ঢাকা | ডিসেম্বর ২১, ২০২৪ - ৮:১৬ অপরাহ্ন

ধান-গম, সবজি খেতের ইদুঁর তাড়াতে পলিথিন

  • আপডেট: Thursday, March 17, 2022 - 10:49 pm

 

এম এম মামুন, মোহনপুর থেকে: রাজশাহী অঞ্চলে মাঠজুড়ে শোভা পাচ্ছে বোরো ধান ও গম। কৃষকরা দিনরাত পরিশ্রম করছেন ফসলের খেতে। রাজশাহীর বিভিন্ন উপজেলার অনেক কৃষক ধান, গম ও সবজির খেতে পাখি ও ইঁদুর থেকে ফসল রক্ষা করার জন্য ব্যবহার করছেন নিষিদ্ধ পলিথিন। এতে ফসল রক্ষা হলেও ক্ষতিগ্রস্থ হচ্ছে ফসলি জমির। জমির উর্বরতা শক্তি দিন দিন নষ্ট হচ্ছে।

রাজশাহী জেলার বিভিন্ন উপজেলায় ফসলি জমিতে বাঁশ ও কাঠের সাহায্যে নিষিদ্ধ পলিথিনের এমন দৃশ্য দেখা গেছে। দূর থেকে মনে হচ্ছিল বাঁশের উপর সাদা বক বসে আছে। কৃষকদের সাথে কথা বলে জানা যায়, ধান রোপণের পর খেতে পাখি বসে ধানের চারা নষ্ট করে ফেলে। এ জন্য জমিতে পলিথিন বেঁধে দেয়া হয়েছে, যাতে পাখি ভয়ে না বসে।

কৃষকরা জানান, বক, শালিক, মাছরাঙাসহ বিভিন্ন প্রজাতির পাখি ধানের জমিতে বসে ধানের চারা নষ্ট করে ফেলে। আবার অনেক জমিতে এখন গম পরিপক্ব হচ্ছে। ইঁদুর গমের দানা খেয়ে ফেলছে। এ জন্য তাঁরা পলিথিন টাঙিয়ে রোধ করার চেষ্টা করছে।

কৃষিবিদরা বলছেন, পলিথিন এমন একটি পদার্থ, যা মাটির সাথে মিশতে শত শত বছর সময় লাগে। এটি মাটির অভ্যন্তরে গেলেও নষ্ট হয় না বা মিশে যায় না। পলিথিন পরিবেশের জন্য ক্ষতিকর। জমির উর্বরতা শক্তি তাড়াতাড়ি নষ্ট করে।

মোহনপুর উপজেলাতেও একই পদ্ধতি দেখা গেছে। উপজেলার আত্রাই বেলনা এলাকার নজরুল ইসলাম ও আব্দুস সালাম নামের কৃষক বলেন, ‘পাখির অত্যাচারে খেতে পলিথিন দিয়েছি।’ পলিথিন তো খুবই ক্ষতিকারক, তবু কেন ব্যবহার করছেন, এমন প্রশ্নের জবাবে তারা বলেন, ‘এ বিষয়ে তো কেউ আমাদেরকে বলেনি।

আলী হাসান নামের আরেক কৃষক বলেন, ‘অনেক কষ্ট করে জমিতে গম করেছি। অথচ ইঁদুর খেয়ে ফেলছে। এ জন্য বাধ্য হয়ে পলিথিন টাঙিয়েছি। বাতাসের সঙ্গে পলিথিন উড়লে শব্দের সৃষ্টি হয়। তখন ইঁদুর পালিয়ে যায়। এতে ভালো ফল পাচ্ছি, তবে পলিথিন জমির ক্ষতি করবে, এটা জানতাম না।’ তবে গম কাটার পর জমি থেকে নিষিদ্ধ পলিথিন তুলে ফেলে দিব।

মোহনপুর উপজেলা সিনিয়র কৃষি কর্মকর্তা রহিমা খাতুন বলেন, ‘ফসলি জমিতে ক্ষতিকর পলিথিন ব্যবহার সম্পূর্ণ নিষেধ। পাখি বসার জন্য জমিতে কাঠ ও বাঁশের লাঠি পুঁতে পাখি বসার ব্যবস্থা করতে হবে। পাখি ক্ষতিকর পোকামাকড় খেয়ে ফসল ভালো রাখে। গ্রাম অঞ্চলে পাখি ও ইঁদুরের পরিমাণ বেশি থাকায় পলিথিন বেঁধে দেওয়া হয়েছে বলে শুনেছি। এটা করা যাবে না। বিষয়টি নিয়ে দ্রুত সময়ের মধ্যে কৃষকদের সচেতন করা হবে।’

রাজশাহী পরিবেশ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক মাহমুদা পারভীন বলেন, নিষিদ্ধ পলিথিন ফসলি জমিতে ব্যবহারের ফলে জমির উর্বরতা শক্তি নষ্টের পাশাপাশি পরিবেশের ওপর বিরূপ প্রভাব পড়ে। কারণ, পলিথিন সহজে মাটির সাথে মেশে না। তাই এ বিষয়ে কৃষকদের সচেতন করা উচিত।