স্বাধীনতা পুরস্কারে আমির হামজার মনোনয়ন খতিয়ে দেখবে সরকার
অনলাইন ডেস্ক: এ বছর সাহিত্যে স্বাধীনতা পুরস্কারের জন্য মনোনীত প্রয়াত মুক্তিযোদ্ধা মো. আমির হামজার মনোনয়ন প্রক্রিয়া পর্যালোচনার সিদ্ধান্ত নিয়েছে সরকার। খতিয়ে দেখার পর এ বিষয়ে পরবর্তী সিদ্ধান্ত নেওয়া হতে পারে। সেক্ষেত্রে পুরস্কারের তালিকা থেকে বাদও পড়তে পারেন আমির হামজা।
আমির হামজার সাহিত্যকর্ম নিয়ে সমালোচনা ও ৪৪ বছর আগে একটি খুনের মামলায় আসামি হয়ে তিনি সাজা ভোগ করেছিলেন-গণমাধ্যমে এমন খবর প্রকাশের পর পর্যালোচনার সিদ্ধান্তের কথা জানিয়েছেন মুক্তিযোদ্ধামন্ত্রী আ ক ম মোজাম্মেল হক।
এর আগে ২০২০ সালে সাহিত্যে স্বাধীনতা পুরস্কারের জন্য এস এম রইজ উদ্দিনকে মনোনীত করে সরকার। কিন্তু এ নিয়ে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ব্যাপক সমালোচনা হলে রইজ উদ্দিনকে আর পুরস্কার দেয়নি সরকার।
গত মঙ্গলবার এবারের স্বাধীনতা পুরস্কারের জন্য ১০ জন বিশিষ্ট ব্যক্তি ও একটি প্রতিষ্ঠানের নাম প্রকাশ করে মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ। সেই তালিকায় ছিল আমির হামজার নাম। এই তালিকা প্রকাশের পর থেকেই আমির হামজাকে নিয়ে ব্যাপক আলোচনা-সমালোচনা শুরু হয়। এর মাঝেই একটি গণমাধ্যমে তার খুন ও সাজাভোগের বিষয়টি প্রকাশ পায়, যা আমির হামজার মনোয়নন প্রক্রিয়ার বিষয়টিকে আরও বেশি প্রশ্নবিদ্ধ করে।
কোনো ব্যক্তি বা প্রতিষ্ঠানকে রাষ্ট্রের সর্বোচ্চ পুরস্কার স্বাধীনতা পুরস্কারের জন্য মনোনীত করতে প্রস্তাবিত তালিকা প্রথমে সরকারি কর্মকর্তাদের নিয়ে গঠিত সচিব কমিটিতে যাচাই-বাছাই হয়। পরে জাতীয় পুরস্কার সংক্রান্ত মন্ত্রিসভা কমিটি মনোনীতদের তালিকা চূড়ান্ত করে। মুক্তিযুদ্ধবিষয়কমন্ত্রী আ ক ম মোজাম্মেল হক এই কমিটির আহ্বায়ক।
আমির হামজার মনোনয়ন নিয়ে প্রশ্ন ওঠার পর বিষয়টি খতিয়ে দেখা হবে জানিয়ে বৃহস্পতিবার মোজাম্মেল হক বলেন, ‘তার বিষয়ে আমরা এখনো নতুন করে কোনো সিদ্ধান্ত নিইনি। তবে তার কী কী সাহিত্যকর্ম আছে না আছে আমরা তা খতিয়ে দেখছি। তার পক্ষে যেসব তথ্য-উপাত্ত কমিটিতে জমা দেওয়া হয়েছিল, সেগুলো যাচাই করা হবে। মার্ডারের (হত্যা) বিষয়ও এখন উঠে এসেছে, সেটিও খতিয়ে দেখা হচ্ছে।’
আমির হামজা ২০১৯ সালের ২৩ জানুয়ারি মারা যান ৮৭ বছর বয়সে। তার তিনটি বই প্রকাশিত হওয়ার তথ্য পাওয়া গেছে। ২০১৮ সালে মাগুরার শ্রীপুরের সারথি ফাউন্ডেশন ‘বাঘের থাবা’, বাঘের থাবা বইয়ের গানের অংশ নিয়ে ২০১৯ সালের ২৩ জানুয়ারি ‘পৃথিবীর মানচিত্রে একটি মুজিব তুমি’ এবং ‘একুশের পাঁচালি’ নামে আমির হামজার বই প্রকাশিত হয়েছে।
আমির হামজার ছেলে মো. আসাদুজ্জামান সরকারের উপসচিব। জানা গেছে, তিনি তার বাবার নাম এবারের স্বাধীনতা পুরস্কারের জন্য প্রস্তাব করেছিলেন। বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের জ্যেষ্ঠ সচিব তপন কান্তি ঘোষ সেই প্রস্তাবে সুপারিশ করেন।
গণমাধ্যমে প্রকাশিত খবর অনুযায়ী আমির হামজা ১৯৭৮ সালে মো. শাহাদাত হোসেন ফকির নামে এক ব্যক্তিকে খুনের ঘটনায় যাবজ্জীবন দণ্ডপ্রাপ্ত আসামি ছিলেন। ওই ঘটনায় আমির হামজা ও তার ভাইসহ ছয়জনের কারাদণ্ড হয়। আট বছর জেল খেটে ১৯৯১ সালে ছাড়া পান তিনি।