বাস চালকের জামিনে আল্টিমেটাম
স্টাফ রিপোর্টার: রাজশাহীর কাটাখালীতে যাত্রীবাহী বাস ও মাইক্রোবাসের মুখোমুখি সংঘর্ষে ১৭ জন নিহতের ঘটনা ঘটেছিল গত বছরের ২৬ মার্চ। পরদিন গ্রেপ্তার করা হয় বাসের চালককে। সেই থেকে চালক আবদুর রহিম কারাগারে। এবার তাঁর মুক্তির দাবিতে আন্দোলন শুরু হয়েছে।
তাঁর মুক্তির জন্য আগামী ২৫ মার্চ পর্যন্ত সময় বেধে দিয়েছে বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন শ্রমিক ফেডারেশন রাজশাহী ও রংপুর বিভাগীয় আঞ্চলিক কমিটি। এই সময়ের মধ্যে রহিমের জামিন না হলে ২৭ মার্চ থেকে দুই বিভাগে পরিবহন ধর্মঘটেরও ঘোষণা দেওয়া হয়েছে।
শ্রমিক নেতারা বলছেন, প্রশাসনের তদন্ত প্রতিবেদনে অনেক আগেই উঠে এসেছে যে মহাসড়ক দিয়ে বাঁশ নিয়ে যাওয়া ভ্যান এবং মাইক্রোবাসের বেপরোয়া গতির কারণে দুর্ঘটনা ঘটেছে। তারপরও এক বছর ধরে চালককে কারাগারে রাখা ‘অযৌক্তিক’।
তাঁরা জানিয়েছেন, চালক রহিমের বাড়ি রাজশাহীর পুঠিয়া উপজেলায়। বাড়িতে তাঁর আর কোন কর্মক্ষম ব্যক্তি নেই। ছোট ছোট তিন সন্তানকে নিয়ে রহিমের স্ত্রী খেয়ে না খেয়ে দিন কাটাচ্ছেন। হুট করেই আন্দোলন শুরু করলে বিষয়টি খারাপ দেখায়। তাই এতদিন তারা অপেক্ষা করেছেন। একবছরেও জামিন না হওয়ায় তাঁরা আন্দোলন করছেন।
রহিমের মুক্তির দাবিতে গত মঙ্গলবার রাজশাহী মহানগরীর শিরোইল ঢাকা বাস টার্মিনাল এলাকায় মানববন্ধনের আয়োজন করে বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন শ্রমিক ফেডারেশন রাজশাহী ও রংপুর বিভাগীয় আঞ্চলিক কমিটি। পরদিন বুধবার জেলা প্রশাসক আবদুল জলিলের হাতে স্মারকলিপি তুলে দেন বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন শ্রমিক ফেডারেশন রাজশাহী বিভাগীয় কমিটির সাধারণ সম্পাদক মাহাতাব হোসেন চৌধুরী। এ সময় জেলা প্রশাসক এ বিষয়টি দেখবেন বলে আস্বস্ত করেন।
শ্রমিক নেতা মাহাতাব হোসেন চৌধুরী বলেন, ‘চালক আবদুর রহিম হানিফ পরিবহনের চালক ছিল। তার জন্য হানিফ পরিবহন কিছু করেনি। রহিমের স্ত্রী আমাদের কাছে এলে যতটুকু পেরেছি সাহায্য করেছি। পরিবারটি খেয়ে না খেয়ে দিন কাটাচ্ছে। এক বছর ধরে একজন চালককে এভাবে জেলে আটকে রাখার কোন মানেই হয় না। আমরা ২৫ মার্চের মধ্যেই তাঁর মুক্তি চাই। আর তা না হলে ২৭ মার্চ থেকে রাজশাহী ও রংপুর বিভাগে অনির্দিষ্টকালের জন্য পরিবহন ধর্মঘট শুরু হবে।’
উল্লেখ্য, একবছর আগের ওই সড়ক দুর্ঘটনায় মারা যাওয়া সবার বাড়ি ছিল রংপুরে। মুখোমুখি সংঘর্ষের পর মাইক্রোবাসের গ্যাস সিলিন্ডারের পাইপ লিক হলে আগুন ধরে যায়। এতে মাইক্রোবাসের ১৮ যাত্রীর মধ্যে চালকসহ ১৭ জনই মারা যান। ওই ঘটনায় কাটাখালী থানায় সড়ক আইন অনুযায়ী একটি মামলা হয়।
কাটাখালী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) এএসএম সিদ্দিকুর রহমান জানান, মৃত ব্যক্তিরা আগুনে পুড়ে গিয়েছিলেন। তাই তাঁদের ডিএনএ টেস্টের উদ্যোগ নেওয়া হয়। সে রিপোর্ট এখনও পাওয়া যায়নি। তাই মামলার অভিযোগপত্রও দাখিল করা হয়নি।