২৫ মার্চ সাত হাজার লোককে হত্যার তথ্য সঠিক নয়: মোজাম্মেল হক
অনলাইন ডেস্ক: মুক্তিযুদ্ধ মন্ত্রী আ ক ম মোজাম্মেল হক বলেছেন, ‘২৫ মার্চ সাত হাজার লোককে হত্যা করা হয়েছিল বলে একটি আন্তর্জাতিক পত্রিকায় প্রকাশ করা হয়েছিল। কিন্তু এই তথ্যটি সঠিক নয়। ১৯৭১ সালের ২৫ মার্চ ন্যূনতম ২৫ হাজার লোককে হত্যা করা হয়েছিল।’
শুক্রবার সকালে রাজধানীর আগারগাঁওয়ের মুক্তিযুদ্ধ যাদুঘরে ‘বাংলাদেশ জেনোসাইড ইন ১৯৭১’ শীর্ষক সেমিনারে মন্ত্রী এ কথা বলেন।
আ ক ম মোজাম্মেল হক বলেন, ‘এক রাতে বিশ্ববিদ্যালয়ে, কমলাপুরে ট্রেনের যাত্রীদের, সদরঘাটে লঞ্চের যাত্রীদের, বস্তিবাসী, মহিলা শিশু এবং ঘুমন্ত মানুষদের হত্যা করা হয়েছিল। অপারেশন সার্চ লাইটের নামে এক রাতে কসাই ব্রিগেডিয়ার জাহান জেব এই হত্যাকাণ্ড চালায়।’
বর্তমান প্রেক্ষাপট উল্লেখ করে মোজাম্মেল হক বলেন, ‘রোহিঙ্গাদের নির্বিচারে হত্যা করা হচ্ছে। একাত্তরের শরণার্থীদের মতোই এসব মানুষ বাংলাদেশে আশ্রয় নিয়েছে। কিন্তু এত মানুষের দায়িত্ব বাংলাদেশ কীভাবে বহন করবে? যারা হত্যা করছে তাদের কি কোনোভাবেই জবাবদিহির আওতায় আনা হবে না? এসব মানুষকে নিজ ভূমিতে ফেরত পাঠানোর সঙ্গে সঙ্গে নাগরিক অধিকার ফিরিয়ে দিতে হবে। হারানো সব সম্পদ ফিরিয়ে দিতে হবে।’
সর্বসম্মতিক্রমে জাতীয় সংসদে ২৫ মার্চকে ‘আন্তর্জাতিক গণহত্যা দিবস’ হিসেবে পালনের জন্য স্বীকৃতি অর্জনের সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়েছে বলে জানিয়ে মন্ত্রী বলেন, বর্তমানে ৯ ডিসেম্বর আন্তর্জাতিক গণহত্যা দিবস হিসেবে পালন করা হয়। একুশে ফেব্রুয়ারি যেমন আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস হিসেবে পালন করা হয়। এর প্রেক্ষাপট হচ্ছে এ দিন আমরা মাতৃভাষার জন্য জীবন দিয়েছি। কিন্তু ৯ ডিসেম্বর বিশ্বের কোথাও এমন কোনো ঘটনা ঘটেনি যে আন্তর্জাতিক গণহত্যা দিবস হিসেবে পালন করা হবে।
মোজাম্মেল হক বলেন, ‘আমাদের দাবি হচ্ছে, ৯ ডিসেম্বরের পরিবর্তে ২৫ মার্চকে বিশ্ব গণহত্যা দিবস হিসেবে পালন করা হোক। কারণ ১৯৭১ সালের ২৫ মার্চ বাংলাদেশে যে হত্যাকাণ্ড হয়েছে, এক রাতে কয়েক ঘণ্টার মধ্যে এত ব্যাপকসংখ্যক মানুষ আর কোথাও হত্যা করা হয়নি। এ জন্য এটা গণহত্যা দিবস হিসেবে স্বীকৃতি পেতে পারে।’
আন্তর্জাতিক গণহত্যা দিবস স্বীকৃতি অর্জনের চেষ্টা অব্যাহত রয়েছে জানিয়ে মোজাম্মেল বলেন, ২৫ মার্চ আন্তর্জাতিক গণহত্যা দিবস পালনের স্বীকৃতি অর্জনের জন্য আমাদের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় এবং বিদেশে অবস্থানরত বাংলাদেশি দূতাবাসের মাধ্যমে চেষ্টা অব্যাহত রয়েছে। সমস্যা হলো একটা দিবস পরিবর্তনের জন্য জাতিসংঘে ভোটের প্রয়োজন হয়। আমরা আশা করছি বাংলাদেশে যে গণহত্যা হয়েছে, তার আন্তর্জাতিক স্বীকৃতি আমরা পাবো।
অনুষ্ঠানে আরও উপস্থিত ছিলেন পররাষ্ট্র মন্ত্রী ড. এ. কে আব্দুল মোমেন, জেনোসাইড ওয়াচের প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি প্রফেসর গ্রীগোরি স্টেনস্টোন প্রমুখ।