ঢাকা | মে ১৩, ২০২৪ - ৮:০৭ অপরাহ্ন

লকডাউনে ছেলেকে আনতে ১৪শ’ কি.মি. স্কুটি চালান মা! ছেলে এখন আটকে ইউক্রেনে

  • আপডেট: Saturday, March 5, 2022 - 3:12 pm

অনলাইন ডেস্ক: ২০২০ সালের মার্চ। ভারতজুড়ে লকডাউন ঘোষণা করা হয় করোনার কারণে। বাড়ি থেকে ৭০০ কিমি দূরে আটকে পড়া ছেলেকে আনতে একাই স্কুটি নিয়ে বেরিয়ে পড়েছিলেন রাজিয়া বেগম। অনেক বাধা-বিপত্তি উপেক্ষা করে ছেলেকে উদ্ধার করে নিয়েও এসেছিলেন তিনি। তার এই কাজের জন্য সংবাদের শিরোনামেও এসেছিলেন রাজিয়া। তার সাহসিকতা এবং জেদের জন্য কুড়িয়েছিলেন অনেক প্রশংসাও।

আবারও সেই মার্চ। সেই ঘটনার প্রায় দু’বছর পর এবারও আটকে পড়েছে ছেলে। কিন্তু এবার আর প্রতিবেশি রাজ্য বা দেশের অন্য কোনও প্রান্তে নয়। সুদূর ইউরোপে কৃষ্ণসাগরের তীরের দেশ ইউক্রেনে। যে দুঃসাহসিকতা নিয়ে তিনি ১৪০০ কিলোমিটার পাড়ি দিয়ে প্রতিবেশি রাজ্য অন্ধ্রপ্রদেশের নেল্লোর থেকে ছেলেকে উদ্ধার করে নিয়ে এসেছেন, সুদূর ইউরোপের দেশ যুদ্ধবিধ্বস্ত ইউক্রেন থেকে ছেলেকে ফিরিয়ে আনতে আর দু’চাকার বাহন নয়, ভরসা করতে ভারত সরকারের ওপর।

ভারতের তেলঙ্গানার নিজামাবাদের বাসিন্দা রাজিয়া। তিন সন্তান তার। পেশায় সরকারি স্কুলের শিক্ষিকা। ২০২০ সালে করোনার জেরে যখন লকডাউন ঘোষণা হয় গোটা দেশে সে সময় তার ছেলে মুহাম্মদ নিজামউদ্দিন বন্ধুকে বাড়ি পৌঁছে দিতে অন্ধ্রপ্রদেশের নেল্লোরে গিয়েছিলেন। সেখানে থাকাকালীনই লকডাউন ঘোষণা হয়। যানবাহন, ট্রেন সব কিছুই বন্ধ হয়ে গিয়েছিল। মায়ের মন বাধ মানছিল না। তাই নিজেই ৭০০ কিলোমিটার পথ স্কুটি চালিয়ে সেখানে পৌঁছান রাজিয়া। সেখান থেকে ছেলেকে নিয়ে আবারও ৭০০ কিলোমিটার পথ চালিয়ে বাড়ি ফেরেন তিনি।

দু’বছর পর যেন আবারও সেই দুঃস্বপ্ন ফিরে এল রাজিয়ার জীবনে। আবারও সেই মার্চ। কিন্তু এবার প্রেক্ষিতটা সম্পূর্ণ আলাদা। ছেলে নিজামউদ্দিন ডাক্তারি পড়ার জন্য পাড়ি দিয়েছিলেন ইউক্রেনে। সেখানে রাশিয়ার সীমান্তলাগোয়া শহর সুমি স্টেট মেডিক্যাল কলেজে প্রথম বর্ষের ছাত্র নিজামউদ্দিন।

ইউক্রেনে সামরিক অভিযান শুরু হতেই চরম দুর্ভাবনায় দিন কাটছে রাজিয়ার। কিয়েভ, খারকিভসহ ইউক্রেনের বিভিন্ন শহর থেকে ভারতীয়রা প্রতিবেশি দেশ পোল্যান্ড, রোমানিয়া এবং হাঙ্গেরিতে রওনা দিয়েছে। সেখান থেকে তাদের উদ্ধার করে দেশে ফিরিয়ে আনার কাজ শুরু করেছে ভারত সরকার। কিন্তু ছেলে নিজামউদ্দিন কীভাবে ফিরবেন, সেখানে কী অবস্থায় আছে তা নিয়ে দুশ্চিন্তায় রাজিয়া।

রাজিয়া বলেন, “ছেলে একটি বাঙ্কারে আশ্রয় নিয়েছে। আমাকে চিন্তা করতে নিষেধ করছে। কিন্তু মায়ের মন তো! বারবার দুশ্চিন্তায় কেঁপে উঠছি।”

স্থানীয় রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী চন্দ্রশেখর রাও, রাজ্যের স্বরাষ্ট্র দফতরের মন্ত্রী মুহাম্মদ মাহমুদের কাছে ছেলেকে উদ্ধারের অনুরোধ জানিয়েছেন রাজিয়া। সূত্র: আনন্দবাজার

সোনালী/জেআর