ভ্যাট প্রত্যাহারের প্রভাব নেই ভোজ্যতেলের বাজারে
অনলাইন ডেস্ক: সরকার ভোজ্যতেলের ওপর সব ধরনের ভ্যাট প্রত্যাহার করে নিলেও বাজারে এর প্রভাব নেই। ফলে বাড়তি দামেই ক্রেতাদের তেল কিনতে হচ্ছে। খুচরা বিক্রেতারা বলছেন, ডিলাররা সেই আগের দামেই তেল বিক্রি করছেন। তারপরও চাহিদা অনুযায়ী সরবরাহ করছে না। ডিলারদের ভাষ্য, আমদানিকারকরা ভ্যাটমুক্ত পণ্য সরবরাহ না করলে তেলের দাম কমবে না।
বেশ কিছু দিন ধরেই ভোজ্যতেলের বাজারে অস্থিরতা বিরাজ করছে। দেশের বিভিন্ন স্থানে দেখা দেয় তেলের সংকট। এ নিয়ে পরস্পরকে দোষারোপ করে আসছেন আমদানিকারক, পরিবেশক ও খুচরা বিক্রেতারা। এমন পরিস্থিতিতে গত সোমবার ভোজ্যতেলের উৎপাদন ও ভোক্তা পর্যায়ে মোট ২০ শতাংশ ভ্যাট প্রত্যাহার করে জাতীয় রাজস্ব বোর্ড্ (এনবিআর)। এরপর ব্যবসায়ীদের দাবির মুখে মঙ্গলবার আমদানি পর্যায়েও ১০ শতাংশ ভ্যাট প্রত্যাহার করে সরকার। ফলে ভোজ্যতেলের ওপর থেকে মোট ৩০ শতাংশ ভ্যাট প্রত্যাহার করা হয়।
কিন্তু এই ভ্যাট প্রত্যাহারের প্রভাব পড়েনি ভোজ্যতেলের ওপর। ফলে সেই বাড়তি দামেই তেল কিনতে হচ্ছে ভোক্তাদের। বেশিরভাগ দোকানে যথেষ্ট পরিমান তেল নেই। ভ্যাট প্রত্যাহারের পরও দাম কেন কম রাখা হচ্ছে না- জানতে চাইলে ব্যবসায়ী আবদুল হুদা বলেন, আমরা এখনো ডিলারদের কাছ থেকে আগের দামেই কিনছি। সরকার যতোই দাম কমাক না কেন, ডিলাররা দাম না কমালে আমরা কিছু করতে পারব না।
ব্যবসায়ী হামিদুল ইসলামেরও একই কথা। তিনি বলেন, ‘সিন্ডিকেট পর্যায়ে তেলের দাম না কমা পর্যন্ত তেলের দাম পরিবর্তন হবে না। তাছাড়া কোম্পানির কাছ থেকে অর্ডার অনুযায়ী তেলও পাচ্ছি না। আমরাও নিরুপায়।’
কাওরানবাজারের পাইকারী ব্যবসায়ী সোবহান হোসেন জানিয়েছেন, বর্তমানে যে ভোজ্যতেল বাজারে বিক্রি হচ্ছে সেটা ভ্যাটসহ বেশি দামে কেনা। সরকার ভ্যাট প্রত্যাহার করেছে শুনেছি, তবে এখনই তো ক্রেতারা এ সুবিধা পাচ্ছেন না। কারণ, আমদানিকারকরা ভ্যাটমুক্ত পণ্য বাজারজাত করার পরেই দাম কমানো যাবে। কবে নাগাদ সঠিক মূল্যে পাওয়া যাবে জানতে চাইলে তিনি বলেন, এলসি করা পণ্যগুলো ভ্যাট-ফ্রি হয়ে আসলেই তেলের দাম কমে যাবে।
বাজার করতে আসা আসাদুল হক বলেন, তেলের উপর ভ্যাট কমানো হয়েছে শুনে ভেবেছিলাম কম দামে তেল কিনতে পারবো। কিন্তু এখন দেখছি তেল সেই আগের দামেই বিক্রি হচ্ছে। ভ্যাট প্রত্যাহারে আমাদের কোনো লাভ হলো না।
আমদানি পর্যায়ে ভোজ্যতেলে ১০ শতাংশ ভ্যাট প্রত্যাহারের ফলে তেলের দাম সামান্য কিছু কমতে পারে বলে ধারনা করছেন বাজার বিশ্লেষকরা।
আন্তর্জাতিক বাজারে ভোজ্যতেলের দাম বেড়ে যাওয়ায় দেশের বাজারেও দাম বৃদ্ধি পেয়েছে। আসন্ন রমজানে দাম আরও বাড়তে পারে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে। এ অবস্থায় পণ্য মজুদকারীদের বিরুদ্ধে আইনি ব্যবস্থা নেয়ার নির্দেশ দিয়েছেন হাইকোর্ট।