ইউক্রেন সংকটে দেশের অর্থনীতিতে অভিঘাত পড়তে যাচ্ছে: সংসদে অর্থমন্ত্রী
অনলাইন ডেস্ক: রাশিয়া ও ইউক্রেন যুদ্ধ বাংলাদেশের সামষ্টিক অর্থনীতির স্থিতিশীলতাকে এই মুহূর্তে বড় ধরনের ঝুঁকিতে ফেলবে না বলে জানিয়েছেন অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল। তবে তিনি বলেছেন, চলমান যুদ্ধ পরিস্থিতিতে সৃষ্ট সংকটে দেশের অর্থনীতিতে স্বল্প ও মধ্যমেয়াদে অভিঘাত পড়তে যাচ্ছে।
আজ সোমবার জাতীয় সংসদের প্রশ্নোত্তর পর্বে এ কথা বলেন অর্থমন্ত্রী। স্পিকার ড. শিরীন শারমিন চৌধুরীর সভাপতিত্বে অধিবেশনে প্রশ্নোত্তর টেবিলে উপস্থাপিত হয়।
ঢাকা-১০ আসনের সফিউল ইসলামের প্রশ্নের জবাবে অর্থমন্ত্রী বলেন, রাশিয়া-ইউক্রেন সংকটে বাংলাদেশের অর্থনীতিতে দীর্ঘমেয়াদে ফল কী হবে, তা এই যুদ্ধ ও উদ্ভূত সংকট কতটা প্রলম্বিত হবে তার ওপর নির্ভর করবে। আপাতদৃষ্টে মনে হচ্ছে, এটি দেশের অর্থনীতির ওপর প্রভাব ফেললেও সামষ্টিক অর্থনীতির স্থিতিশীলতাকে এ মুহূর্তে বড় ধরনের ঝুঁকিতে ফেলবে না।
ইউক্রেনে গত ২৪ ফেব্রুয়ারি বিশেষ সামরিক অভিযানের পর রাশিয়ার ওপর যুক্তরাষ্ট্র ও পশ্চিমা দেশগুলো অর্থনৈতিক ও নানা নিষেধাজ্ঞা আরোপ করে। যুদ্ধের ডামাঢোলে ইতিমধ্যে জ্বালানি তেল ও প্রাকৃতিক গ্যাসের বাজার অস্থিতিশীল হয়ে উঠেছে। বৈশ্বিক অর্থনীতির ওপর পড়েছে বিরূপ প্রভাব। বাংলাদেশেও এর প্রভাব পড়েছে।
এই সংকটে দেশে মূল্যস্ফীতিরও আশঙ্কা প্রকাশ করেন অর্থমন্ত্রী। বলেন, প্রাকৃতিক গ্যাস, অপরিশোধিত তেল, সার, গম, নিকেল, অ্যালুমিনিয়াম ও বৈদ্যুতিক পণ্যের গুরুত্বপূর্ণ কাঁচামাল, এর সঙ্গে সংশ্লিষ্ট ফিনিশ গুডসের মূল্য আবশ্যিকভাবে বাড়তে পারে। এ মূল্যবৃদ্ধি বৈশ্বিক মূল্যস্ফীতিতে প্রভাব ফেলবে। তেল-গ্যাসের দাম বাড়ার কারণে খাদ্যপণ্য, শিল্পের কাঁচামাল এবং আন্তর্জাতিক পরিবহন খরচ বেড়ে দেশে মূল্যস্ফীতি অনুভূত হতে পারে।
রাশিয়ায় বাংলাদেশের তৈরি পোশাক রপ্তানির অর্থ পরিশোধ নিয়ে জটিলতার কথা বলে আসছেন এই খাতের ব্যবসায়ীরা। এ বিষয়েও আশঙ্কা প্রকাশ করেন অর্থমন্ত্রী।
ঢাকা-১৮ আসনের সংসদ সদস্য মোহাম্মদ হাবিব হাসানের প্রশ্নের জবাবে অর্থমন্ত্রী জানান, চলতি অর্থবছরের প্রথম আট মাসে বিশ্বের বিভিন্ন উন্নয়ন সহযোগী দেশের সঙ্গে ২ হাজার ১৬২ মিলিয়ন মার্কিন ডলার ঋণচুক্তি স্বাক্ষরিত হয়েছে। এ সময়ে বর্তমান ও আগের চুক্তি থেকে ছাড় হয়েছে ২ হাজার ৮৫৪ মিলিয়ন মার্কিন ডলার।
ঢাকা-৪ আসনের সংসদ সদস্য সৈয়দ আবু হোসেন বাবলার প্রশ্নের জবাবে অর্থমন্ত্রী দেশের ক্রমাগত উচ্চ জিডিপি প্রবৃদ্ধি অর্জন কোভিড-১৯-এর প্রভাবে সাময়িকভাবে বাধাগ্রস্ত হয়েছে জানান। বলেন, ২০১৮-১৯ অর্থবছরে ৭ দশমিক ৮৮ শতাংশ প্রবৃদ্ধি অর্জিত হলেও গত অর্থবছরে তা কমে দাঁড়ায় ৬ দশমিক ৯৪ শতাংশ।
তবে করোনা প্রাদুর্ভাবের সঙ্গে সঙ্গে প্রধানমন্ত্রীর নেতৃত্ব, দূরদর্শিতা ও নিরলস কর্মতৎপরতায় দেশের সার্বিক অর্থনৈতিক পরিস্থিতি তেমন বিপর্যয়ের মধ্যে পড়েনি বলে জানান অর্থমন্ত্রী।