পণ্যমূল্য নিয়ন্ত্রণে সবাইকে সাধ্যমতো চাষাবাদের পরামর্শ প্রধানমন্ত্রীর
অনলাইন ডেস্ক: যেকোনো পরিস্থিতিতে খাদ্যাভাব ও পণ্যমূল্য বৃদ্ধি রোধে সবার সাধ্যমতো কিছু চাষাবাদ করার আহ্বান জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। তিনি বলেছেন, বিশ্বে অর্থনৈতিক মন্দা চলছে। নিজের খাদ্য নিজেই জোগান দিতে পারলে কারও মুখাপেক্ষী হয়ে থাকতে হবে না। খাদ্যপণ্যের দামও নিয়ন্ত্রণে থাকবে।
যেকোনো পরিস্থিতিতে দেশের মানুষের যেন খাদ্যের অভাব দেখা না দেয়, তার সরকার সেই চেষ্টায় করছে বলে জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী।
আজ সোমবার ঐতিহাসিক ৭ মার্চ উপলক্ষে আওয়ামী লীগ আয়োজিত আলোচনা সভায় প্রধানমন্ত্রী এই কথা বলেন। বঙ্গবন্ধু এভিনিউয়ের আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে অনুষ্ঠিত আলোচনা সভায় প্রধানমন্ত্রী তার সরকারি বাসভবন গণভবন থেকে ভার্চুয়ালি যুক্ত হন।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘বর্তমানে দ্রব্যমূল্য নিয়ে একটা কথা আসছে। এটা শুধু বাংলাদেশ না, করোনা ভাইরাসের কারণে বিশ্বের অর্থনীতি মন্দা। যে কারণে পৃথিবীর সব দেশে- সুদূর আমেরিকা থেকে শুরু করে সব দেশে জিনিসপত্রের দাম বেড়ে গেছে।’
এর মধ্যে ইউক্রেন সংকটকে অনাকাঙ্ক্ষিত ঘটনা হিসেবে উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘রাশিয়া ইউক্রেন আক্রমণ করেছে। সেটা নিয়েও একটা অস্বাভাবিক পরিস্থিতি সারা বিশ্বে। আমরাও তার কুফল ভোগ করছি। আমাদের এখানেও কিছু জিনিসের দাম বাড়ছে। কারণ আন্তর্জাতিক বাজারে যখন বেড়ে যায়, তখন এটা স্বাভাবিক কিছু প্রভাব পড়ে।’
এসব পরিস্থিতিতে কিছু সুযোগসন্ধানী লোক যে তৎপর হয়ে ওঠে সে কথাও বলেন প্রধানমন্ত্রী। সরকার-প্রধান বলেন, ‘এখানে কিছু লোক আছেই, যারা এই সমস্ত পরিস্থিতিতে একটু ব্যবসা করে দুই পয়সা কমাই করতে চায়। সেখানে মনিটরিং করার ব্যবস্থা আমরা করছি।’
জনগণ ও আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীদের উদ্দেশে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘আমাদের খাদ্যের যেন অভাব না হয়। এক ইঞ্চি জমিও যেন অনাবাদি না থাকে। যে যা পারবেন কিছু উৎপাদন করবেন। নিজের চাহিদা নিজেই পূরণ করতে চেষ্টা করবেন। নিজের খাদ্য নিজেই জোগান দিতে চেষ্টা করবেন। এটা যদি আমরা করতে পারি, তাহলে আমাদের আর কারও মুখাপেক্ষী হয়ে থাকতে হবে না।’
এ সময় প্রধানমন্ত্রী দেশের মানুষের মাথাপিছু আয় ও ক্রয়ক্ষমতা বৃদ্ধির প্রসঙ্গ তোলেন। তবে সবাইকে কিছু না কিছু ফসল ফলানোরও আহ্বান জানান তিনি।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘আজকে আমাদের মাথাপিছু আয় ২ হাজার ৫৯১ মার্কিন ডলার। অর্থাৎ মানুষের ক্রয়ক্ষমতা বেড়েছে। সেই সঙ্গে সবাইকে বলব, যার যেখানে যতটুকু জমি আছে। সবাই কিছু না কিছু ফসল ফলান। তরিতরকারি ফলান। নিজের খাবারের ব্যবস্থা নিজে তৈরি করেন। যেকোনো রকম প্রাকৃতিক দুর্যোগ হোক, যুদ্ধাবস্থা হোক বা যেকোনো ঘটনা হোক, অন্তত আমাদের দেশের মানুষের যেন খাদ্যের অভাব না দেখা দেয়। সেটাই আমাদের চেষ্টা।’
প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘খাদ্যে আমরা স্বয়ংসম্পূর্ণ হওয়ার পর পুষ্টির ব্যবস্থা করেছি। বিনা পয়সায় চিকিৎসা ও বই দেওয়া- সব ধরনের ব্যবস্থা আমরা করে যাচ্ছি।’
আলোচনা সভায় স্বাগত বক্তব্য দেন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের।
গণভবন থেকে প্রচার ও প্রকাশনা সম্পাদক আবদুস সোবহান গোলাপের সঞ্চালনায় সভায় আরও বক্তব্য দেন আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য মতিয়া চৌধুরী, আবদুর রাজ্জাক, শাজাহান খান, জাহাঙ্গীর কবির নানক, মোফাজ্জল হোসেন চৌধুরী মায়া, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক হাছান মাহমুদ, সাংগঠনিক সম্পাদক এস এম কামাল হোসেন, শ্রম ও জনশক্তি সম্পাদক হাবিবুর রহমান সিরাজ প্রমুখ।