ঢাকা | নভেম্বর ২৫, ২০২৪ - ৫:২৮ অপরাহ্ন

আ.লীগে অনুপ্রবেশ ঠেকানোর উদ্যোগ থেমে গেল!

  • আপডেট: Thursday, March 17, 2022 - 11:15 pm

স্টাফ রিপোর্টার: পর পর তিন মেয়াদে রাষ্ট্র ক্ষমতায় আওয়ামী লীগ। এই সময়ে ভিন্ন দল থেকে এসে আওয়ামী লীগের পদ-পদবী বাগিয়ে নেওয়ার প্রতিযোগিতা চলছে সারাদেশেই। এ ব্যাপারে কঠোর দলের সভানেত্রী ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। অনুপ্রবেশকারীদের ঠেকাতে তিনি মাঝে মাঝেই দলীয় নেতাদের নির্দেশনা দিয়ে থাকেন। তবুও অনুপ্রবেশ ঠেকানো যায় না।

আগামী ২৭ মার্চ রাজশাহী মহানগরীর চার থানা আওয়ামী লীগের সম্মেলন। এই সম্মেলনে পদ-পদবী পেতে সক্রিয় অনেকেই। এতে অনুপ্রবেশ ঠেকাতে একটি উদ্যোগ নিয়েছিল মহানগর আওয়ামী লীগ। কিন্তু সেই উদ্যোগ মাঝপথে থেমে গেছে। সম্মেলনের আগে নির্ধারিত ফরমে সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক প্রার্থীদের জীবন বৃত্তান্ত গ্রহণের সিদ্ধান্ত হয়েছিল। এই ফরমটি পূরণ করলে আগ্রহী প্রার্থী কিংবা তার পরিবারের অন্য কোন সদস্য অতীতে ভিন্ন কোন রাজনৈতিক দলের সঙ্গে সম্পৃক্ত ছিলেন কি না তা জানা যেত।

নগর আওয়ামী লীগের কার্যনির্বাহী কমিটি এই ফরম ছাড়ার সিদ্ধান্ত নিলেও রহস্যজনক কারণে পরে আর ছাড়া হয়নি। প্রেস থেকে এক হাজার ফরম ছাপানোর পরও এই সিদ্ধান্ত স্থগিত করে দেওয়া হয়েছে। কেন এই সিদ্ধান্ত স্থগিত হলো তা নিয়ে স্পষ্টভাবে দলীয় নেতারা মুখ খুলছেন না। তবে ফরম না ছাড়তে পারায় আক্ষেপ প্রকাশ করছেন কেউ কেউ।

‘রাজনৈতিক জীবন বৃত্তান্ত’ নামের আলোচিত এই ফরমের একটি পাওয়া গেছে। এতে দেখা গেছে, প্রথমেই জানতে চাওয়া হয়েছে প্রার্থী কত সাল থেকে আওয়ামী লীগের রাজনীতির সঙ্গে যুক্ত। তারপর জানতে চাওয়া হয়েছে প্রার্থী আওয়ামী লীগের কোন সহযোগী সংগঠনে ছিলেন কি না। তিন নম্বরে আছে আওয়ামী লীগের আগে তিনি অন্য কোন রাজনৈতিক দল করেছেন কি না। তারপর পরিবারের কোন সদস্য আওয়ামী লীগ বা সহযোগী সংগঠন করে থাকলে তার তথ্য চাওয়া হয়েছে। ক্রমিকের ৫ নম্বরে পরিবারের সদস্য অন্য কোন দল করে থাকলে তার নাম, দলের নাম এবং দলীয় পদবীও উল্লেখ করতে বলা হয়। প্রার্থীর নামে কোন মামলা আছে কি না, আওয়ামী লীগ সম্পর্কে তার মূল্যায়ন কি, প্রস্তাবকারী এবং সমর্থনকারীদেরও নাম ওই ফরমে লেখার জায়গা রাখা হয়।

দলীয় সূত্রে জানা গেছে, দলে অনুপ্রবেশ ঠেকাতে নগর আওয়ামী লীগের কার্যনির্বাহী কমিটি সম্প্রতি এই ফরম প্রার্থীদের দেওয়ার সিদ্ধান্ত নেয়। আগামী ২৭ মার্চ মহানগরের অন্তর্গত থানা এবং রমজান মাসের মধ্যে সাংগঠনিক ওয়ার্ড কমিটিগুলোর সম্মেলনকে লক্ষ্য রেখে এক হাজার কপি ফরম ছাপাও হয়। কিন্তু ফরমটি প্রকাশ পাওয়ার পর এ নিয়ে অনেকেই বিরোধীতা করেন। ফলে সম্মেলনের আগে এই ফরম দেওয়ার সিদ্ধান্ত স্থগিত করে দিতে হয়।

মহানগর আওয়ামী লীগের এক নেতা নাম না প্রকাশের অনুরোধ জানিয়ে বলেন, এই ফরমে তথ্য নেওয়ার পর নেতা নির্বাচন করা হলে দলে কোন অনুপ্রবেশকারী ঢুকতে পারতেন না। মহানগর আওয়ামী লীগ উদ্যোগ নিয়েও এ সিদ্ধান্ত বাস্তবায়ন করতে পারল না।

এ বিষয়ে জানতে চাইলে নগর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ডাবলু সরকার বলেন, দলের সভানেত্রী বার বার বলেছেন সম্মেলনে যেন কোন অনুপ্রবেশকারী পদে আসতে না পারে। সে কারণেই মহানগর আওয়ামী লীগের কার্যনির্বাহী কমিটি এই ফরম ছাড়ার সিদ্ধান্ত নেয়। কারণ, অনেকেই আগে আওয়ামী লীগ না করলেও কারও কারও ভালবাসা কিংবা আশির্বাদে সম্মেলনে নেতা হতে চাইবে। এটা এই ফরমের মাধ্যমেই ঠেকানো যেত। আবার কেউ মিথ্যা তথ্য দিয়ে নেতা হলে এই ফরমের প্রমাণের কারণেই পরে তার বিরুদ্ধে সাংগঠনিক ব্যবস্থা নেওয়া যেত। কিন্তু আমরা ফরমটা ছাড়তে পারিনি। কেন পারেননি জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘অনেকেই এটা চান না। সে কারণেই এটা হয়নি।’