ঢাকা | মে ১৮, ২০২৪ - ১১:২২ অপরাহ্ন

ধর্ষণের পর হত্যা করে দাফনেও অংশগ্রহণ করে লতিফ

  • আপডেট: Friday, March 25, 2022 - 5:42 pm

অনলাইন ডেস্ক: চাঞ্চল্যকর ও ক্লুলেস বগুড়ার একজন সংরক্ষিত মহিলা ইউপি সদস্য হত্যাকান্ডের ঘটনায় হত্যাকারী আবদুল লতিফ শেখকে মুন্সিগঞ্জ সদর থেকে গ্রেপ্তার করেছে র‍্যাব।

র‍্যাব বলছে, ইউনিয়ন পরিষদে কম্বল বিতরণের একটি অনুষ্ঠানে ভিকটিমের সাথে পরিচয় হয় আব্দুল লতিফের। এরপর অনেকবার দেখাও হয়। ঘটনার দিন একটি ইট ভাটার পাশে ভিকটিমকে নির্জন স্থানে নিয়ে লতিফ তার ইচ্ছার বিরুদ্ধে জোরপূর্বক ধর্ষণ করে। ভিকটিম ধর্ষণের বিষয়টি পরিবার এবং আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীকে জানিয়ে দিলে লতিফকে জেলে যেতে হতে পারে এই আশংকা থেকে সে ভিকটিমের গলায় ওড়না পেঁচিয়ে তাকে শ্বাসরুদ্ধ করে হত্যা করে মৃতদেহটি একটি ইটভাটার পাশে রেখে পালিয়ে যায়। নিজেকে সন্দেহের উর্দ্ধে রাখতে ভিকটিমের দাফন কার্যে অংশগ্রহণ করে এবং ভিকটিমের পরিবারের সাথে সু-সম্পর্ক বজায় রাখে।

বৃহস্পতিবার রাতে র‍্যাব-১২ এর অভিযানে মুন্সিগঞ্জ থেকে উক্ত হত্যাকান্ডের ঘটনার হত্যাকারী মো. আব্দুল লতিফ শেখকে (৬০) গ্রেপ্তার করা হয়।

শুক্রবার দুপুরে রাজধানীর কারওয়ান বাজার র‍্যাব মিডিয়া সেন্টারে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে এসব তথ্য জানান র‍্যাব সদরদপ্তরের লিগ্যাল অ্যান্ড মিডিয়া উইং পরিচালক কমান্ডার খন্দকার আল মঈন।

র‍্যাব জানায়, ওই ঘটনায় ভিকটিমের ভাই বাদী হয়ে গত ২৩ সেপ্টেম্বর বগুড়ার ধুনট থানায় অজ্ঞাতনামা আসামী করে একটি মামলা করে। যার মামলা নম্বর-১০। বর্ণিত হত্যাকান্ডটি দেশব্যাপী ব্যাপক চাঞ্চল্যের সৃষ্টি করে। ফলশ্রুতিতে র‍্যাব হত্যাকান্ডে জড়িতদের আইনের আওতায় নিয়ে আসতে গোয়েন্দা নজরদারী বৃদ্ধি করে।

গ্রেপ্তারক্ররতকে প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে খন্দকার আল মঈন জানায়, হত্যাকান্ডের প্রায় ৭ মাস আগে ইউনিয়ন পরিষদে কম্বল বিতরণের একটি অনুষ্ঠানে ভিকটিমের সাথে তার পরিচয় হয়। পরবর্তীতে ভিকটিমের সাথে গ্রেপ্তার লতিফ ঘনিষ্ঠতার চেষ্টা করে। এসময় তারা ইউনিয়ন পরিষদ ও আশেপাশের এলাকায় বিভিন্ন সময় সাক্ষাত করে।

তিনি বলেন, গত বছরের ১৮ সেপ্টেম্বর গ্রেপ্তার হওয়া লতিফ কৌশলে ভিকটিমকে ধুনটের মথুরাপুর এলাকার একটি ইট ভাটার পাশে নির্জন স্থানে নিয়ে যায়। সেখানে আলাপ চারিতার কৌশলে ভিকটিমকে পানীয়ের সাথে মিশিয়ে চেতনানাশক ঔষধ খাইয়ে ধর্ষণের চেষ্টা করে। এসময় ভিকটিম তাকে বাঁধা দেয়। একপর্যায়ে গ্রেপ্তার লতিফ তার ইচ্ছার বিরুদ্ধে ভিকটিমকে জোরপূর্বক ধর্ষণ করে।

র‍্যাব মুখপাত্র বলেন, পরবর্তীতে ভিকটিম ধর্ষণের বিষয়টি পরিবার এবং আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীকে জানিয়ে দিলে লতিফকে কারাভোগ করতে হতে পারে এই আশংকা থেকে সে ভিকটিমের গলায় ওড়না পেঁচিয়ে তাকে শ্বাসরুদ্ধ করে হত্যা করে মৃতদেহটি একটি ইটভাটার পাশে রেখে পালিয়ে যায়।

খন্দকার আল মঈন আরও জানান, নিজেকে সন্দেহের উর্দ্ধে রাখতে সে কৌশলে মৃতদেহটি উদ্ধার কাজে স্থানীয়দের সহায়তা করে পরবর্তীতে ভিকটিমের দাফন কার্যে অংশগ্রহণ করে এবং ভিকটিমের পরিবারের সাথে সু-সম্পর্ক বজায় রাখে। পরবর্তীতে আইন-শৃঙ্খলা বাহিনী কর্তৃক গ্রেপ্তার হতে পারে এই আশংকা থেকে সে তার নিজ এলাকা ত্যাগ করে প্রথমে ছদ্মবেশী শ্রমিক হিসেবে নোয়াখালীতে কিছুদিন কাজ করে পরবর্তীতে মুন্সিগঞ্জে আত্মগোপন করে।

র‍্যাবের এই কর্মকর্তা বলেন, গ্রেপ্তার লতিফ ছোটবেলা থেকে ফার্নিচার তৈরীর কাজ করত। পরবর্তীতে সে তার নিজের বাড়িতেই কর্মচারী রেখে ফার্নিচার তৈরী করে তা বিক্রি করত। গ্রেপ্তার লতিফের বিরুদ্ধে ২০০৯ সালে বগুড়াতে একটি ধর্ষণ মামলা রয়েছে এবং এ মামলায় সে ৭ মাস কারাভোগ করেছে। বর্তমানে উক্ত ধর্ষণ মামলা চলমান রয়েছে বলে গ্রেপ্তার জানায়।

গ্রেপ্তার আসামীর বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা প্রক্রিয়াধীন বলেও জানান র‍্যাবের এই কর্মকর্তা।

সোনালী/জেআর