সিরাজগঞ্জে বিপন্ন ৩৪৫ প্রজাতির গাছ সংগ্রহে পলাশ
রফিকুল ইসলাম, সিরাজগঞ্জ থেকে: সিরাজগঞ্জের কামারখন্দে নিজের ৫ বিঘা জমিতে ৩৪৫ প্রজাতির দেশী-বিদেশী বিপন্ন গাছ সংগ্রহে রেখেছেন মাহবুব ইসলাম পলাশ নামে এক ব্যাংকার। ২০০০ সালে শখের বসে লেখাপড়ার পাশাপাশি বাড়ির আঙিনার বাগানে রোপন করেন বিভিন্ন দেশীয় জাতের গাছ।
সরেজমিনে তার বাগান গিয়ে দেখা গেছে, ২০১২ সালে বন বিভাগ থেকে ৪৫ প্রজাতির গাছ বিলুপ্ত ঘোষণা করা হলেও এর মধ্যে ৪৩টি গাছ রয়েছে পলাশের সংগ্রহে। সুন্দরবনের ১৬ প্রজাতির গাছ রয়েছে তার বাগানে। এর মধ্যে সুন্দরী, গড়ান, কাকড়া, পাইন অন্যতম। চাপালিশ, চিতরাশী, বান্দরহোলার মত মহাবিপন্ন বৃক্ষের সমাহার পলাশের বাগানে।
ঔষধি গাছের মধ্যে অনেক গাছ রয়েছে এ বাগানে। তার মধ্যে লালচিতা, ডোল সমুদ্র, হাস্তীবার্ণ অন্যতম। সিঁদুর গাছ, উত্তর আমেরিকার ফুলের গাছ তুষারশুভ্র স্যাম্বুকাস, জাপানীজ ফুলের গাছ ট্যাবাবুয়া, দেশীয় লাল পাতা লাইলি মজনু ফুলের গাছ পলাশের বাগানে। এছাড়াও চম্পা, বচি, বাঁশপাতা, দাইফুল, রিটা, বুধনীস, বল্লা, মনিরাজ, জুগলি, হরিনা, বাদা, বরুল, উদাল, রাতা, রতন, নাগলিংগম, আছর, ধুপ, আগর, তুনসহ নানান বিপন্ন গাছের সমাহার গড়েছেন মাহবুব পলাশ।
বৃক্ষপ্রেমী মাহবুব ইসলাম পলাশ বলেন, ‘খুব ছোট থেকে গাছ লাগানো আমার নেশা। এক সময় বিভিন্ন দেশীয় প্রজাতির গাছ রোপন করতাম। যখন দেখলাম আমাদের দেশের বিভিন্ন প্রজাতির গাছ হারিয়ে যাচ্ছে। তখন মনে করতাম গাছগুলো টিকিয়ে রাখা দরকার। সেই ইচ্ছা থেকেই লেখাপড়ার পাশাপাশি এলাকায় না থাকলেও মাঝে মধ্যে বিভিন্ন জায়গা বিশেষ করে পার্বত্য অঞ্চল থেকে বিপন্ন গাছগুলো সংগ্রহ করে রোপন করতে থাকি।’
পলাশ বলেন, ‘গাছের প্রতি যে ভালবাসা জন্মেছে, চাকরি জীবনেও বিপন্ন গাছ সংগ্রহ থেমে নেই। ২০০০ সাল থেকে আজ পর্যন্ত ৩৪৫ প্রজাতির বিপন্ন গাছ সংগ্রহ করছি। সংগৃহীত এসব গাছে আমার বাগান ভরে উঠেছে। প্রকৃত পক্ষে, গাছই আমাদের প্রকৃত বন্ধু। কেননা, বেঁচে থাকার প্রধান উপাদান অক্সিজেন আমরা গাছ থেকেই তা পেয়ে থাকি। তাই বেশি বেশি গাছ লাগিয়ে সবুজ দেশ গড়ার বিকল্প নেই।’
মাহবুব পলাশ কামারখন্দ উপজেলার ভদ্রঘাট ইউনিয়নের ভদ্রঘাট শেখ পাড়া গ্রামের অবসরপ্রাপ্ত ভূমি কর্মকর্তা আবুল আজাদ সেখের সন্তান। তিনি ২০০৪ সালে উপজেলার ভদ্রঘাট শামছুন মহসিন উচ বিদ্যালয় থেকে এসএসসি, ২০০৬ সালে রাজশাহীর শাহ মখদুম কলেজ থেকে এইচএসসি ও পরবর্তীত ঢাকার একটি বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় থেকে স্নাতক ও স্নাতকোত্তর ডিগ্রি অর্জন করেন। লেখাপড়া শেষে ২০১১ সালে ব্যাংক অফিসার পদে যোগদান করেন তিনি। বর্তমান তিনি ব্যাংকে কর্মরত আছেন।