ঢাকা | মে ১০, ২০২৪ - ৭:৩০ পূর্বাহ্ন

গোয়েন্দা নজরদারিতে সিন্ডিকেট

  • আপডেট: Friday, March 11, 2022 - 7:20 pm

অনলাইন ডেস্ক: অবৈধ মজুদ করে নিত্যপণ্যের দাম ও সরবরাহে সংকট তৈরি করা অসাধু ব্যবসায়ীদের সিন্ডিকেট ধরতে মাঠে নেমেছে সরকারের একাধিক গোয়েন্দা সংস্থা। এরইমধ্যে অসাধু ব্যবসায়ীদের তালিকা তৈরির পাশাপাশি কে কোন পণ্য আমদানি-রপ্তানি করছে সেসব তথ্য সংগ্রহ করা হয়েছে।

জানা গেছে, নিত্যপণ্যের বাজার অস্থির হয়ে পড়ায় সরকারের শীর্ষ মহল থেকে নির্দেশের পর পাইকারি ও খুচরা বাজারে নজরদারি বাড়িয়েছে গোয়েন্দা সংস্থাগুলো। খোঁজখবর করা হচ্ছে অসাধু ব্যবসায়ীদের কারা অবৈধভাবে গুদামে পণ্য মজুদ করে কৃত্রিম সংকট তৈরি করছে। অতিমুনাফালোভী এসব ব্যবসায়ীদের চিহ্নিত হোতাদের বিরুদ্ধে করে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

সম্প্রতি সয়াবিন তেলের দাম বাড়ার পর কৃত্রিম সংকট তৈরি করে একশ্রেণির অসাধু ব্যবসায়ী বেশি দামে বিক্রি করছে। বিষয়টি নিয়ে দেশজুড়ে সমালোচনা শুরু হলে সরকারের উচ্চপর্যায় থেকে আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীকে বিষয়টি দেখতে বলা হয়।

ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশের একজন কর্মকর্তা জানান, যেসব ব্যবসায়ী সিন্ডিকেটের মাধ্যমে বাজারে কৃত্রিম সংকট তৈরি করেছে , তাদের প্রতিষ্ঠানগুলোতে অভিযান চালানোর সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। যেকোনও সময় এসব প্রতিষ্ঠানে ঝটিকা অভিযান চালানো হবে। অভিযানের সময় গুদামে থাকা অবৈধভাবে মুজত পণ্য জব্দ করা হবে। পাশাপাশি ওই অসাধু সিন্ডিকেট সদস্যকে আইনের আওতায় আনা হবে।

জানতে চাইলে ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশের অতিরিক্ত কমিশনার (ডিবি) এ কে এম হাফিজ আক্তার গণমাধ্যমকে বলেন, ‘অসাধু ব্যবসায়ীরা যাতে সিন্ডিকেট তৈরি করে নিত্যপণ্যের দাম বাড়াতে না পারে সেজন্য আমরা তাদের কর্মকাণ্ড মনিটরিং করছি। এ জন্য গোয়েন্দা পুলিশের সবগুলো ইউনিটকে বিশেষ নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। প্রয়োজনে তাদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থাও নেওয়া হবে।’

পুলিশের বিশেষ শাখার এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, আসন্ন রামজান মাসকে ঘিরে বাজারে বিভিন্ন পণ্যের কৃত্রিম সংকট তৈরি করতে একটি সিন্ডিকেট কাজ করছে। এই সিন্ডিকেট সরকারকে বেকায়দায় ফেলে রাজনৈতিক ফায়দা নিতে পারে। তাই এখন থেকেই তাদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা না নিলে সরকারের ভাবমূর্তি ব্যপকভাবে ক্ষুন্ন হওয়ার শঙ্কা রয়েছে।

ইতোমধ্যে একাধিক গোয়েন্দা সংস্থার মাধ্যমে ঢাকার বাইরে থেকে আনা পণ্য কেন দিগুণ বা তিন গুণ দামে বিক্রি হচ্ছে, তার কারণ অনুসন্ধান করে প্রতিবেদন দাখিল করা হয়েছে। এজন্য গোয়েন্দা প্রতিবেদনে কয়েকটি সুপারিশও করা হয়েছে।

সুপারিশে বলা হয়েছে, ঢাকার বাইরে থেকে পণ্য আসার ক্ষেত্রে পথের সকল ভোগান্তি বিশেষ করে চাঁদাবাজি বন্ধ করতে হবে। এছাড়া বিদেশ থেকে যারা পণ্য আমদানি করে থাকে, তাদের পণ্য খালাসে ওয়ান স্টপ সার্ভিসের মাধ্যমে দ্রুত পণ্য খালাস করে বাজারে নেওয়ার সুবিধার কথা বলা হয়েছে।

একইসঙ্গে সরকারের পক্ষ থেকে টিসিবির মাধ্যমে আরও বেশি পণ্য বিক্রির ব্যবস্থা করতে পারলে অসাধু ব্যবসায়ী সিন্ডিকেটকে রুখে দেওয়া সম্ভব হবে। প্রতিনিয়ত বিভিন্ন বাজারে মোবাইল কোর্ট পরিচালনার বিষয়েও জোর দেওয়ার জন্য বলা হয়েছে প্রতিবেদনে।

এ বিষয়ে কনজিউমার অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশের (ক্যাব) সভাপতি গোলাম রহমান বলেন, ‘বাজারে এমনভাবে নজরদারি করতে হবে যাতে ভীতিকর পরিবেশ তৈরি না হয়, আবার অসাধু ব্যবসায়ীরাও যাতে কোনও কৃত্রিম সংকট তৈরি করতে না পারে। অর্থাৎ দুষ্ট দমনের পাশপাশি শিষ্টের পালন করতে হবে। অসাধু ব্যবসায়ীদের দমনের পাশাপাশি ভালো ব্যবসায়ীদের উৎসাহ দিতে হবে। খারাপ ব্যবসায়ীদের বিরুদ্ধে যথাযথ আইনানুগ ব্যবস্থা নিতে হবে। তাহলেই বাজারে একটা স্থিতিশীল পরিবেশ আসতে পারে।’