থানার ওসিকে এক টাকা জরিমানা করলেন রাজশাহীর আদালত
স্টাফ রিপোর্টার: পাবনার আমিনপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) রওশন আলীকে এক টাকা অর্থদণ্ড দিয়েছেন আদালত। জরিমানার এই অর্থ অনাদায়ে আদালতের কার্যক্রম যতক্ষণ চলবে ততক্ষণ তাঁর কারাদণ্ডের আদেশ দেওয়া হয়। তবে ওসি রওশন আলী জরিমানার এক টাকা পরিশোধ করেছেন।
মঙ্গলবার দুপুরে রাজশাহী সাইবার ট্রাইব্যুনালের বিচারক মো. জিয়াউর রহমান পুলিশ পরিদর্শক রওশন আলীকে এ দণ্ড দেন। আদালতের রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী ইসমত আরা এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন। তিনি জানান, সাক্ষী দিতে আসার জন্য বার বার সমন পাঠানো হলেও ওসি রওশন আলী অনুপস্থিত থেকেছেন। তাই ন্যায় বিচারের স্বার্থে আদালত ওসিকে দণ্ড দিয়েছেন।
আদালত সূত্রে জানা গেছে, অন্য আরেকটি মামলার ক্ষেত্রেও আদালতের সমন অবজ্ঞা করেছিলেন ওসি রওশন। এ জন্য তিনি পরে লিখিতভাবে ক্ষমা প্রার্থনা করেন। আদালত তখন তাঁকে ক্ষমা করেন। মঙ্গলবারও আদালতে হাজির হয়ে ওসি ক্ষমা প্রার্থনা করেছিলেন। তবে আদালত মনে করেছেন ওসির কোন অনুশোচনা নেই। তাই এক টাকা অর্থদণ্ড করা হয়।
আদালতের পেশকার হেমন্ত বর্মন জানান, রওশন আলী আগে পাবনা জেলা পুলিশের গোয়েন্দা শাখায় (ডিবি) কর্মরত ছিলেন। ২০১৮ সালে ৬ আগস্ট নিরাপদ সড়ক চাই-এর আন্দোলন নিয়ে ফেসবুকে গুজব ছড়ানোর অভিযোগে এক যুবককে আটক করে তখন তিনি একটি মামলা করেন। মামলা দ্রুত নিষ্পত্তির জন্য আদালত তদন্ত কর্মকর্তাসহ অন্য সাক্ষীদের সাক্ষ্য গ্রহণ করেন। ইনফরমেন্ট সাক্ষী হিসেবে রওশন আলীকে সাক্ষ্য দেওয়ার জন্য পর পর ছয়বার সমন পাঠানো হয়। কিন্তু তিনি আদালতে আসেননি। পরে আদালত স্বপ্রণোদিত হয়ে রওশন আলীর মোবাইলের হোয়াটস অ্যাপে আদালতের সমনের ছবি পাঠান। এতেও কোন উত্তর না দিয়ে তিনি সাক্ষ্য দেওয়া থেকে বিরত থাকেন।
ফলে মামলার স্বাভাবিক কার্যক্রম ব্যাহত হয়। তাই কেন তাঁর বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে না তা জানতে চেয়ে কারণ দর্শানোর একটি নোটিশ পাঠান আদালত। গত ২৬ জানুয়ারি এ নোটিশ পাঠানোর পর মামলার নির্ধারিত দিনে মঙ্গলবার হাজির হয়ে ক্ষমা প্রার্থনা করেন ওসি। তবে আদালত ওসিকে এক টাকা অর্থদণ্ড অনাদায়ে কারাদণ্ডের আদেশ দেন।
পেশকার হেমন্ত বর্মন আরও জানান, আদালতের আদেশের পর ওসি রওশন আলী তাঁর কাছে জরিমানার এক টাকা পরিশোধ করেছেন। এরপর তিনি রাষ্ট্রীয় কোষাগারে টাকাটি জমা দিয়েছেন। দুপুরেই তিনি সোনালী ব্যাংকের স্থানীয় শাখায় টাকাটি জমা দেন বলে জানান পেশকার।