ঢাকা | মে ১৯, ২০২৪ - ২:১৮ পূর্বাহ্ন

শহরের টিকাকেন্দ্র ফাঁকা, গ্রামে ভিড়

  • আপডেট: Saturday, February 26, 2022 - 2:20 pm

স্টাফ রিপোর্টার: করোনার প্রথম ডোজ টিকা দেওয়ার বিশেষ ক্যাম্পেইনে রাজশাহী শহরের টিকাকেন্দ্রগুলোতে তেমন একটা ভিড় দেখা যায়নি। তবে উপচেপড়া ভিড় দেখা গেছে গ্রামের কেন্দ্রগুলোতে। ক্যাম্পেইন চলাকালে রাজশাহী মহানগরী ও জেলার গোদাগাড়ী উপজেলার কয়েকটি কেন্দ্র ঘুরে এ চিত্র দেখা গেছে। ক্যাম্পেইনে ঠিক কত মানুষকে টিকা দেওয়া হয়েছে তার হিসাব পাওয়া যায়নি। তবে আশানুরুপ মানুষ টিকা নিয়েছেন বলছে স্বাস্থ্যবিভাগ।

বিশেষ এই ক্যাম্পেইনে রাজশাহী বিভাগে একদিনে ১ হাজার ৮৬৯টি কেন্দ্রে ৬ লাখ ৮৬ হাজার ৭০০ জনকে করোনার প্রথম ডোজ টিকা প্রদানের লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়। আর শুধু রাজশাহী জেলায় ৩১৩টি কেন্দ্রে ২ লাখ ৩ হাজার ৪০০ জনকে টিকা দেওয়ার লক্ষ্যমাত্রা নিয়ে কর্মসূচি শুরু হয়। সকাল থেকেই রাজশাহীর কেন্দ্রগুলোতে টিকা নিতে আগ্রহী নারী-পুরুষের উপস্থিতি লক্ষ্য করা গেছে। তবে দুপুরের মধ্যে রাজশাহী নগরীর কেন্দ্রগুলো বেশ ফাঁকা হয়ে যায়। গ্রামের কেন্দ্রগুলোতে লম্বা লাইনে দাঁড়িয়ে মানুষ টিকা নিয়েছেন।

এই কার্যক্রম সফল করতে শনিবার দুপুরে গোদাগাড়ী উপজেলার দেওপাড়া ইউনিয়ন পরিষদের টিকা কেন্দ্র, সোনাদীঘি উচ্চ বিদ্যালয় টিকা কেন্দ্র ও গোদাগাড়ী পৌরসভা টিকা কেন্দ্র পরিদর্শন করেন বিভাগীয় কমিশনার জিএসএম জাফরউল্লাহ। এ সময় তাঁর সঙ্গে জেলা প্রশাসক আব্দুল জলিল, অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (রাজস্ব) মুহাম্মদ শরিফুল হক, গোদাগাড়ী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মো. জানে আলম প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।

টিকা কেন্দ্র পরিদর্শনকালে বিভাগীয় কমিশনার বলেন, নিজের ও পরিবারের সদস্যদের সুরক্ষা নিশ্চিত করতে সবার টিকা নিতে হবে। টিকা নিতে টাকা লাগে না, কেউ ক্ষতিগ্রস্ত হয় না বরং পরিবার ও দেশের মানুষ সুরক্ষিত থাকে। আগে টিকা নিতে অনেক কাগজপত্র দেখাতে হতো। এখন নিবন্ধন ছাড়াই শুধুমাত্র একটা ফোন নাম্বার থাকলেই টিকা পাওয়া যাচ্ছে। তাই স্বাস্থ্যবিধি মেনে সবাইকে টিকা নেওয়ার আহ্বান জানান তিনি।

বিভাগীয় কমিশনার আরও বলেন, রাজশাহীর সবখানে উৎসবমুখর পরিবেশে কেন্দ্রে টিকা প্রদান কার্যক্রম চলেছে। স্বল্প সময়ের মধ্যে রাজশাহীর শতভাগ নাগরিককে প্রথম ডোজ টিকার আওতায় আনা হবে। করোনা থেকে মুক্তি পেতে টিকা গ্রহণ ছাড়া কোন বিকল্প নেই, নাগরিকরা সেটি বুঝতে পেরেছেন। এ জন্য টিকা নিতে মানুষের আগ্রহও অনেক বেড়েছে।

পর্যাপ্ত পরিমাণ ভ্যাকসিন মজুদ রয়েছে জানিয়ে বিভাগীয় কমিশনার বলেন, করোনার সংক্রমণ প্রতিরোধে এটি একটি যুগান্তকারী পদক্ষেপ। ভ্যাকসিন নিয়ে দুশ্চিন্তার কোনো কারণ নেই। প্রধানমন্ত্রীর দূরদর্শী নেতৃত্বে দ্রুততম সময়ের মধ্যে বাংলাদেশ করোনা পরিস্থিতি দৃঢ়ভাবে মোকাবিলা করতে সক্ষম হয়েছে। তাই করোনা টিকাদান কার্যক্রমকে সফল করার স্বার্থে সব বিভ্রান্তিকে দূরে রেখে প্রচার ও নিবন্ধন কার্যক্রমে গুরুত্ব দেওয়া হয়েছে।

জেলা প্রশাসক আব্দুল জলিল জানান, রাজশাহীর নয় উপজেলার ৭৩টি ইউনিয়নেই প্রথম ডোজ গণটিকা কার্যক্রম জলেছে। প্রতিটি কেন্দ্রে তিনটি করে বুথে টিকা দেওয়া হয়েছে। প্রতিটি বুথে পর্যাপ্ত টিকা মজুদ ছিল। প্রতিটি টিকা কেন্দ্রে দুজন স্বাস্থ্যকর্মীর সঙ্গে তিনজন স্বেচ্ছাসেবী প্রত্যেক দায়িত্ব পালন করেছেন। ফলে সুশৃঙ্খলভাবে গণটিকা কার্যক্রম চলেছে।

রাজশাহীর সিভিল সার্জন ডা. আবু সাইদ মোহাম্মদ ফারুক জানান, একদিনের এই ক্যাম্পেইনে টিকা নেওয়ার আহ্বান জানিয়ে কয়েকদিন ধরে মাইকিং করা হয়েছে। ফলে প্রচুর মানুষ টিকা নিয়েছেন। এই ক্যাম্পেইনের আগে রাজশাহী শহরের ৬৪ দশমিক ৯৮ শতাংশ এবং গ্রামের ৬১ দশমিক ২৭ শতাংশ করোনার প্রথম ডোজ টিকা নিয়েছেন। ক্যাম্পেইনের পর টিকা নেওয়ার এই হার কত হয়েছে তা হিসাব করার পর তিনি জানাতে পারবেন।