ঢাকা | মে ১২, ২০২৪ - ৫:২৫ পূর্বাহ্ন

গাছে মুকুল কম, পরিচর্যায় ব্যস্ত চাষিরা

  • আপডেট: Friday, March 11, 2022 - 7:32 pm

স্টাফ রিপোর্টার: স্বর্ণালী মুকুলে এবার রাজশাহীর সব আম গাছ ভরে ওঠেনি। গত বছরের চেয়েও এবার গাছে মুকুল কম। এই কম মুকুলই যেন ঝরে না পড়ে তার জন্য পরিচর্যায় ব্যস্ত সময় কাটাচ্ছেন চাষিরা। তারা বলছেন, এবার আবহাওয়া ভাল। যে মুকুল এসেছে তা টিকলেই খুব ক্ষতি হবে না। তাই মুকুল টেকাতে পরিচর্যায় ঘাটতি রাখছেন না তারা।

গত বছর আম উৎপাদন লক্ষ্যমাত্রা ছাড়িয়ে যায়। জেলায় এবার আমবাগান বাড়লেও লক্ষ্যমাত্রা গতবছরের চেয়ে কমই ধরা হয়েছে। এ বছর বাগান রয়েছে ১৮ হাজার ৫১৫ হেক্টর জমিতে। উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা ২ লাখ ১৭ হাজার মেট্রিক টন আম। গতবছর ১৭ হাজার ৯৪৩ হেক্টর জমির আমবাগান থেকে ২ লাখ ১৯ হাজার মেট্রিক টন আম উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছিল। সেই লক্ষ্যমাত্রা ছাড়িয়ে গিয়েছিল।

রাজশাহীর পবা উপজেলার হরিপুর এলাকায় বাগানে আমগাছে স্প্রে করছিলেন চাষী রফিকুল ইসলাম। তিনি জানান, গতবছর মুকুলেই ছোট ছোট গাছগুলোর ডাল নুইয়ে পড়ছিল। এবার সেই তুলনায় মুকুল অনেক কম। কোন কোন গাছে একটা মুকুলেরও দেখা নেই। মুকুল কম বলে তিনি পরিচর্যা একটু বেশিই করছেন।

পবার আলিমগঞ্জ এলাকার চাষি আতাউর রহমানও গাছে কম মুকুলের কথা জানালেন। বললেন, এমনিতেই মুকুল কম। সেটা যেন ঝরে না যায় তার জন্য কীটনাশক ও ছত্রাকনাশক স্প্রে করা হচ্ছে। তিনি জানান, গতবছর প্রচুর আম ধরেছিল। কিন্তু করোনার কারণে নানা বিধিনিষেধ আর রমজান মাসের কারণে আম বেচতে বেগ পেতে হয়েছিল। এবার আম পাকবে রোজার পর। তাই আম বেচতে সমস্যা হবে না। তখন ভাল দাম পাওয়া যাবে বলেও তিনি আশা করছেন।

গাছে এবার মুকুল কম আসার বিষয়টি স্বীকার করেছেন রাজশাহী ফল গবেষণা কেন্দ্রের মূখ্য বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা ড. আলীম উদ্দিন। তিনি বলেন, এবার ৮০ ভাগ গাছে মুকুল এসেছে, ২০ ভাগে আসেনি। কিছু কিছু এলাকায় ওই ৮০ ভাগ গাছেও মুকুল কম দেখা যাচ্ছে। তবে এবার আবহাওয়া খুব ভাল আছে। মুকুল আসার সময় তিন-চারদিন ধরে কুয়াশা পড়েনি। কুয়াশা মুকুলের ক্ষতি করে। এবার সেই ক্ষতি হয়নি।

তিনি জানান, আবহাওয়া শুষ্ক থাকায় শুধু মুকুল টিকিয়ে রাখতে পারলেই ভাল আম উৎপাদন হবে। অনেক চাষি মুকুল আসার আগেই গাছে কীটনাশক ও ছত্রাকনাশক মেশানো পানি স্প্রে করেছেন। আগে যারা স্প্রে করেননি, তাঁরা এখন মুকুল আসার পর করছেন। গাছে যখন মটরদানার মত আমের গুটি ধরবে তখন আরেকবার স্প্রে করা হবে। সে সময় গুটি টেকাতে গাছের গোড়ায় গোড়ায় পানিও দেওয়া হবে।

জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপপরিচালক মোজদার হোসেন বলেন, তিনি এখনও রাজশাহীর সব এলাকায় গিয়ে আমের মুকুল দেখতে পারেননি। তবে যেটুকু দেখেছেন তাতে তার কাছে গাছে মুকুল খুব একটা কম মনে হয়নি। তিনি বলেন, মুকুল আসার সময় এখনও শেষ হয়ে যায়নি। মুকুল আসার জন্য যে ধরনের আবহাওয়া দরকার সে রকমই আছে। ফলে আরও কিছুদিন গাছে মুকুল আসতে পারে। এবারও আমের উৎপাদন খারাপ হবে না বলেই মনে করছেন তিনি।