ঢাকা | মে ১৮, ২০২৪ - ২:০৯ অপরাহ্ন

পানের অযোগ্য পানির দাম বাড়ানোর বিপক্ষে এমপি বাদশা

  • আপডেট: Sunday, February 27, 2022 - 1:25 pm

স্টাফ রিপোর্টার: পানের অযোগ্য রাজশাহী পানি সরবরাহ ও পয়নিষ্কাষণ কর্তৃপক্ষের (ওয়াসা) পাইপের পানি। এ নিয়ে নগরবাসীর মধ্যে অসন্তোষ আগে থেকেই। এর ভেতরেই চলতি মাস থেকে পানির দাম তিনগুণ বাড়ানো হয়েছে। এর প্রতিবাদে কর্মসূচি পালিত হচ্ছে রাজশাহীতে। বিশেষ করে বাংলাদেশের ওয়ার্কার্স পার্টির রাজশাহী মহানগর পানির মূল্য বৃদ্ধির বিরুদ্ধে জনসমর্থন গড়ে তুলতে লিফলেট বিতরণের মত কর্মসূচি পালন করে যাচ্ছে।

তবে পানির নতুন দাম নিয়ে অনঢ় রয়েছে ওয়াসা। এ অবস্থায় পানির মূল্য বৃদ্ধির প্রতিবাদ জানিয়ে আন্দোলনকারীদের মাঠে নামার ঘোষণা দিয়েছেন বাংলাদেশের ওয়ার্কার্স পার্টির সাধারণ সম্পাদক ও রাজশাহী সদর আসনের সাংসদ ফজলে হোসেন বাদশা।

রোববার বেলা ১১টায় নগরীর হড়গ্রামে ব্যক্তিগত কার্যালয়ে তিনি সংবাদ সম্মেলন করেন। এ সময় রাজশাহী মহানগর ওয়ার্কার্স পার্টির সাধারণ সম্পাদক দেবাশিষ প্রামানিক দেবু ও জেলার সাধারণ সম্পাদক অধ্যাপক আশরাফুল হক তোতা সঙ্গে ছিলেন।

সংবাদ সম্মেলনে পানির দাম বাড়ানোয় চলমান বিভিন্ন আন্দোলন ও কর্মসূচিকে পুরোপুরি সমর্থন দেন দেশের বর্ষীয়ান এই রাজনীতিক। তিনি বলেন, ‘বিভিন্ন কৌশলে পানির দাম তিনগুণ বৃদ্ধি করে বাস্তবায়ন শুরু করেছে। কিন্তু ওয়াসা একটি রাষ্ট্রীয় প্রতিষ্ঠান। রাষ্ট্রীয় প্রতিষ্ঠানটিকে বাণিজ্যিক প্রতিষ্ঠানে পরিণত করা হয়েছে। তারা দাবি করছে যে, ওয়াসার লাভ হচ্ছে না। ক্ষতি হচ্ছে। আমি বলি, এ সব কথাবার্তা অযৌক্তিক। ওয়াসা একটা সেবামূলক প্রতিষ্ঠান। জনগণকে সুপেয় পানি দেওয়া তাদের দায়িত্ব। এতে তারা ব্যর্থ হলে এর দায়-দায়িত্ব তাদের। সে কারণেই সেবামূলক প্রতিষ্ঠানটিকে পানির বাড়তি দাম প্রত্যাহার করতে হবে।’

বাদশা বলেন, ‘সারাদেশেই সেবামূলক প্রতিষ্ঠানগুলো মানুষের কাছে দানবে পরিণত হয়েছে। আমরা ওয়াসাকে দানব হিসেবে দেখতে চাই না। সেবামূলক প্রতিষ্ঠান হিসেবেই দেখতে চাই। রাষ্ট্র কী একটা ব্যবসা প্রতিষ্ঠানে পরিণত হচ্ছে? নাকি রাষ্ট্র “জনগণের রাষ্ট্র” হিসেবে সংবিধানে লিপিবদ্ধ রয়েছে? জনগণের স্বার্থ রক্ষার জন্য রাষ্ট্র ভূমিকা পালন করবে। সেই সাংবিধানিক দর্শন কি কার্যকর হবে, নাকি সংবিধানকে আমরা বাতিল করে দেব? আমরা নিশ্চয় সংবিধানকেই প্রাধান্য দেব।’

পানির দাম না কমালে আন্দোলনে মাঠে নামবেন জানিয়ে ফজলে হোসেন বাদশা বলেন, ‘আমরা সরকারের কোন প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে আন্দোলন করতে চাই না। কিন্তু যদি কোন সরকারি প্রতিষ্ঠান অযৌক্তিক কাজ করে আর জনগণ আন্দোলন গড়ে তোলে এবং কর্তৃপক্ষ যদি তা বিবেচনা না করেন তাহলে আমরা সেই আন্দোলনকে সমর্থন করব- এটাই স্বাভাবিক।’ তিনি বলেন, ‘এ আন্দোলনের মিছিলের সামনের কাতারে এখনও আমি যাইনি। পানির বাড়তি দাম না কমালে ১ তারিখের পর যে মিছিল হবে, সে মিছিলের সামনের কাতারে হয়ত আমাকে পাবেন। অতএব, ১ তারিখের মধ্যেই এ দাবি বাস্তবায়নে সর্বাত্মক উদ্যোগ গ্রহণ করেন।’

বাদশা বলেন, ‘রাজশাহীতে এর আগেও বিদ্যুৎ নিয়ে অনেক খেলা হয়েছে। এখন পানি নিয়ে খেলা হচ্ছে। আজকে জনজীবনের যে দুর্গতি, দ্রব্যমূল্যের যে ঊর্দ্ধগতি সেটা রমজান মাসে এসে কোথায় ঠেকবে তা আমাদের জানা নেই। আমি অত্যন্ত স্পষ্ট এবং পরিস্কারভাবে বলতে চাই, পানির মূল্যবৃদ্ধির বিরুদ্ধে যে আন্দোলন হচ্ছে তাতে আমি সম্পূর্ণভাবে সমর্থন দিচ্ছি। রাজশাহীর সংসদ সদস্য হিসেবে সমকণ্ঠে আমি আহ্বান জানাচ্ছি, অনতিবিলম্বে এই মূল্যবৃদ্ধি প্রত্যাহার করা হোক।’

‘অযৌক্তিকভাবে’ পানির মূল্য বৃদ্ধির বিষয়টি সংসদে তুলবেন জানিয়ে তিনি বলেন, ‘ওয়াসার এমডির দায়িত্ব ছিল, রাজশাহী শহরের যে সংসদ সদস্য, জনপ্রতিনিধি, তার সঙ্গে আলোচনা করে এ ব্যাপারে সিদ্ধান্ত নেওয়া। তিনি আমার সাথে এ বিষয়ে কোন আলাপ আলোচনা করেননি। আমি শুনি, অনেকের কাছে আড়ালে-আবডালে উনি (এমডি) বলেন যে, “এমপি সাহেবের সঙ্গে আমি আলোচনা করেছি।” আমি ওয়াসার কর্মকর্তাদের সতর্ক করে দিতে চাই। রাষ্ট্রীয় দায়িত্ব পালন করছেন, অত্যন্ত সতর্কভাবে রাষ্ট্রীয় দায়িত্ব পালন করবেন এবং কোন ধরনের মিথ্যাচার, জনস্বার্থবিরোধী তৎপরতা চালালে কেউ রক্ষা পাবে না। সুযোগ নাই।’

এ বিষয়ে জানতে চাইলে রাজশাহী ওয়াসার ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) জাকীর হোসেন কোন মন্তব্য করতে চাননি। তিনি বলেন, ‘মাননীয় সংসদ সদস্য সংবাদ সম্মেলন করেছেন, তিনি সেটা করতেই পারেন। কিন্তু আমি এ বিষয়ে মন্তব্য করতে পারি না।’ পানির মূল্য পুনর্বিবেচনার সুযোগ আছে কি না জানতে চাইলেও তিনি মন্তব্য করেননি।