব জেলা ও উপজেলায় নিত্যপ্রয়োজনীয় দ্রব্যমূল্য যৌক্তিক পর্যায়ে রাখার জন্য প্রতিমাসে জেলা টাস্কফোর্স কমিটির সভা অনুষ্ঠিত হয়। টাস্কফোর্স কমিটি জেলা ও উপজেলা বাজারে নিয়মিত মোবাইল কোর্ট পরিচালনাসহ আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করে থাকে।
বাংলাদেশ প্রতিযোগিতা কমিশনের কর্মকাণ্ডের কথা তুলে ধরে তিনি বলেন, নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যসহ সব পণ্যের মূল্য নিয়ে কেউ যেন মনোপলি বা অলিগোপলি অবস্থার সৃষ্টি করতে না পারে সে জন্য বাংলাদেশ প্রতিযোগিতা কমিশন সৃষ্টি করা হয়েছে। এ লক্ষ্যে বাংলাদেশ প্রতিযোগিতা কমিশনও কাজ করে যাচ্ছে। দেশীয় শিল্পকারখানার উৎপাদন স্বাভাবিক রাখাসহ উৎপাদিত পণ্যের সরবরাহ ও বিপণন স্বাভাবিক রাখতে স্টেকহোল্ডারদের সঙ্গে নিরবছিন্ন যোগাযোগের মাধ্যমে প্রয়োজনীয় কার্যক্রম গ্রহণ করা হচ্ছে। খাদ্যশস্যের বাজারদর নিয়ন্ত্রণ ও ঊর্ধ্বগতি রোধের লক্ষ্যে চালকল পর্যায়ে ধান মজুতের সর্বোচ্চ পরিমাণ দৈনিক আট ঘণ্টা হিসাবে পাক্ষিক ছাঁটাই ক্ষমতার পাঁচগুণের স্থলে তিনগুণে হ্রাস করা হয়েছে।
পাইকারি বাজারে মজুতদারি এবং বিভিন্ন চালকলে অতিরিক্ত চাল মজুতের মাধ্যমে কৃত্রিম সংকট সৃষ্টি বন্ধে ব্যবস্থা নেয়া হচ্ছে বলেও জানান শেখ হাসিনা।
শেখ হাসিনা বলেন, ‘১০০টি বৃহৎ আকারের চালকলের মিলগেটের মূল্য নিয়মিত সংগ্রহ করে ভোক্তা অধিকার কর্তৃপক্ষের মাধ্যমে অভিযান এবং কেউ অবৈধ মজুতের মাধ্যমে বাজারে যাতে কৃত্রিম সংকট সৃষ্টি করতে না পারে, সে লক্ষ্যে স্থানীয় প্রশাসনের সহায়তায় মোবাইল কোর্ট পরিচালনা করা হচ্ছে।