ঢাকা | মে ৯, ২০২৫ - ১০:২৫ অপরাহ্ন

আমার পোলারে একবার শেষ দেখা দেখতে চাই: হাদিসুরের মা

  • আপডেট: Wednesday, March 9, 2022 - 8:12 pm

 

অনলাইন ডেস্ক: যুদ্ধের মধ্যে ইউক্রেনের অলভিয়া বন্দরে আটকে পড়া বাংলাদেশি জাহাজে যুদ্ধের গোলায় নিহত নাবিক হাদিসুরের মরদেহ শেষবারের মতো দেখার আকুতি মা রাশিদা বেগমের। বুধবার দুপুরে শাহজালাল বিমানাবন্দরের সিআইপি গেটের বাইরে দাঁড়ানো হাদিসুরের মায়ের কান্না উপস্থিত অন্যদেরও চোখ ভিজিয়ে দিচ্ছিল।

অলভিয়া বন্দরে জাহাজ ‘বাংলার সমৃদ্ধি’ গত ২ মার্চ রকেট হামলার শিকার হলে মারা যান থার্ড ইঞ্জিনিয়ার হাদিসুর রহমান। পরদিন জাহাজ থেকে বাকি ২৮ নাবিক-ক্রুকে সরিয়ে নেওয়া হয়। রবিবার মলদোভা হয়ে তারা রোমানিয়া পৌঁছান। সেখান থেকে বুধবার তারা দেশে ফিরলেন।

বিমানাবন্দরের সিআইপি গেটের বাইরে হাদিসুরের মা অপেক্ষায় ছিলেন ‘বুঝি ছেলের মরদেহ দেশে এসেছে’। এই আশায় অপেক্ষা করছিল নিহত হাদিসুরের পরিবার। কিন্তু দীর্ঘ অপেক্ষার পরেও হাদিসুরের মরদেহের কোনো খবর পাওয়া যাচ্ছিল না, তখন তারা হতাশ হয়ে পড়েন।

এসময় দেখা যায়, রাশিদার চোখ থেকে জল গড়িয়ে আবার সেটা গালে শুকিয়ে লম্বা দাগে পরিণত হচ্ছে। সেখানে তার সঙ্গে থাকা হাদিসুরের বাবা ও ছোট দুই ভাই বারবার গণমাধ্যমকর্মীদের কাছে জানতে চাইছেন হাদিসুরের মরদেহ কখন আসবে? কোন গেট দিয়ে আসবে।

হাদিসুরের ভাই প্রিন্স সাংবাদিকদের বলেন, ‘আমার ভাইয়ের লাশ কোনো দিক দিয়া আনবে। বাবা-মা অপেক্ষা করছে, তারা জানতে চাইছে। আমি জবাব দিতে পারতেছি না।’

হাদিসুরের বাবা রাজ্জাক হাওলাদারের মুখ দিয়ে কথা বের হচ্ছে না। তবে ছেলেকে কাছে পাওয়ার জন্য বৃদ্ধ বাবার আকুতি বোঝা গেল সহজেই।

মা রাশিদা বেগম ছেলেকে শেষবারের মতো একটু ছুঁয়ে দেখার আকুতি জানিয়ে বলেন, ‘আমার ছেলে আর আমারে ভালো-মন্দ খাইতে কইব না। শেষবার যখন কথা হইছে, আমার বাবা আমারে কইছিল ভালো-মন্দ খাওয়াদাওয়া করতে। এখন আর কেউ কইব না এই কথা। আমার পোলারে আমি শেষ দেখা দেখতে চাই। ওরা কয় না ক্যান কোন দিক দিয়া আইব আমার পোলা?’

হাদিসুরের চাচাতো ভাই সোহাগ হাওলাদার বলেন, ‘আমার ভাই (হাদিসুর) মারা যাওয়ার সঙ্গে তাঁদের পরিবারের উপার্জনক্ষম মানুষ আর থাকল না। সরকারের কাছে আমাদের দাবি থাকবে, হাদিসুরের ছোট দুই ভাইয়ের জন্য যেন চাকরির ব্যবস্থা করা হয়।’

এদিকে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের পূর্ব ইউরোপ ও সিআইএস অনুবিভাগের মহাপরিচালক শিকদার ব‌দিউজ্জামান বাংলার সমৃদ্ধি জাহাজের থার্ড ইঞ্জিনিয়ার হাদিসুর রহমানের মরদেহ খুব শিগগিরই দেশে নি‌য়ে আসা হবে বলে জানিয়েছেন।

২৮ না‌বিকের দেশে প্রত্যাবর্ত‌নের পর শাহাজালাল বিমানবন্দরে এক সংবাদ স‌ম্মেল‌নে এ তথ্য জানান শিকদার ব‌দিউজ্জামান। হাদিসুরের মরদেহ দেশে আনতে তিনটা মিশন একত্রে কাজ করছে বলেও তিনি জানিয়েছেন।

এর আগে দুপুর সোয়া ১২টায় টার্কিশ এয়ারলাইন্সের একটি ফ্লাইটে রোমানিয়ার বুখারেস্ট থেকে ঢাকা পৌঁছান ২৮ ক্রু। এসময় বিমানবন্দরে পরিবারের সদস্য, বাংলাদেশ শিপিং করপোরেশনের কর্মকর্তা এবং পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের প্রতিনিধিরা কয়েকশ সংবাদকর্মী উপস্থিত ছিলেন।

 

 

Hi-performance fast WordPress hosting by FireVPS