ঢাকা | এপ্রিল ২০, ২০২৪ - ৮:২৭ পূর্বাহ্ন

আইএস বধূ জয়া জড়িয়েছিলেন পরকীয়ায়, আত্মহত্যাও করতে চেয়েছেন

  • আপডেট: Saturday, March 5, 2022 - 1:12 pm

অনলাইন ডেস্ক: বাংলাদেশি বংশোদ্ভূত ব্রিটিশ নাগরিক ‘আইএস বধূ’ তানিয়া জয়া যুক্তরাষ্ট্রে গিয়ে বিয়ের পরই এক কংগ্রেসম্যানের সঙ্গে পরকীয়া সম্পর্কে জড়িয়ে পড়েছিলেন বলে অভিযোগ করেছেন মার্কিন নাগরিক ক্রেইগ ব্রুমা।

নিউইয়র্ক পোস্টকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে জয়ার সাবেক স্বামী ক্রেইগ দাবি করেছেন, অর্থবিত্তের মোহে তাকে ঠকিয়ে ডালাসের কংগ্রেসম্যান ভ্যান টেইলরের সঙ্গে পরকীয়ায় জড়িয়ে পড়েছিলেন জয়া। বিচ্ছেদের আগে জয়া ‘আত্মহত্যা’ করতে চেয়েছিলেন বলেও দাবি করেন তিনি।

তবে জয়াও ছেড়ে দেননি। তিনি প্রত্যুত্তরে বলেছেন, তাকে নিঃস্ব-রিক্ত অবস্থায় ফেলে রেখে ক্রেইগ চলে গিয়েছিলেন।

ক্রেইগ এমন এক সময়ে জয়া ও কংগ্রেসম্যান টেইলরের বিরুদ্ধে অভিযোগ এনেছেন, যখন টেক্সাসে নির্বাচনের শোরগোল চলছে। ন্যাশনাল ডেমোক্রেটিক পার্টির হয়ে টানা তৃতীয়বারের মতো ডালাসের প্রতিনিধি হতে চাইছেন টেইলর।

ক্রেইগ নিউইয়র্ক পোস্টকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে বলেন, টেইলরের সঙ্গে সম্পর্ক গড়ে তোলার আগে রিপাবলিকান পার্টির সদস্যদের সঙ্গে জয়ার বেশ সুসম্পর্ক ছিল।

২০০৩ সালে এক ডেটিং সাইটে জয়ার পরিচয় হয় মার্কিন নাগরিক জন জর্জেলাসের সঙ্গে। জর্জেলাস মুসলিম ধর্ম গ্রহণ করার বেশ কিছুদিন পরে জড়িয়ে পড়েন বেআইনি কর্মকাণ্ডে। জেলও খাটতে হয় তাকে। জেল থেকে বেরিয়ে তিনি চলে যান সিরিয়া, যোগ দেন আইএসে। তার সঙ্গে চলেন তানিয়া জয়া।

গার্ডিয়ানকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে জয়া বলেছেন, আমি তখনও অর্থনৈতিকভাবে তার প্রতি নির্ভরশীল ছিলাম এবং তখনো বুঝতে পারিনি যে এক নিবর্তনমূলক বিয়ের জালে আটকা পড়েছি।

জয়া সেই জাল ছিঁড়ে বেরিয়ে আসেন ২০১৬ সালে। পরে ২০১৭ সালে তিনি চলে আসেন যুক্তরাষ্ট্রে।

ক্রেইগ বলেন, ম্যচ ডটকম নামে একটি ডেটিং ওয়েবসাইট থেকে পরিচয় হয় জয়ার সঙ্গে। তারা ২০১৮ সালে লাস ভেগাসে বিয়ে করেন।

বিয়ের এক বছর পর জয়া দাবি করেন, তিনি লাস ভেগাস থেকে চলে গিয়ে ক্যালিফোর্নিয়াতে থাকতে চান। দাম্পত্য সম্পর্কে যখন নানা টানাপড়েন, তখন ক্রেইগ জয়াকে ডিভোর্স দেবেন বলে সিদ্ধান্ত নেন। কিন্তু তখনও নাটকীয়তা বাকি রয়ে গেছে।

ক্রেইগ বলেন, ২০২০ সালের অক্টোবরে জয়া তার স্বামীকে জানান তিনি কংগ্রেসম্যান ভ্যান টেইলরের সঙ্গে দেখা করতে চান; যিনি উত্তর টেক্সাসে রিপাবলিকান দলের প্রতিনিধি ছিলেন।

তিনি বলেন, সাধারণত আমিই জয়াকে ড্রপ করে দিতাম তার কাজের জায়গায়। কিন্তু সেদিন সে বলল, সে উবার, লিফট কিছু একটায় করে সেখানে চলে যাবে। তখন আমি দেখলাম জয়ার ফোনে কল আসল। ফোনে ভেসে উঠল, ভ্যান টেইলরের নাম।

ক্রেইগ বলেন, ‘সেদিন আমি জয়াকে জিজ্ঞাসা করেছিলাম টেইলরের অফিসে যাওয়ার কারণ। জয়া বলেছিল, সে উগ্রপন্থা বিরোধী কোনো একটি কর্মকাণ্ড শুরু করতে যাচ্ছে, তাতে টেইলর তাকে সহায়তা করবে।’

সেদিনের পর থেকেই জয়ার আচরণে ‘বড় পরিবর্তন’ দেখেন ক্রেইগ। জয়া একসময় তার কাছ থেকে অর্থ নেওয়া বন্ধ করে দেন। টেইলরের সঙ্গে যোগাযোগ আরও নিবিড় করে তুলেন।

‘ওই সময়ে জয়ার জীবনযাপন কেমন বেপরোয়া হয়ে পড়ে। তার প্রচুর অর্থের প্রয়োজন হয়েছিল ওই সময়। তাকে যদি আমি ৫ হাজার ডলার করেও দিতাম, তাতে ও সে সন্তুষ্ট হত না। ওই সময় আমাকে একটু কঠোর হতেই হয়েছিল। কারণ, সে অতিরিক্ত অর্থ ব্যয় করতে শুরু করে।’– নিউ ইয়র্ক পোস্টকে বলেন ক্রেইগ।

ক্রেইগ বলেন, ‘ওই সময়ে জয়া মানসিকভাবে কেমন বিপর্যস্ত হয়ে পড়ে। সে আত্মহত্যা করতে চেয়েছিল।’

তিন কন্যাসন্তানের জননী তানিয়া জয়া ২০২০ সালের অক্টোবরে ভ্যান টেইলরকে বিয়ে করেন। এক বছরও টিকেনি কাদের তাদের সম্পর্ক। ২০২১ সালের জুনেই বিচ্ছেদ হয় তাদের।

ক্রেইগের এসব অভিযোগের বিষয়ে তানিয়া জয়া বলেন, ‘আমি তখন নিঃস্ব, রিক্ত ছিলাম। আমি আমার পাশে এমন একজনকে চাইছিলাম, সে হবে আমার সত্যিকারের নায়ক।’

আর্থিক লেনদেনের বিষয়ে জয়া বলেন, ‘সে সময় টেইলর আমাকে ৫ হাজার ডলার দিয়েছিল ক্রেডিট কার্ডের বিল পরিশোধের জন্য। আর সামান্য কিছু অর্থ দিয়েছিল মাত্র। তখন আমাদের প্রেম চলছিল।’

সোনালী/জেআর